২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩, বৃহস্পতিবার, ৪:১৫

নরসিংদী জেলা জামায়াতের রুকন সম্মেলন অনুষ্ঠিত

কেয়ারটেকার সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে বিদায় নিন

-ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মু. তাহের

জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মু. তাহের বলেন, বাংলাদেশ আজ গভীর খাদের কিনারায় অবস্থান করছে। আওয়ামীলীগের হটকারিতা, ক্ষমতায় টিকে থাকার উদগ্র নেশা, লুটপাট, দুর্নীতি ও দুঃশাসনে দেশ আজ ধ্বংসের পথে। নাগরিক অধিকার ও মৌলিক মানবাধিকার বলতে দেশে কিছুই নেই। লাঠিতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে দেশের মানুষকে দাবিয়ে রাখা যাবে না। জামায়াতে ইসলামীকে সভা-সমাবেশ করতে দিচ্ছে না। রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করতে দিচ্ছে না। নেতাকর্মীদেরকে হরহামেশাই গ্রেফতার করে গায়েবি মামলা দেয়ার প্রবণতা দিনের পর দিন বাড়ছেই। সরকারের প্রতি জনমত আশঙ্কাজনক হারে কমে যাওয়ায় তারা জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। পররাষ্ট্রনীতির ব্যর্থতায় সরকার বন্ধুহীন হয়ে পড়েছে। সরকারের অপকর্ম, মানবাধিকার লঙ্ঘন, গণতন্ত্রের কবর রচনা, পুলিশ বাহিনীকে দলীয় কর্মী হিসেবে ব্যবহার, প্রশাসনকে দলকানা প্রশাসনে পরিণত করাসহ নানা অপকর্মে সরকার আজ আন্তর্জাতিক বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। আমেরিকার ভিসা স্যাংশন দেশের ইমেজকে ভূলুণ্ঠিত করেছে। এমতাবস্থায় দেশের স্বার্থে কেয়ারটেকার সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে অবিলম্বে বিদায় নিন।

নরসিংদী জেলা জামায়াত কর্তৃক ভার্চুয়ালি আয়োজিত জেলা আমীর মাওলানা মোছলেহুদ্দীনের সভাপতিত্বে ও জেলা সেক্রেটারি মাওলানা আমজাদ হোসাইন-এর সঞ্চালনায় রুকন সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মু. তাহের এসব কথা বলেন। সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ড. মাওলানা খলিলুর রহমান মাদানী, নারায়ণগঞ্জ মহানগর জামায়াতের আমীর মাওলানা আব্দুল জব্বার।

প্রধান অতিথি আরও বলেন, জাতিকে বিভক্ত করে আওয়ামীলীগ জাতীয় ঐক্যকে নস্যাৎ করেছে। বিনা ভোটের সরকার দেশ দখল করে জমিদারি প্রতিষ্ঠার অপচেষ্টা করছে। ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মতো ভুয়া নির্বাচনের মাধ্যমে আবারও ক্ষমতায় আসার জন্য বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের ওপর সীমাহীন অত্যাচার করছে। স্বচ্ছ রাজনৈতিক নেতা আমীরে জামায়াত ডা শফিকুর রহমানকে ভুয়া মামলা দিয়ে আটক রেখেছে। জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর জনাব সেলিম উদ্দিন, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও সাবেক এমপি জননেতা শাহজাহান চৌধুরীসহ হাজার হাজার নেতাকর্মী গ্রেফতার করে জেলে ভরে সরকার বিরোধী আন্দোলনকে নস্যাৎ করতে উঠে পড়ে লেগেছে। নেতৃবৃন্দ জামিন লাভ করা সত্ত্বেও আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে জেলগেট থেকে পুনরায় গ্রেফতারের ঘৃণ্য নজির স্থাপন করেছে। মানুষ আজ সরকারের পদত্যাগ চায়, গণতন্ত্র চায়। একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চায়। প্রশাসনের প্রভাব মুক্ত জাতীয় নির্বাচনে জনগণ ভোটাধিকার চায়। অবস্থা দৃষ্টে মনে হচ্ছে, সরকার জন আকাঙ্খার বিপরীতেই চলতে চায়। সরকার যদি জনগণের অনুভূতি বুঝতে ব্যর্থ হয়, তাহলে জনগণ রাজপথে এর জবাব দিতে প্রস্তুত আছে। জনতা গণআন্দোলন-সংগ্রামের মাধ্যমে তাদের অধিকার আদায় করে ছাড়বে, ইনশাআল্লাহ।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ড. মাওলানা খলিলুর রহমান মাদানী বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকারের হামলা-মামলা, জুলুম-নির্যাতন সত্ত্বেও ইসলামী আন্দোলনের নেতাকর্মীরা ভীত-সন্ত্রস্ত হয় না। সরকারের দমন-পীড়নের কারণে জামায়াতের প্রতি জনগণের সহানুভূতি আরও বেড়েছে।

বিশেষ অতিথি মাওলানা আব্দুল জব্বার বলেন, দুনিয়ার ভোগ-বিলাস, আরাম-আয়েশ, সহায়-সম্পদ আখেরাতে কাউকে রক্ষা করতে পারবে না। আখিরাতে মুক্তির জন্য ইসলামকে পূর্ণাঙ্গরূপে অনুসরণ করতে হবে, রাসূল সা. প্রদর্শিত পদ্ধতিতে ইসলামী জীবন বিধান প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে আত্মনিয়োগ করতে হবে। শাহাদাতের তামান্না নিয়ে বাতিলের রক্ত চক্ষুকে উপেক্ষা করে জামায়াতের নেতা-কর্মীদেরকে ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।