২০ অক্টোবর ২০২৩, শুক্রবার, ১০:৩২

কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সভা অনুষ্ঠিত

ফিলিস্তিনের মুসলমানদের ওপর অবৈধ দখলদার ইসরায়েলের নৃশংস, বর্বরোচিত ও অমানবিক হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের এক সভা ভারপ্রাপ্ত আমীর ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাহী পরিষদের সভায় ফিলিস্তিনের মুসলমানদের ওপর অবৈধ দখলদার ইসরায়েলের নৃশংস, বর্বরোচিত ও অমানবিক হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে নিম্নোক্ত প্রস্তাব গৃহীত হয়।

“বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ অত্যন্ত দুঃখ ভারাক্রান্ত হৃদয়ে ও বেদনার সাথে লক্ষ্য করছে যে, দখলদার ইসরায়েল বাহিনী ফিলিস্তিনের গাজা ভূ-খণ্ডের ওপর স্মরণকালের ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করে চলেছে। তাদের এই নির্মম ও বর্বর হত্যাকাণ্ড শতাব্দীর সকল রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। গোটা ফিলিস্তিনকে ধ্বংসস্তুপ ও গণকবরে পরিণত করা হয়েছে। দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বর হামলায় ৭ অক্টোবর থেকে ২০ অক্টোবর পর্যন্ত ৪ সহস্রাধিক নিরীহ ফিলিস্তিনি মুসলমান নিহত হয়েছেন এবং মারাত্মকভাবে আহত হয়েছেন আরও ১২ সহস্রাধিক ফিলিস্তিনি। নিহতদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। প্রায় ১৩ হাজার ঘর-বাড়ি একেবারে ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে ১০ হাজার ঘরবাড়ি এবং আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আরও ১ লক্ষ ২১ হাজার ঘর-বাড়ি। তাছাড়া বাস্তুচ্যুত হয়েছে প্রায় ১০ লক্ষাধিক ফিলিস্তিনি মুসলমান। গাজায় এ পর্যন্ত মোট ১৫টি হাসপাতাল বোমা মেরে ধ্বংস করেছে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী। গত ১৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের একটি হাসপাতালে বোমা হামলা চালিয়ে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী শিশু, মহিলা, বৃদ্ধসহ ৫ শতাধিক মানুষকে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করেছে। নিহতদের অধিকাংশই অবুঝ শিশু। তারা জানেই না যুদ্ধ কী জিনিস। বিশ্বের ইতিহাসে হাসপাতালে বোমা মেরে মানুষ হত্যার কোনো নজির নেই।

হাসপাতালে বোমা মেরে মানুষ হত্যার এক কলঙ্কজনক ইতিহাস সৃষ্টি করল দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী। সদ্য জন্মগ্রহণকারী শিশুর ওপর ইসরায়েলের বর্বর হামলা বিশ্বের প্রতিটি বিবেকবান মানুষের হৃদয়ে আঘাত করেছে।

অবৈধ দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী ফিলিস্তিনের মুসলমানদের ওপর এখনও বোমা বর্ষণ অব্যাহত রেখেছে। তারা গাজা ভূখণ্ড থেকে ১২ লক্ষ মুসলমানকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। তাদের এই ঘোষণা সম্পূর্ণ অন্যায় ও মানবতা বিরোধী। বিশ্বের কোনো মানুষ তাদের এই ঘোষণা মানে না। ইসরায়েলের কোনো অধিকার নেই গাজা থেকে মুসলমানদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়ার। বরং জবর দখলকারী ইসরায়েলকেই ফিলিস্তিন ভূখন্ড থেকে সরে যেতে হবে।

ফিলিস্তিনে আজ অব্যাহতভাবে বোমা হামলা চালিয়ে ইসরায়েল যে ভয়াবহ রক্তাক্ত পরিস্থিতি তৈরি করেছে, তা অবিলম্বে বন্ধ করার জন্য মুসলিম বিশ্ব, জাতিসংঘ, ওআইসি, মানবাধিকার সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান এবং গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রসমূহের প্রতি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ আহবান জানাচ্ছে। ফিলিস্তিনে খাদ্য, পানি, ঔষধ ও চিকিৎসা সামগ্রীর ভয়াবহ সংকট দেখা দিয়েছে। আহতরা ন্যুনতম চিকিৎসাও পাচ্ছেন না। পানিসহ খাদ্য সামগ্রী, জীবন রক্ষাকারী ওষুধ এবং সব ধরনের চিকিৎসা উপকরণ নিয়ে অসহায় মজলুম ফিলিস্তিনিদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল দেশ, জাতিসংঘ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, অন্যান্য আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের প্রতি আহবান জানাচ্ছে।
ফিলিস্তিনের মহান মুক্তি আন্দোলনে যারা অকাতরে জীবন দিচ্ছেন, মহান আল্লাহ তাদের শাহাদাত কবুল করুন, যারা আহত হচ্ছেন আল্লাহ তাদের দ্রুত সুস্থতা দান করুন। আমরা ফিলিস্তিনের অসহায় মজলুম মানবতার সাথে আছি এবং ভবিষ্যতেও থাকব ইনশাআল্লাহ।”