৩ মে ২০১৮, বৃহস্পতিবার, ৯:২৩

বাংলাদেশে গত পাঁচ বছরে বাক স্বাধীনতায় সবচেয়ে বেশি হস্তক্ষেপ ২০১৭ সালে

বাংলাদেশে গত পাঁচ বছরের মধ্যে বাক স্বাধীনতায় সবচেয়ে বেশি হস্তক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে ২০১৭ সালে, সংখ্যায় যা ৩৩৭টি। যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন আর্টিকেল নাইন্টিনের এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম ডে উপলক্ষে গতকাল বুধবার নিজেদের ওয়েবসাইটে এই গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে আর্টিকেল নাইন্টিন।
গবেষণা প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, গত বছর বাংলাদেশে সাংবাদিক নির্যাতনের ধরন উল্লেখযোগ্যভাবে পাল্টেছে। স্বাধীনভাবে মতপ্রকাশের জন্য আইনি প্রক্রিয়ায় হয়রানির শিকার হওয়ার ঘটনা ২০১৩ সালে ৩৩টি ছিল, যা ২০১৭ সালে বেড়ে ১৬৯টিতে দাঁড়িয়েছে। তবে শারীরিকভাবে হামলার ঘটনা বিগত বছরগুলোর তুলনায় ২০১৭ সালে কমেছে। ২০১৩ সালে সাংবাদিকদের ওপর শারীরিকভাবে হামলার ঘটনা ছিল ১৭৩টি, যা ২০১৭ সালে কমে হয়েছে ১১৩টি।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছর আইনি প্রক্রিয়ায় সাংবাদিক হয়রানির ঘটনা ঘটেছে ৭৫টি। এর মধ্যে মানহানির অভিযোগে ৩৫টি, মিথ্যা তথ্যের ওপর ভিত্তি করে ১৯টি, রাষ্ট্র বা কোনও বিশেষ ব্যক্তির সামাজিক মর্যাদা ক্ষুণ্ন হওয়ার অভিযোগে ১৪টি, উসকানি দেওয়ার অভিযোগে ৭টি, অশ্লীলতার অভিযোগে ২টি এবং ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার অভিযোগে ২টি মামলা হয়েছে।
গবেষণা প্রতিবেদনে উল্লেখ, ২০১৭ সালে সাংবাদিকদের ওপর শারীরিকভাবে হামলার ঘটনা ঘটেছে ১১৩টি, যার মধ্যে ১০টি গুম করার ঘটনা রয়েছে। হামলার ২৮টি ঘটনায় সাংবাদিকরা গুরূতর আহত হয়েছিলেন। গুম হওয়া সাংবাদিকদের ভবিষ্যতে কিছু নির্দিষ্ট বিষয়ে লেখালেখি না করার মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দৈনিক সমকালের সাংবাদিক আব্দুল হাকিম শিমুলকে হত্যার মতো ঘটনাও আছে বিগত বছরে।

আর্টিকেল নাইন্টিনের বাংলাদেশ এবং দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক তাহমিনা বলেন, আমাদের এই নতুন গবেষণায় বাংলাদেশের বর্তমান সত্য উঠে এসেছে। যেহেতু এটা নির্বাচনের বছর, আমরা বিষয়টিকে গুরুত্ব সহকারে দেখছি। বিশেষ করে তৃণমূল পর্যায়ের সাংবাদিকদের ব্যাপারে সরকারের আরও সচেতন হতে হবে। কারণ বিগত বছরের ঘটনাগুলোর মধ্যে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের হাত রয়েছে। নির্বাচন কমিশনকে কিছু বিষয়ে লক্ষ্য রাখার সুপারিশ করেছি আমরা। এর মধ্যে নির্বাচনকে ঘিরে যাতে কোনও সহিংসতা না হয় সে জন্য আমাদের সঙ্গে বসে আলোচনা করার কথা বলেছি, জেলা পর্যায়ের সাংবাদিকদের নির্বাচনের সময় নির্বিঘেœ কাজ করার পরিবেশ তৈরির কথা বলেছি।

 

http://www.dailysangram.com/post/328970