২৭ ডিসেম্বর ২০১৭, বুধবার, ৯:২৮

খাবার খাওয়া নিয়ে নিরাপত্তা কর্মী-যাত্রীদের বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতি

পছন্দের হোটেল মালিককে সুবিধা দিতেই শাহজালালে খাবার নিষিদ্ধ

এ সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ যাত্রীরা * বিমানবন্দরে খাবার নিষিদ্ধ করা বাড়াবাড়ি : বিমানমন্ত্রী

পছন্দের হোটেল মালিককে সুবিধা দিতে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রান্না করা খাবার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ১৫ নভেম্বর বিমানবন্দরের পরিচালকের দফতর থেকে এ ধরনের আদেশ দেয়া হয়। গ্রুপ ক্যাপ্টেন কাজী ইকবাল করিম স্বাক্ষরিত ওই আদেশে (যার নথি নং পরি/হশাআবি/বিবিধ-৬/২২২) বলা হয়, এখন থেকে কোনো ধরনের রান্না করা খাবার বিমানবন্দরে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হল। এ আদেশ বাস্তবায়নে নিরাপত্তা শাখাকে কঠোর নির্দেশ দেয়া হয়।

এ সিদ্ধান্ত জানানোর পর মঙ্গলবার এ নিয়ে বিমানবন্দরজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিশ্বে কোনো বিমানবন্দরে এ ধরনের তুঘলকি কার্যক্রম নেই। এ নিয়ে মঙ্গলবার বিমানবন্দরের নিরাপত্তা কর্মীদের সঙ্গে সাধারণ দর্শনার্থী ও বিমানবন্দরে কর্মরত বিভিন্ন সংস্থার কর্মীদের মধ্যে হাতাহাতি, হইচই ও বাকবিতণ্ডার ঘটনা ঘটেছে। কনকর্স হলে বসে সিঙ্গাড়া খাওয়ার সময় নিরাপত্তা কর্মীদের হেনস্তার শিকার হয়েছেন সোমানাথ নামের এক যাত্রী। চেক ইনের কাজ সেরে পাশের সিটিং রো’য় বসে সিঙ্গাড়া খাওয়ার সময় বিমানবন্দরের নিরাপত্তা অপারেটররা তাকে বাধা দেন। একপর্যায়ে ওই যাত্রীর সঙ্গে নিরাপত্তা কর্মীদের হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ প্রসঙ্গে সোমানাথ যুগান্তরকে বলেন, সারা জীবন ধরেই বিমানবন্দরে বসে চা-সিঙ্গাড়া-পুরি এমনকি ফ্রাইড রাইস পর্যন্ত খেয়েছেন। কখনও তো কেউ বাধা দেয়নি। হঠাৎ এ রকম সিদ্ধান্তে তিনি বলেন, বিশ্বের সব বিমানবন্দরে যাত্রীদের জন্য খাওয়ার ব্যবস্থা আছে। অথচ শাহজালালে একটিমাত্র রেস্টুরেন্টে বসে খাওয়া যায়। ওখানে একটি সিঙ্গাড়ার দাম ৫০ টাকা। একটি ছোট সাইজের কোক আর এক বোতাল পানি ২শ’ টাকা বিক্রি হয়। আর ভাত খেতে গেলে জনপ্রতি ৭শ’ থেকে ১ হাজার টাকা লাগছে। তিনি অভিযোগ করেন, পরোক্ষভাবে ওই রেস্টুরেন্টে বিমানবন্দরের অনেক রাঘববোয়ালের নামে বেনামে মালিকানা আছে। বিমান ও সিভিল এভিয়েশনের অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারী ওই হোটেল থেকে বিনা মূল্যে খাবার খান। মূলত এ কারণে ওই রেস্টুরেন্টকে বাঁচাতে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ এ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। প্রতিদিন এমন অনেক যাত্রী খাবার নিয়ে ভোগান্তিতে পড়েন শাহজালাল বিমানবন্দরে। বিমানবন্দরে কর্মরত একজন আনসার সদস্য জানান, রান্না করা খাবার নিয়ে ভেতরে ঢুকতে বাধা দেয়া হচ্ছে। বিমানবন্দরের ভেতরে ছোট ছোট খাবারের দোকানে গিয়েও রান্না করা খাবার বিক্রিতে বাধা দিচ্ছে বিভিন্ন এজেন্সির লোকজন।

বিমানমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন যুগান্তরকে বলেন, খাবারের ওপর এ ধরনের কোনো নিষেধাজ্ঞা হয়েছে কিনা- তা তার জানা নেই। বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন বলেও তিনি জানান। বিমানবন্দরে রান্না করা খাবার খাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা জারির যৌক্তিকতা নেই। এগুলো অনেক বাড়াবাড়ি।

 

https://www.jugantor.com/news/2017/12/27/182600