ফাইল ছবি
৩ নভেম্বর ২০১৮, শনিবার, ১০:২৫

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে তীব্র যানজট

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মেঘনা সেতু এলাকা থেকে দাউদকান্দির রায়পুর পর্যন্ত ঢাকাগামী লেনে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়েছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে বুধবার দেখা দেয়া এ যানজট শুক্রবারও ছিল। মেঘনা সেতু থেকে কুমিল্লার রায়পুর পর্যন্ত প্রায় ৬০ কিলোমিটার জুড়ে যানজট তীব্র আকার ধারণ করে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যানজটের মাত্রাও বাড়তে থাকে। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। হাইওয়ে পুলিশ বলছে, গত দু’দিনে শ্রমিকদের অবরোধের পর মহাসড়কে অতিরিক্ত যানবাহনের চাপে ঢাকাগামী লেনে এ যানজট সৃষ্টি হয়েছে। তবে চট্টগ্রামগামী লেনে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।

জানা যায়, বুধবার সন্ধ্যার পর থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মেঘনা সেতু এলাকায় যানজট সৃষ্টি হতে থাকে।
সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বড় হয় যানজটও। যানজটের কারণে সাধারণ যাত্রীদের ভোগান্তির যেন শেষ নেই। গতকাল ভোর ৬টায় কুমিল্লা থেকে ছেড়ে যাওয়া বাসগুলোও ৮-৯ ঘণ্টা ধরে মদনপুরে আটকে থাকে। অনেক যাত্রী হতাশ হয়ে আবার কুমিল্লায় ফিরে আসেন। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে চলাচলরত শ্যামলী পরিবহন, হানিফ পরিবহন, সোহাগ পরিবহন, সেন্টমার্টিন পরিবহন, এস আলম পরিবহন ও কাভার্ড ভ্যানের চালকরা জানান, দুপুর ১২টায় ঢাকার উদ্দেশে রওনা দিয়ে দুপুর ৪টা পর্যন্ত দাউদকান্দির টোলপ্লাজায় যানজটে আটকে আছেন। অথচ যানজট না হলে চার ঘণ্টায় ঢাকার পৌঁছানোর কথা ছিল। ব্যস্ততম এই সড়কে গতকাল যানজটে পড়ে ভিআইপি যাত্রীসহ বিদেশ গমনের যাত্রীরা যানজটে আটকা পড়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা একই স্থানে বসে থাকতে দেখা গেছে। চাঁদপুর গামী অনেক যাত্রী জানান, চালকদের মধ্যে প্রতিযোগিতা এবং নিয়ম না মেনে অনিয়ন্ত্রিতভাবে চালাবার কারণে প্রায় প্রতিদিনই এ সড়কে যানজট লেগে থাকে।

দীর্ঘ যানজটের কারণে দাউদকান্দি সেতু পেরিয়ে গজারিয়া এলাকা পর্যন্ত ১০/১২ কিলোমিটার রাস্তা বহু যাত্রী ছোট ছোট শিশু, ভারী ব্যাগ নিয়ে হেঁটে চলাচল করতে হয়েছে। লাকসাম থেকে ঢাকাগামী তিশা পরিবহনের বাসের চালক আলমগীর ও রয়েল কোচের চালক সাদ্দাম হোসেন বলেন, তীব্র যানজটে আটকা পড়ে এক কিলোমিটার পথ পেরোতে এক ঘণ্টা লাগছে। কক্সবাজার থেকে ঢাকাগামী সিল্ক লাইন পরিবহনের বাসের চালক তমিজ উদ্দিন গতকাল সকাল সাড়ে আটটায় মহাসড়কের ভবেরচর এসে যানজটে আটকা পড়ে চার কিলোমিটার পথ অতিক্রম করতে আড়াই ঘণ্টা লেগেছে। তিনি বলেন, কখন ঢাকায় পৌঁছাতে পারবো জানা নেই। যানজটে আটকে অনেকেই বিপাকে পড়েছেন। নির্দিষ্ট সময়ে না পৌঁছাতে পারলে ব্যবসায়িক ক্ষতির কথা বলেছেন ঢাকার ব্যবসায়ী কুমিল্লার সেনানিবাস এলাকার ময়নাল হোসেন। তিনি বলেন, একটানা আড়াই ঘণ্টা যানজটে আটকে আছি। বেলা ১১টায় ঢাকায় পৌঁছাতে না পারলে দোকান বন্ধ থাকবে, মালিক হিসেবে দোকানের চাবি আমার কাছে। ঠিক সময়ে দোকান খুলতে না পারলে দোকানের অন্যান্য কর্মচারীরা ফিরে যাবে। অনেক পণ্যবাহী যানবাহন আটকে আছে মহাসড়কে। বিপদ তাদেরও। এমন একজন কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার নবাবপুরের পিকআপচালক আবদুল আহাদ।

তিনি বলেন, নরসিংদী থেকে পোলট্রি মুরগি নিয়ে রওনা দিয়ে রাত আটটায় ঢাকার কাঁচপুরে যানজটে আটকা পড়ি। এক ঘণ্টার পথ অতিক্রম করতে সময় লেগেছে ১২ ঘণ্টা। নির্দিষ্ট সময়ে পৌঁছাতে না পারায় গাড়িতে ১০টি মুরগি মারা গেছে। কুমিল্লা থেকে ঢাকাগামী এশিয়া লাইন পরিবহনের বাসের চালক সোহাগ মিয়া বলেন, তীব্র যানজটের কারণে এক কিলোমিটার পথ অতিক্রম করতে প্রতি এক ঘণ্টা সময় লেগেছে। দাউদকান্দি হাইওয়ে থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ বলেন, যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করতে হাইওয়ে পুলিশ রাত-দিন চেষ্টা চালাচ্ছে। তবে রাতের চেয়ে যানজট কমে এসেছে।

http://mzamin.com/article.php?mzamin=143364