২ মে ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ৭:৪৪

কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের বৈঠক অনুষ্ঠিত

দেশব্যাপী আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের এক বৈঠক সংগঠনের আমীর ডা. শফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে নিম্নোক্ত প্রস্তাব গৃহীত হয়।

“বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছে যে, দেশব্যাপী আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটেছে। মানুষের জানমালের কোনো নিরাপত্তা নেই। প্রশাসনের ছত্রছায়ায় আওয়ামী দলীয় লোকেরা হত্যা, গুম-খুন, ধর্ষণ, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, জমি ও ঘর-বাড়ি দখল, ছিনতাই, ঘুষ-দুর্নীতিসহ হেন কোনো অপরাধ নেই, যা তারা সংঘটিত করছে না। দেশের নাগরিকগণ চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের জন্য এটি অত্যন্ত দুঃখজনক। সরকার পুলিশ প্রশাসনকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করার কারণে পুলিশ অপরাধ নিয়ন্ত্রণের পরিবর্তে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে।

কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ গভীর উদ্বেগের সাথে আরও লক্ষ্য করছে যে, দেশে সুশাসন না থাকায় এবং অপরাধের বিচার না হওয়ায় অপরাধের মাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সম্প্রতি ফরিদপুরের মধুখালীতে একটি মন্দিরে আগুন লাগাকে কেন্দ্র করে কোনো রকম তদন্ত ও প্রমাণ ছাড়াই দুই মুসলিম যুবককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এই ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের শনাক্ত করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। ঘটনার প্রতিবাদে ফরিদপুরে সর্বস্তরের মানুষ মানববন্ধন কর্মসূচি পালনকালে পুলিশ তাদের উপর গুলিবর্ষণ করে। ফলে বহু লোক আহত হয়।

সরকার ৭ জানুয়ারি প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে পুনরায় ক্ষমতা দখল করে নতুন স্টাইলে বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার ও হয়রানি করছে। গত এপ্রিল মাসে রাজধানী ঢাকা, গাজীপুর মহানগরী, নীলফামারী ও রাজশাহী মহানগরীসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের ৩৫ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়। রাজশাহীর আদালতে জামায়াত নেতৃবৃন্দ হাজিরা দিতে গেলে রাজশাহী মহানগরী জামায়াতের সেক্রেটারীসহ ১০ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়। আদালত অঙ্গন থেকে এ ধরনের গ্রেফতার নজিরবিহীন, ন্যক্কারজনক এবং আদালত অবমাননার শামিল।

নির্বাহী পরিষদ আরও লক্ষ্য করছে যে, রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় বেপরোয়া কিশোর গ্যাঙ তথা কিশোর অপরাধীদের দৌরাত্ম্য সমাজের শান্তি-শৃঙ্খলা বিঘ্নিত করছে। রাজধানী ঢাকা থেকে শুরু করে সারা দেশের গ্রাম পর্যন্ত কিশোর গ্যাঙ খুন, ধর্ষণ, মাদক চোরাচালান, মাদক সেবনসহ নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়েছে। সরকার এবং সরকারি দলের লোকদের পৃষ্ঠপোষকতার কারণেই দেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি ঘটেছে এবং সমাজ জীবনে চরম অস্থিরতা বিরাজ করছে।

কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ দেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সমুন্নত রেখে মানুষের জানমাল, ইজ্জত-আব্রুর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং গ্রেফতারকৃতদের অবিলম্বে মুক্তি প্রদান এবং ফরিদপুরের মধুখালীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নৈরাজ্য সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে।”