১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, শুক্রবার, ১০:৫৬

ঢাকা জেলা দক্ষিণ জামায়াতের ষান্মাসিক রুকন সম্মেলন অনুষ্ঠিত

দেশে বিচার ব্যবস্থা ধ্বংস করা হয়েছে

-অধ্যাপক মুজিবুর রহমান

দেশে বিচারকদের স্বাধীনতা বলতে কিছু নেই বরং বিচারব্যবস্থাকে পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমীর ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান।

তিনি আজ ঢাকায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা জেলা দক্ষিণ আয়োজিত এক ভার্চুয়াল ষান্মাসিক রুকন সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও জেলা আমীর মাওলানা মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসাইনের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারী এবিএম কামাল হোসাইনের সঞ্চালনায় সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও নারায়ণগঞ্জ মহানগরী আমীর মাওলানা আবদুল জাব্বার। আরো বক্তব্য রাখেন জেলা নায়েবে আমীর জনাব মোঃ শাহিনুর ইসলাম। উপস্থিত ছিলেন জেলা নেতৃবৃন্দ সহ জেলার সকল স্তরের রুকনগণ।

অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, সকল শ্রেণির মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্যদেশ স্বাধীন করা হয়েছিল। একই সাথে গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনে ধর্ম, বর্ণ ও গোত্র নির্বিশেষে সকল শ্রেণির মানুষের নাগরিরক অধিকারের নিশ্চয়তা ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য। কিন্তু দেশ ও জাতির চরম দূর্ভাগ্য যে, অনেক ত্যাগ ও কোরবানীর বিনিময়ে স্বাধীনতা অর্জনের কিছুদিন পরেই তৎকালীন সরকার সকল রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করে দেশে একদলীয় বাকশালী শাসন কায়েম করেছিল। মাত্র ৪ টি বাদে সকল পত্রিকা নিষিদ্ধ করে গণমাধ্যমে কন্ঠরোধ করা হয়েছিল। কবর রচনা করা হয়েছিল দেশের গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের। তাই এই ফ্যাসীবাদী ও বাকশালী সরকারের হাত থেকে দেশকে বাঁচাতে হলে দলমত নির্বিশেষে সকলকে আবারো রাজপথে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। তিনি সরকার পতনের লক্ষ্যে সকলকে রাজপথে একযোগে কাজ করার আহবান জানান।

তিনি বলেন, সাবেক আমীরে জামায়াত অধ্যাপক গোলাম আযমের ফর্মুলা কেয়ারটেকার সরকার পদ্ধতি আওয়ামীলীগসহ সকল দল গ্রহণ করেছিল। এখন নিজেদের ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করতে তা অস্বীকার করা হচ্ছে। সরকার দেশের প্রশাসনকে নির্লজ্জভাবে দলীয়করণ করে ফেলেছে। প্রজাতন্ত্রের কর্মচারি একজন জেলা প্রশাসনের নৌকায় ভোট চাওয়া তার সুস্পষ্ট প্রমাণ। তিনি আল্লামা সাঈদী প্রসঙ্গে বলেন, আল্লামা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদী (রাহি.) চিকিৎসা করেছেন যারা তার ফাঁসি চেয়েছিল সেই চিকিৎসক। তিনি তার মৃত্যুর কারণ তদন্ত করার জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান। অন্যথায় সরকারকে একদিন জনগণের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে।

তিনি আরো বলেন, দেশের সকল রাজনৈতিক দল মিছিল করছে মিছিল-মিটিং করছে কোন সমস্যা হচ্ছে না। শুধু জামায়াতকে সরকার তাদের সাংবিধানিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে। জনতার শান্তিপূর্ণ মিছিল হামলা করা হচ্ছে, গ্রেফতার করা হচ্ছে নির্বিচারে। দেশের এই খারাপ অবস্থা থেকে মুক্তির একমাত্র উপায় হচ্ছে সৎলোকের শাসন কায়েমের মাধ্যমে আল্লাহর দ্বীন কায়েমের চেষ্টা করা। তিনি দেশকে ন্যায়-ইনসাফভিত্তিক কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্দোলনে সকলকে ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস চালানোর আহবান জানান।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আব্দুল জব্বার বলেন, ফ্যাসীবাদী ও জুলুমবাজ সরকারের পতনের লক্ষ্যে গণআন্দোলন শুরু হয়েছে। তাই চলমান আন্দোলনকে সফল ও স্বার্থক করতে হলে সীসা ঢালা প্রাচীরের ন্যায় সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। সরকার জুলুম-নির্যাতনের অতীতের সকল সীমা অতিক্রম করেছে। সরকার দেশেকে পুলিশী রাষ্ট্রে পরিণত করে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের মাধ্যমে গুম, খুন ও নিপিড়ন চালিয়ে যাচ্ছে। তাই সরকারের জুলুম-নির্যাতন মোকাবেলায় সকলকে রাজপথে নেমে আসতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসাইন বলেন, দেশ ও জাতির এক মহাক্রান্তিকাল চলছে। তাই এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য আগামী দিনের সকল কর্মসূচিতে রুকন ভাইদেরকে অগ্রসৈনিকের ভূমিকা পালন করতে হবে।