১ মে ২০১৮, মঙ্গলবার, ৯:৫৩

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে ধীরগতিতে নিরাপত্তা পরিষদ উদ্বিগ্ন

জাতিসঙ্ঘ নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতি পেরুর রাষ্ট্রদূত গুস্তাবো আদোলফো মেসা কায়াদ্রা ভেলাসকাস বলেছেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় ধীরগতিতে আমরা উদ্বিগ্ন। আর এ জন্যই নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যরা দুই দেশ সফর করছে। রোহিঙ্গা সঙ্কট নিরসনে প্রয়োজনীয় কাজ দ্রুততর করার জন্য জাতিসঙ্ঘ মহাসচিব একজন বিশেষ দূত নিয়োগ দিয়েছেন। নিরাপত্তা পরিষদ এতে সহায়তা দেয়ার চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যু নিরাপত্তা পরিষদের এজেন্ডার মধ্যে শীর্ষে রয়েছে। আমরা নিউ ইয়র্ক ফিরে গিয়ে এ বিষয়ে আলোচনা অব্যাহত রাখব।
বাংলাদেশে তিন দিনের সফর শেষে গতকাল ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এক সংবাদ সম্মেলনে ভেলাসকাস এ সব কথা বলেন। সকালে নিরাপত্তা পরিষদের প্রতিনিধিদল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করে।

সংবাদ সম্মেলনের পর মিয়ানমারের রাজধানী নেইপিডোর উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করে প্রতিনিধিদল। রাখাইন রাজ্য পরিদর্শন এবং মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন দলের নেতা ও রাষ্ট্রীয় কাউন্সিলর অং সান সু চিসহ ঊধ্বর্তন নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনা করবে নিরাপত্তা পরিষদের প্রতিনিধিদল।
ভেলাসকাস বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে নিরাপত্তা পরিষদ ঐক্যবদ্ধ রয়েছে। আর এ জন্যই পরিষদের ১৫ সদস্য একসাথে বাংলাদেশে এসেছে। গত নভেম্বরে নিরাপত্তা পরিষদ রোহিঙ্গা ইস্যুতে একটি প্রেসিডেন্সিয়াল বিবৃতিও দিয়েছে।

নিরাপত্তা পরিষদে কুয়েতের প্রতিনিধি মানসুর আইয়াদ আল-ওটাইবি সংবাদ সম্মেলনে বলেন, রোহিঙ্গাদের জন্য বাংলাদেশের ভূমিকাকে আমরা সাধুবাদ জানাই। রাখাইন সঙ্কটের জন্য বাংলাদেশ দায়ী নয়। সঙ্কট নিরসনে বাংলাদেশকে তার ভূমিকা অব্যাহত রাখার জন্য আমরা উৎসাহিত করেছি। ১০ লাখের বেশি উদ্বাস্তুকে আশ্রয় দেয়া সহজ কাজ না। বাংলাদেশের প্রতি আমাদের সমর্থন অব্যাহত থাকবে। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সঙ্কটের সুরাহা অবশ্যই হতে হবে। সমাধানের পথ খোঁজার ক্ষেত্রে চীন ও রাশিয়া বাধা দিচ্ছে না। দেশ দু’টি আমাদের সাথেই আছে।
আল-ওটাইবি বলেন, সঙ্কট সমাধানে সব পক্ষের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন প্রয়োজন। আমরা চুপচাপ থাকতে পারি না। আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতা সবাইকে মেনে চলতে হবে। রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছা, নিরাপদ ও মর্যাদার সাথে প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে সই হওয়া চুক্তির বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত করার উপায় খুঁজে বের করার চেষ্টা আমরা করব।
রোহিঙ্গা সঙ্কটের সহজ ও দ্রুত কোনো সমাধানের পথ নেই উল্লেখ করে কুয়েতের প্রতিনিধি বলেন, এ ব্যাপারে আমরা কারো প্রত্যাশা বাড়াতে চাই না।

জাতিসঙ্ঘে ব্রিটেনের স্থায়ী প্রতিনিধি কারিন প্রিস বলেন, রাখাইনে নৃশংসতার তথ্য-প্রমাণসহ একটি যথাযথ বিচারিক তদন্ত প্রয়োজন। জাতিসঙ্ঘের তথ্যনুসন্ধান মিশন তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে ঠিকই এবং এর ভিত্তিতে তারা বিবৃতিও দিয়েছে। কিন্তু এ সব তথ্য-উপাত্ত আইন দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার মতো যথেষ্ট নয়। তিনি বলেন, মিয়ানমার সরকার তাদের নিজস্ব তদন্ত শুরু করেছে। আমরা মনে করি তা অনেক দেরিতে শুরু করা হয়েছে এবং তার ব্যাপ্তিও যথেষ্ট নয়। রাখাইনে সহিংসতার সাথে জড়িতদের জবাবদিহিতার আওতায় আনতে মিয়ানমার কী করছে তা তাদের নেতৃবৃন্দের সাথে আলাপকালে জানতে চাইব আমরা।

http://www.dailynayadiganta.com/detail/news/314818