২১ অক্টোবর ২০২৩, শনিবার, ৯:২৫

কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সভায় দ্রব্যমূল্যের ঊর্দ্ধগতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের এক সভা ভারপ্রাপ্ত আমীর ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সভায় দ্রব্যমূল্যের ঊর্দ্ধগতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয় এবং জিনিসপত্রের দাম জনগণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে নিয়ে আসার আহবান জানিয়ে নিম্নোক্ত প্রস্তাব গৃহীত হয়।

“বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছে যে, প্রতিদিনই নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম হু হু করে বাড়ছে। জিনিসপত্রের দাম বাড়তে বাড়তে আকাশছোয়া। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধিতে জনজীবনে চরম দুর্ভোগ নেমে এসেছে। কয়েক মাস ধরেই ক্রমাগতভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে নিত্যপণ্যের দাম। ৮০ থেকে ১০০ টাকার নিচে মিলছে না কোনো সবজি। বেগুন ১০০-১৫০ টাকা, করলা, কচুরমুখি, বরবটি, টমেটো ১০০ থেকে ১২০ টাকা, ঢেঁড়স, পটল, ঝিঙা, চিচিঙা ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। পেঁয়াজ ৮০ থেকে ১২০ টাকা, আদা ও রসূন ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। রুই, কাতলা ও মৃগেল আকার ভেদে ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। গরীব মানুষের আমিষের যোগান দেওয়া পাঙাশ, কৈ ও তেলাপিয়া মাছও ২৫০ থেকে ২৮০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যাচ্ছে। ব্রয়লার মুরগি ২০০ থেকে ২২০ টাকা, সোনালি মুরগি ৩২০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ডিমের বাজারও অস্থির। এক ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৭০ টাকায়। এভাবে প্রতিটি জিনিসের দাম বাড়ার সাথে সাথে সাধারণ মানুষের ওপর চাপ বাড়ছে। দ্রব্যমূল্য যে হারে বাড়ছে সেই হারে মানুষের আয় বাড়ছে না। ফলে জীবনযাত্রার মানে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।

জামায়াতের নির্বাহী পরিষদ আরও লক্ষ্য করছে যে, নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের ব্যবহার উল্লেখযোগ্য হারে কমিয়েও সাধারণ মানুষ কুলকিনারা পাচ্ছে না। কাটছাঁট করেও তারা সংসার চালাতে হিমসিম খাচ্ছে। বাজার করতে যাওয়া মানুষগুলোর চোখে-মুখে অসহায়ত্বের ছাপ স্পষ্ট। কিছু কমে পাওয়ার আশায় নিম্ন ও মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষগুলো এক দোকান থেকে অন্য দোকানে ছোটাছুটি করছে। জীবন নামের তরী যেন আর চলছে না। সবকিছুই স্থবির হয়ে পড়েছে। মানুষের দুঃখ-কষ্ট সরকার দেখেও না দেখার ভান করছে। নাগরিকদের প্রতি তাদের কোনো দায়িত্ববোধ আছে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে না। দেশের মানুষ সরকারের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে। মানুষের মনে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। এভাবে একটি দেশ চলতে পারে না। সরকারের বিগত ১৫ বছরের শাসনকালেও কোনো সুষ্ঠু বাজার ব্যবস্থা গড়ে উঠেনি। বাজারের ওপর সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। সরকারের পৃষ্ঠপষকতায় গড়ে উঠা একটি সিন্ডিকেট তাদের ব্যবসায়িক স্বার্থে বাজারকে প্রভাবিত করে দ্রব্যব্যমূল্য বৃদ্ধির নেপথ্য ভূমিকা রাখছে। সরকার জনগণের কষ্ট লাঘবের পরিবর্তে বৃদ্ধির ব্যবস্থা করছে।

জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ অবিলম্বে দ্রব্য মূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণ করে জনগণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে নিয়ে আসার জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানাচ্ছে।”