২৫ ডিসেম্বর ২০১৭, সোমবার, ৯:০৭

২০১৮ সাল নির্বাচনের বছর

দেখা অদেখা

সালাহউদ্দিন বাবর

নতুন বছর সমাগতপ্রায়। এই ২০১৮ হবে বাংলাদেশে বহু প্রত্যাশিত নির্বাচনের বছর। বিশ্বের অন্য কোথাও নির্বাচন বলতে এর আগে কোনো বিশেষণ যোগ দেয়ার প্রয়োজন পড়ে না। সুশৃঙ্খল সারিবদ্ধ নারী-পুরুষ আনন্দ উৎসবের মধ্য দিয়ে ভোট দিয়ে চলে যান। তাদের এই ভোটের আমানত নষ্ট হওয়ার কোনো দুশ্চিন্তা তাদের কল্পনায়ও থাকে না। সেখানে নির্বাচন বলতে এর সব বৈশিষ্ট্যই অটুট থাকে। এর কোথাও এতটুকু টোকা পড়ে না। কিন্তু বাংলাদেশে নির্বাচন বলতে যে চিত্র ফুটে ওঠে, সেটা হাঙ্গামা-হুজ্জত, মাস্তানদের ভোটকেন্দ্র দখল, বেপরোয়া কারচুপি আর ভোটার তাদের ভোট না দিয়ে প্রাণভয়ে কেন্দ্র থেকে চলে যাওয়া। তাই আগামী বছর দেশের সব মানুষ একটি বিশেষণযুক্ত কথা ‘প্রশ্নমুক্ত’ ভোটব্যবস্থার আকাক্সক্ষা করে আছে। এই ভালো ভোটের আশা শুধু সাম্প্রতিকের নয়, অনেক দিনের। বহু দিন ধরেই এখানে ভালো ভোট হচ্ছে না। তাই গণতন্ত্রের আকাক্সক্ষা অপূরণই থেকে যাচ্ছে। ক্ষমতা বদলের প্রক্রিয়াটি এখন আর জনগণের হাতে না থাকায় রাষ্ট্রযন্ত্র আর চলছে না সত্যিকার জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে। দেশে সর্বশেষ যে নির্বাচন হয়েছে ২০১৪ সালে, তার স্মৃতি কেউ নিশ্চয়ই ভুলে যায়নি। তেমন কিছুর পুনরাবৃত্তির আশা কেউ করে না।

সেই প্রশ্নমুক্ত নির্বাচনের মাধ্যমে আগামীতে যারা রাষ্ট্রযন্ত্র পরিচালনার দায়িত্ব পাবেন, তাদের কাছে অনেক বেশি কিছু আশা করার আছে জনগণের। কারণ, দেশের মানুষ এখন অনেক কিছু নিয়েই চরম ভোগান্তিতে রয়েছে। তাদের এই বিজয়ের মাসে দুঃখের সাথে স্মরণ করতে হয় বহু ক্ষেত্রেই তারা হেরে গেছে। আগামী বছর যে নির্বাচন দেশে হবে, তারা যেন এখন অন্তত গণতন্ত্র প্রতিহতকারীদের পরাজিত করে বিজয়ী হতে পারে। সে অভিযানে নির্বাচন কমিশন, সরকার ও নির্বাচনের অপরাপর সহায়ক শক্তিকে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে হবে। কিন্তু অতীতে এই তিন শক্তি এখানে গণতন্ত্রকে ফলপ্রসূ করতে তেমন সহায়তা দেয়নি। নির্বাচনের বহু ভালো কথা অনেক প্রতিশ্রুতি দিয়ে থাকেন রাজনীতিকেরা। কিন্তু নির্বাচনী বৈতরণী পার হয়ে যাওয়ার পর সেসব ওয়াদার কথা তারা বেমালুম ভুলে যান। জনগণ বহুবার এমন প্রতারণার শিকার হয়েছে। স্বাধীনতার এতকাল পরও এখনো যদি আমাদের বারবার সব কিছু গোড়া থেকেই শুরু করতে হয়, তবে বিপর্যয়কর পরিণততে পৌঁছতে আরো কত সময় লাগবে। কতকাল জাতিকে আর শুধু অপেক্ষায় থাকতে হবে।

২০১৮ সাল নির্বাচনের বছর হিসেবে গোটা বছরটিতে রাজনীতি তুঙ্গে পৌঁছবে। তবে এ বছর অনেক জটিল রাজনৈতিক বিষয়ের সুরাহা হতে হবে। প্রথম কথা হচ্ছে, নির্বাচনের স্বরূপটা কী হবে। এটা সব দলের অংশগ্রহণে হবে কি না। সংসদের বাইরে বিরোধী দল, বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেয়ার ব্যাপারে বলেছেÑ তারা অবশ্য নির্বাচনে অংশ নেবে, তবে নির্বাচন হতে হবে অবাধ ও নিরপেক্ষ। যেহেতু দলীয় সরকারের অধীনে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অতীতে সম্ভব হয়নি। তাই নির্বাচনসহায়ক নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হলেই তারা অংশ নেবে। বিএনপি একাই এ মত পোষণ করে এমন নয়, তাদের সহযোগী অন্যান্য দলের অভিমতও একই। তা ছাড়া পৃথিবী এখন একটি বৃহত্তর গ্রামে, এখানে কোনো দেশ একা চলতে পারে না। অন্যান্য দেশের অভিমত গুরুত্বপূর্ণ। পশ্চিমের গণতান্ত্রিক বিশ্ব বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক এবং অবাধ ও নিরপেক্ষ হওয়া দেখতে চায়। তাই আগামী নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হওয়া এবং নিরপেক্ষ করতে হলে ক্ষমতাসীনদের নির্বাচন সহায়ক সরকারের প্রশ্নে বিএনপির দাবিকে মেনে নেয়ার কথা আসে। এই দাবি পূরণ ছাড়া বিএনপি ও অন্যরা নির্বাচনে না এলে নির্বাচন তো অংশগ্রহণমূলক হবে না।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বিএনপির এই দাবিকে গ্রহণ করবে না বলে স্পষ্ট বলে দিয়েছে। দাবি তো মানবেই না এমনকি এসব বিষয় নিয়ে তারা বিএনপির সাথে কোনো আলোচনা করতেও রাজি নয়। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দলের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য দিয়ে বলেছেন, নির্বাচন পরিচালনা তো সরকার করে না, নির্বাচন কমিশন করে। তাদের অধীনেই নির্বাচন হবে। সে ক্ষেত্রে তারা কেন সরকার থেকে সরে দাঁড়াবে। নির্বাচন সহায়ক সরকার প্রশ্নে দেশের প্রধান দুই দলের অবস্থান উত্তর ও দক্ষিণে। তাদের এক মেরুতে আসতে সংলাপে যোগ দিতেও ক্ষমতাসীনেরা নারাজ। নির্বাচন সহায়ক সরকার প্রশ্নে আওয়ামী লীগের অবস্থান সম্পর্কে বলা হচ্ছে যে এ ক্ষেত্রে তারা সংবিধানের বাইরে যাবে না। অবশ্য সংবিধানের বাইরে গিয়ে এর আগে নির্বাচনকালীন সরকার হয়েছে। আর সে সরকারের অধীনে ভালো নির্বাচন হয়েছে। এরশাদ সরকারের পতনের পর সব দলের সম্মতির ভিত্তিতেই সেই সরকার গঠিত হয়েছিল। নির্বাচনের পর আবার সবাই মিলে সংবিধান সংশোধন করে এই বিষয়টির বৈধতা দেয়া হয়েছিল। অতীতের সে উদাহরণ সামনে রেখে এখন কিছু করার মতো পরিবেশ অবশ্য নেই।
নির্বাচন প্রশ্নে উল্লিখিত সঙ্কট সমাধান অত্যন্ত কঠিন। প্রধান দুই দলের পরস্পর দুই মেরুতে অবস্থানজনিত সমস্যা নিয়ে সরকারপক্ষ এ নিয়ে কোনো আলাপ-আলোচনায়ও রাজি নয়। দুই পক্ষে এই বিরোধ নিষ্পত্তিতে এমন কোনো তৃতীয় পক্ষ নেই, যারা মধ্যস্থতার একটা পথ বের করতে পারেন।

দুই পক্ষের এই বিরোধের মূলে যদি যাওয়া যায় তবে দেখা যায় যে আসলে নির্বাচনকে অবাধ ও নিরপেক্ষ করার প্রশ্নেই এই গ্যাপ তৈরি হয়েছে। কিন্তু নির্বাচনের মান ভালো করার প্রশ্নে তো কারো কোনো মতপার্থক্য থাকা সঙ্গত নয়। সঠিক গণরায় যে প্রক্রিয়াই আসুক না কেন তাতে দ্বিমত করার কী আছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বেশ কিছু কথা বলা হচ্ছে যাতে মনে হয় নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার ব্যাপারে তারা গভীর আস্থাশীল। আওয়ামী লীগের দাবি, গত ৯ বছরে তাদের শাসনামলে দেশ উন্নয়নের মহাসড়কে উঠে এসেছে। এর পরও কেন তারা অবাধ নির্বাচনের প্রশ্নে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভুগছে তা বোধগম্য নয়। আওয়ামী লীগ তাদের আমলের এই ৯ বছরের যে উন্নয়নের কথা বলছে তা নিয়ে আবশ্য তাদের বিরুদ্ধপক্ষ স্বীকার করতে নারাজ। তারা বলছে, গত ৯ বছরে জনগণের ভোগান্তি বহু গুণে বেড়েছে, আর গণতন্ত্র গভীর খাদের কিনারায় এসে দাঁড়িয়েছে। নিরপেক্ষ মহল মনে করে উন্নয়নের যে দাবি সরকার পক্ষ থেকে করা হচ্ছে তা সর্বাংশে সঠিক নয়। তা ছাড়া অন্যান্য সূচক নিয়ে যদি কথা বলা হয় তবে তাদের অক্ষমতা বিরাট। আইনশৃঙ্খলা, মানবাধিকার, দুর্নীতি, সুশাসন ও রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নিয়ে প্রচুর সমালোচনার সুযোগ রয়েছে।

নির্বাচন নিয়ে যদি সমঝোতা না হয়, তবে দেশের সব পর্যায়ে এর মারাত্মক প্রতিক্রিয়া হবে। নির্বাচন সহায়ক সরকার প্রশ্নের সুরাহা না হলে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব হবে বলে মনে হয় না। আর বিএনপি বলেছে তারা সহায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলনে যাবে। তারা যদি আন্দোলনে যায়, তবে সরকার অবশ্যই এসে আন্দোলন ভেঙে দেয়ার প্রচেষ্টা করবে। এর ফল হবে গোটা দেশে অস্থিরতা সৃষ্টি। সরকার পাল্টা দমনমূলক নীতি গ্রহণ করলে, হিংসা-বিদ্বেষ, সংঘর্ষ-সঙ্ঘাত ছড়িয়ে পড়বে। এতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবলম্বন অবনতি ঘটবে। অর্থনীতিতে, সামাজিক পরিবেশে বিরূপ অবস্থা দেখা দেবে। সমাজবিরোধীরা এ সুযোগ নিয়ে নাগরিক জীবনকে বিষিয়ে তুলতে পারে। দেশে এখন বিনিয়োগ নেই, ফলে শিল্পকারখানা হচ্ছে না, কর্মসংস্থানও নেই। রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে বিনিয়োগ পরিস্থিতি আরো শোচনীয় হয়ে পড়বে। সরকার প্রতিপক্ষকে দমনের জন্য আরো কঠোর হবে। এসবের চূড়ান্ত ফল হবে, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতির অবনতি।
আর যদি সব ভালোয় ভালোয় যায়, নির্বাচন নিয়ে যেভাবেই হোক সঙ্কট কেটে যায়, তবে আগামী বছরটি দেশে উৎসবের আমেজে ভরে উঠবে। নির্বাচনে সবাই যদি অংশ নেয়, তবে দলগুলো দারুণ ব্যস্ত হয়ে পড়বে। নির্বাচনীযুদ্ধ মোকাবেলার উপযুক্ত প্রার্থী বাছাই তাদের মনোনয়ন দেয়া, নির্বাচনী লড়াইয়ের কৌশল তৈরি, প্রতিপক্ষের আক্রমণকে প্রতিহত করে পাল্টা আক্রমণ চালানোর জন্য যুৎসই বক্তব্য তৈরি রাখা। নির্বাচনের ময়দানে মানুষের মনোযোগ আকর্ষণের জন্য যাবতীয় কলাকৌশল নির্ধারণ করা। জনগণের মতামতের গতিপ্রবাহ বোঝার জন্য নির্বাচনী জরিপ করা। অবশ্য এমন জরিপ আগেও করা হয়ে থাকে। বড় দলগুলো নির্বাচনী প্রচারকার্যক্রম নানা ফ্রন্টে পরিচালনা করে। দলের সমমনা বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক, বিভিন্ন মাধ্যমের শিল্পীরা নিজ নিজ বলয়ে নির্বাচনী প্রচারে লিপ্ত হয়ে থাকে দলের পক্ষে। একটা সর্বব্যাপী কার্যক্রম শুরু হয়ে যায় নির্বাচনের আগে। বড় দলগুলোর বিষয়গুলো এসব জোগাড়যন্ত্র নিয়ে ব্যস্ত থাকার পাশাপাশি অনেকটা সমস্যায় পড়তে হয় নির্বাচনে, আর সেটা এক পদের বিপরীতে বহু প্রার্থী দলের মনোনয়ন পাওয়ার দরখাস্ত করেন। এটা সামাল দেয়া কঠিন কাজ। সবাই দলের মনোনয়ন পাওয়ার জন্য দেনদরবার, গ্রুপিং, লবিং করে। এই সমস্যা সমাধান করা কঠিন হলেও এটা করতে না পারলে দেখা যায় বিদ্রোহী প্রার্থীদের আনাগোনা।

সরকারের শীর্ষপর্যায় থেকে যখন আগাম নির্বাচনের কথা বলা হয়েছে, নির্বাচন কমিশন তখন এতটুকু না রয়েসয়েই বলে ফেলেছিলেন। তারা আগাম নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত। সরকার পক্ষ হঠাৎ করে এ বক্তব্য থেকে সরে দাঁড়ালে কমিশন নিশ্চুপ হয়ে যায়। আসলে অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে তারা কতটা প্রস্তুত, কমিশন এ নিয়ে কোনো কথাই এ পর্যন্ত বলেনি, কী প্রস্তুতি তারা নিয়েছে তাও কারো জানা নেই। একটা নির্বাচন হতে হবে, সেটা করে ফেলব। এমন চিন্তা যদি কমিশন করে থাকে, তবে বড় ভুল হয়ে যাবে। নির্বাচন করানো নিয়ে কমিশনের যে ভাবমর্যাদা তা কিন্তু বেজায় খারাপ। এই ভাবমর্যাদা ফিরিয়ে আনতে তারা কতটা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ তাও তারা আভাসে-ইঙ্গিতে বলেনি। আগামী নির্বাচন নিয়ে কোনো হেলা-অবহেলার অবকাশ নেই, গোটা দেশ এখন একটি ‘প্রশ্নমুক্ত’ নির্বাচনের অধীর অপেক্ষায়। নির্বাচনী বিধিবিধান এবং সংবিধান কমিশনকে যথেষ্ট ক্ষমতা দিয়েছে একটি ভালো নির্বাচন করানোর জন্য।

এসব বিধিবিধানের সহায়তা সত্ত্বেও যদি কমিশন মনে করে যে, এসব পর্যাপ্ত নয়, তবে তাদের আগে ভাগে তা বলে দিতে হবে। এখন দেখা যাবে ভালো নির্বাচনের জন্য আর কী প্রয়োজন কশিমনের এসব বিষয় জানতে না পারলে সংশ্লিষ্ট মহল কী করে তার প্রতিকার করবে। নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য হালনাগাদ একটি ভোটার তালিকা জরুরি, কিন্তু এ ব্যাপারে কমিশনের তৎপরতা কতটুকু তা তারা বলছেন না। নির্বাচন নিয়ে সরকার কিভাবে কোন পথে অগ্রসর হবে তার সমান্তরাল চলা কমিশনের উচিত হবে না। কমিশনকে তার নিজের পথে একাই চলতে হবে। কমিশনকে নিজস্ব এবং স্বতন্ত্র ভূমিকা থাকতে হবে।

আগামী বছরের শেষ দিকে সাধারণ নির্বাচন হবে এই আশাই সবার। তাই ২০১৮ সাল নির্বাচনের প্রস্তুতি প্রচার প্রপাগান্ডার মধ্য দিয়ে কেটে যাবে। রাষ্ট্রের সব কিছু এবং জনগণের সব চিন্তা-চেতনায় নির্বাচন ঘিরে থাকবে। এর পরের বছর ২০১৯ সালে নতুন সরকার ক্ষমতায় আসবে। ২০১৮ সালের নির্বাচন নিয়ে যদি কোনো প্রশ্ন না থাকে, কারচুপি না হয় তবে খুব ভালো। কিন্তু নির্বাচন কমিশন যদি দেশের জনগণের আশা-আকাক্সক্ষা অনুযায়ী নির্বাচন করতে ব্যর্থ হয়, তবে এর জের হিসেবে ২০১৯ হয়ে উঠবে অশান্ত-অস্থিরতায় ভরা। ২০১৭ যাচ্ছে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের অপেক্ষায় থাকা, ২০১৮ সাল যাবে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে, নানান কার্যক্রম গ্রহণের মধ্য দিয়ে, আর নির্বাচনে যদি অনিয়ম কারচুপি হয়, অর্থাৎ প্রশ্নমুক্ত নির্বাচন না হয়, তবে পরপর তিনটি বছর এভাবে একটা নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়েই যদি কেটে যায়, তবে অন্যান্য কাজ হবে কিভাবে।

এমন করে বছরের পরপর যদি সব অর্থহীন হয়ে যায়, তবে তো দেশ রসাতলে যাবে। চতুর্দিক থেকে অন্ধকার নেমে আসবে। এতে করে দেশ জাতির সম্মুখে পথচলা কঠিন হয়ে পড়বে। বিষয়টি নিয়ে সব রাজনীতিক, সমাজবিজ্ঞানী, অর্থনীতিবিদ, সামাজিক নেতৃবৃন্দ, ব্যবসায়ীসহ সংশ্লিষ্ট সবার ভেবে দেখা উচিত। প্রত্যেকেই নিজ নিজ অবস্থান থেকে উদ্যোগী হতে হবে, যাতে এমন সঙ্কট তৈরি না হয়। অর্থাৎ এমন সঙ্কট তৈরির কারণ যে নির্বাচন, সেটা যাতে কোনোক্রমেই প্রশ্নবিদ্ধ না হয়। সে জন্য যার যতটুকু অবদান রাখার সুযোগ রয়েছে তার সেটা করা উচিত। যারা ক্ষমতার কেন্দ্রে রয়েছে তাদের যশ-প্রতিপত্তির বশবর্তী না হয়ে দেশের স্বার্থকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়ার মানসিকতা রাখতে হবে। দেশ ব্যর্থ হলে কেউ সফল হবে না। আমাদের পূর্বসূরিদের ত্যাগ-তিতিক্ষা তাদের পরিশ্রমকে স্বার্থক করা এবং উত্তরসূরিদের জন্য একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ রচনার জন্য সব পর্যায়ের নেতাদের এগিয়ে আসতে হবে।

 

http://www.dailynayadiganta.com/detail/news/279242