২১ জুলাই ২০২৩, শুক্রবার, ৩:৫৬

পাবনা জেলা জামায়াতের উদ্যোগে কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত

কেয়ারটেকার সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন

-অধ্যাপক মুজিবুর রহমান

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী পাবনা জেলা শাখার উদ্যোগে ২১ জুলাই জেলা আমীর অধ্যাপক আবু তালেব মন্ডলের সভাপতিত্বে এবং জেলা সেক্রেটারী অধ্যক্ষ ইকবাল হুসাইনের পরিচালনায় ভার্চুয়ালি এক কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমীর অধ্যাপক মুজিবুর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর জনাব নুরুল ইসলাম বুলবুল। এছাড়াও অন্যান্যের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারী জেনারেল মোঃ মঞ্জুরুল ইসলাম।

জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর মাওলনা জহুরুল ইসলাম, সহকারী সেক্রেটারী অধ্যাপক আবু সালেহ মোঃ আব্দুল্লাহ, মাওলানা আব্দুল গাফ্ফার খান, জেলা কর্মপরিষদ সদস্য ডা. আব্দুল বাসেত খান, মাওলানা আব্দুস শাকুর, জেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপক রেজাউল করিম, দারুল আমান ট্রাস্ট পাবনার সেক্রেটারী নেছার আহমেদ নান্নু, ইসলামী ছাত্রশিবির পাবনা শহর শাখার সভাপতি মোঃ ইব্রাহিম হোসেন, পাবনা জেলা পশ্চিম শাখার সভাপতি মোহাম্মদ ইসরাইল হোসেন, জেলা পূর্ব শাখার সভাপতি কামরুল হাসান লিমন প্রমুখ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ভারপ্রাপ্ত আমীর অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, কেয়ারটেকার সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে একটি সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। আগামী নির্বাচন কেয়ারটেকার সরকারের অধিনে হলে জামায়াতে ইসলামী সে নির্বাচনে যথাযথ ভূমিকা রাখবে। আর যদি ভোট ডাকাতদের অধীনে নির্বাচন হয় তাহলে জামায়াতে ইসলামী সে নির্বাচনে অংশ নিবে না এবং কেয়ারটেকার সরকার ছাড়া জামায়াত কোন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেনা।

তিনি আরো বলেন, জামায়াতকে সমাবেশ করার অনুমতি না দিয়ে সরকার আমাদের গণতান্ত্রিক, মৌলিক এবং সাংবিধানিক অধিকার হরন করছে। কাউকে সমাবেশের অনুমতি দিবে আর কাউকে দিবে না এধরনের দ্বৈতনীতি থেকে সরকারকে বেরিয়ে আসতে হবে। সমাবেশের অনুমতি না দেয়ায় আমি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। যারা মানুষের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছে একদিন তাদের বিচার হবে। অনেককে গুম করা হয়েছে, খুন করা হয়েছে এর জবাব একদিন সরকারকে দিতে হবে। গুম হওয়া ব্যক্তিদেরকে ফেরৎ দিতে হবে।

দুনিয়ার সকল সৈরাচারি সরকারেরই পতন হয়েছে। কেউ চির দিন ক্ষমতায় থাকতে পারে নি। বর্তমান সরকারও ক্ষমতায় থাকতে পারবে না। নির্বাচনে অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন- অতীতে সকল বৈধ নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামী অংশ গ্রহণ করেছে এবং প্রত্যেক জাতীয় সংসদে জামায়াতের প্রতিনিধিত্ব ছিল। সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন- জুলুম বন্ধ করুন। দ্রব্য মুল্য মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে, এটাকে নিয়ন্ত্রন করুন।

তিনি আরো বলেন, ভিসা পলিসি আমাদের জন্য সম্মান জনক না। কিন্তু সরকারের অপকর্মের জন্য বিভিন্ন দেশ আজ ভিসা পলিসি দিচ্ছে। সরকার আমাদের অধিকার হরন করেছে, আর সে অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য আমাদের আন্দোলন করার অধিকার রয়েছে। সে আন্দোলনে বাধা দিবেন না। আগামীতে আন্দোলন হবে আর সে আন্দোলনে সবাইকে শরীক হতে হবে। আন্দোলনে হয় আমরা বিজয়ী হব না হয় শহীদ হব।

কর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন- যারা কাজ করে তাদেরকেই কর্মী বলে। যাদের কাজের ঘাটতি রয়েছে তাদের তা পুরণ করতে হবে। জান-মালের কুরবানী দিতে হবে। লোক তৈরী করতে হবে। জনমত গঠন করতে হবে। সবাইকে আগে সালাম দেয়ার অভ্যাস করতে হবে। মানুষকে খাওয়াইতে হবে। ইউনিটগুলোকে অসহায় মানুষের আশ্রয়স্থলে পরিণত করতে হবে। মানুষের দুঃখ দুর্দশায় তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে। সর্বপরি নিজেদের গুনাহ মাফি এবং সৈরাচারীর পতনের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করতে হবে। অন্যায়ের বিরুদ্ধে আপোষহীন সংগ্রামের এ আন্দোলনে শরীক হয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। পরিশেষে তিনি আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান সাহেবসহ কারাবন্দী সকল নেতৃবৃন্দের মুক্তি দাবী করেন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম বলেন, জামায়াতে ইসলামী প্রচলিত ধারার কোন রাজনৈতিক দল নয়, এটি একটি পূর্ণাঙ্গ ইসলামী আন্দোলন। এ আন্দোলনের কর্মী হিসেবে সমাজে সত্যের স্বাক্ষী, সমাজ সেবক ও দ্বীন প্রতিষ্ঠার একজন কর্মী হিসেবে নিজেকে পরিচিত করতে হবে। কোরআন ও হাদিসে বর্ণিত গুণাবলী অর্জনের মাধ্যমে নিজেদেরকে গড়ে তুলতে হবে।
কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর নুরুল ইসলাম বুলবুল বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বলেন- ইসলামী আন্দোলনের কর্মী মানেই কোরআনের কর্মী। তাই জামায়াতে ইসলামীর কর্মীদেরকে

আল্লাহর নির্দেশ মোতাবেক ইসলামের মধ্যে পরিপূর্ণভাবে প্রবেশ করতে হবে। কিতাবের সব অংশ মানতে হবে। কিছু অংশ মানবে আর কিছু অংশ মানবে না এটা করা যাবে না। দ্বীনকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে ইসলামকে ধারণ করতে হবে। হক আদায় করে নিজেদেরকে জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহর রাস্তায় সর্বাত্মকভাবে নিয়োজিত করতে হবে।