১৫ জুলাই ২০২৩, শনিবার, ৮:১০

বগুড়া শহর জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে অনুষ্ঠিত

কেয়ারটেকার সরকার প্রতিষ্ঠা করে অবাধ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন দিতে হবে

-মাওলানা এটিএম মা’ছুম

সরকারের দুঃশাসনে সাধারণ মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। অবিলম্বে সরকারকে পদত্যাগ করে কেয়ারটেকার সরকার প্রতিষ্ঠা করে অবাধ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন দিতে হবে। দেশের মানুষের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে জামায়াতে ইসলামীর সর্বস্তরের কর্মীদেরকে রাজপথে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।

১৪ জুলাই শুক্রবার বিকেলে জামায়াতে ইসলামী বগুড়া শহর শাখা আয়োজিত ভার্চুয়ালি কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মাছুম উপরোক্ত কথা বলেন। বগুড়া শহর আমীর অধ্যক্ষ আবিদুর রহমান সোহেলের সভাপতিত্বে ও শহর সেক্রেটারী অধ্যাপক আসম আব্দুল মালেকের সঞ্চালনায় সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ শাহাবুদ্দিন। বক্তব্য রাখেন বগুড়া অঞ্চলের টীম সদস্য মাওলানা আব্দুর রহীম ও অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুল হক সরকার।

তিনি আরো বলেন, জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশকে একটি সুখী-সমৃদ্ধ কল্যাণ রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে চায়। কিন্তু সরকার তা হতে দিতে চায় না। এজন্যই তারা জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করেছে। শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে অন্যায়ভাবে হত্যা করার পর এখন বর্তমান আমীরে জামায়াত ও সেক্রেটারি জেনারেলসহ সিনিয়র নেতৃবৃন্দকে কারারুদ্ধ করে রেখেছে। আইনের প্রতি তোয়াক্কা না করে জেলগেট থেকে জামায়াত নেতৃবৃন্দকে বারবার গ্রেফতার করা হচ্ছে। কিন্তু সরকারের শত জুলুম-নির্যাতন আমাদেরকে লক্ষ্যচ্যূত করতে পারেনি, পারবেও না। দেশের মানুষের মুক্তির জন্য আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো, ইনশাআল্লাহ।

তিনি বলেন, আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে ইসলামী শক্তিকে নির্মূল করে পৌত্তলিক সংস্কৃতি জাতির ঘাড়ে চাপিয়ে দিতে বেদাতি ও মাজার পূজারীদের প্রমোট করছে। ফ্যাসিবাদী সরকার দেশপ্রেমিক শক্তির ঐক্য বিনষ্ট করতে অপচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।

কর্মীদের উদ্দেশে মাওলানা এটিএম মা’ছুম বলেন, জামায়াতে ইসলামীর প্রতিটি কর্মীকে আল-কুরআন ও আল-হাদিসের সুমহান দাওয়াত ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে হবে। ইসলামের শত্রুরা মানুষের মনে, যে ইসলাম ভীতি সৃষ্টি করেছে, তা দূর করে মানুষের মাঝে আশাবাদ জাগিয়ে তুলতে হবে। ইসলাম প্রতিষ্ঠা হলে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আসবে। সমাজে শান্তির সুবাতাস বইবে, যেভাবে মদিনায় মহানবী (সা.) জান্নাতি সমাজ উপহার দিয়েছিলেন। তিনি সকল প্রকার ভয়-ভীতি, হুমকি-ধামকি উপেক্ষা করে ইসলামের পথে অটল, অবিচল থাকার জন্য জামায়াতের কর্মীদের প্রতি উদাত্ব আহ্বান জানান।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মাওলানা আবদুল হালিম বলেন, জামায়াতে ইসলামী মানুষের মুক্তির জন্য ন্যায়-ইনসাফ ভিত্তিক কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চায়। শত শত শহীদের রক্তের বিনিময়ে আমরা আমাদের লক্ষ্য পানে এগিয়ে চলেছি। শহীদ আবদুল মালেকের স্মৃতি-বিজড়িত বগুড়ার জমিনকে দ্বীনের ঊর্বর ক্ষেত্র হিসেবে তৈরি করতে হবে। জামায়াতের প্রতিটি কর্মীকে মৃত্যু পর্যন্ত দ্বীনের পথে অবিচল থাকতে হবে।

অধ্যক্ষ শাহাবুদ্দিন বলেন, আল্লাহর খলিফা হিসেবে ইসলামের বিধান প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানো আমাদের অবশ্য কর্তব্য। জামায়াতের কর্মীদেরকে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে। তিনি রাজপথে আন্দোলনের মাধ্যমে আওয়ামী দুঃশাসন থেকে জাতিকে মুক্ত করতে জামায়াতের কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান।

সম্মেলনে অন্যান্যের মাঝে বক্তব্য রাখেন বগুড়া শহর জামায়াতের নায়েবে আমীর ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মাওলানা আলমগীর হোসাইন, অধ্যাপক মাওলানা আব্দুল হালিম বেগ ও ইসলামী ছাত্রশিবির বগুড়া শহর শাখার সভাপতি দেলোয়ার হোসেন।

সম্মেলনে নিম্নোক্ত ৩-দফা প্রস্তাব গৃহীত হয়।
১. সরকারকে অবিলম্বে পদত্যাগ করে কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে সংসদ নির্বাচন দিতে হবে।
২. চাল, ডাল, তেলসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্দ্ধগতি রোধ করতে হবে।
৩. বিদ্যুৎখাতে লুটপাট বন্ধ করে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে।