১২ জুলাই ২০২৩, বুধবার, ১১:০২

কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের বৈঠকে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ

সরকারি দলের ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট ভেঙে দিয়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য কমিয়ে জনগণের ক্রয়সীমার মধ্যে রাখার আহ্বান

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের এক বৈঠক সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত আমীর ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে দেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক ঊর্ধ্বগতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে নিম্নোক্ত প্রস্তাব গৃহীত হয়েছেঃ-

“জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছে যে, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির ফলে মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত ও দরিদ্র মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে। দ্রব্যমূল্য যেভাবে বাড়ছে জনসাধাণের আয় সেভাবে বাড়ছে না। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন ৫% বাড়িয়ে দিয়ে আগামী নির্বাচনে সরকার নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করার ব্যবস্থা করেছে। দেশের বাকী সাধারণ জনগণের এই বেতন বৃদ্ধিতে কোনো লাভ হবে না। সীমিত আয়ের সরকারী ও বেসরকারী কর্মচারীদের মাসিক বেতনে তাদের সংসার দুসপ্তাহও চলছে না। সরকার ভোটারবিহীন নির্বাচন করার ফন্দি-ফিকির নিয়ে ব্যস্ত রয়েছে। জনগণের দুর্ভোগ-দুর্দশা লাঘবে তাদের কোনো মাথা ব্যথা নেই। দেশের জনগণের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে।

বর্তমানে চাল ৬০ টাকা থেকে ৯০ টাকা, ডাল ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা, লবণ ৪৫ টাকা, চিনি ১৪৫ টাকা, সোয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১৭৯ টাকা, পেঁয়াজ ৭০ থেকে ৮০ টাকা, রসূন ২০০ টাকা, শুকনো মরিচ ৬শত টাকা, শুকনো হলুদ ৩০০ টাকা, আদা ৩০০ টাকা, জিরা ১১শত টাকা, টমেটো ২৬০ থেকে ২৮০ টাকা, কাঁচামরিচ ৫০০ টাকা, পটল ৬০ টাকা, রুই-কাতলা মাছ ৩৫০ থেকে ৪৬০ টাকা, ইলিশ ১১শ থেকে ১২শ টাকা, গরুর গোশত ৮০০ টাকা, খাসির গোশত ১২শত টাকা এবং ব্রয়লার মুরগি ২৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রয় হচ্ছে। এ অবস্থায় জনগণের জীবন ধারণ অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়েছে। গত দুই মাস পূর্বের তুলনায় বর্তমানে প্রতিটি দ্রব্যের মূল্য ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকারের কার্যকর কোনো পদক্ষেপ লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।

সরকারি দলের ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট ইচ্ছামত দ্রব্যমূল্য বাড়িয়ে অস্বভাবিকভাবে মুনাফা লাভ করে দেশের ১৭ কোটি মানুষকে কষ্ট দিচ্ছে। অতি সম্প্রতি বাণিজ্যমন্ত্রী জনাব টিপু মুনশি জাতীয় সংসদে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে তার অপারগতার কথা স্বীকার করে বলেছেন, ‘ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট ভাঙা যাবে না। তাদের সিন্ডিকেট ভাঙতে গেলে সমস্যা আরো বাড়বে।’ এ থেকেই পরিষ্কার বুঝা যাচ্ছে যে, দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির জন্য সরকার ও সরকারি দলের অতি মুনাফা লোভী ব্যবসায়ীরাই দায়ী।

তাই অবিলম্বে সরকারি দলের ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট ভেঙে দিয়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য কমিয়ে জনগণের ক্রয়সীমার মধ্যে এনে তাদের দুঃখ-দুর্দশা লাঘবে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সরকারের প্রতি আহবান জানাচ্ছে।