২৩ ডিসেম্বর ২০১৭, শনিবার, ২:৩৯

গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্যে ৯০’র মত সংবিধানের বাইরে আসতে হবে

বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ফ্রি-ফেয়ার নির্বাচন না হবার আশংকা ক্রমশ বাড়ছে। অন্যদিকে সরকারের মধ্যে ক্ষমতা হারানোর ভয় কাজ করছে। সম্প্রতি সরকারি দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেই দিয়েছেন, ক্ষমতা হারালে নেতাকর্মীদের বাতি দিয়েও খুঁজে পাওয়া যাবে না। স্বাস্থ্যমন্ত্রী নাসিম বলেছেন, ক্ষমতা হারালে অস্তিত্ব থাকবে না। আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, আগামী নির্বাচন অস্তিত্ব রক্ষার নির্বাচন। সরকারি দলের এমন বক্তব্যেই ফুটে উঠেছে তাদের মাঝে এক ধরনের ক্ষমতা হারানোর ভয় কাজ করছে। তাই সরকারের টার্গেট একটাই, যে কোন মূল্যে ক্ষমতায় থাকা চাই। এজন্য তারা কোন আন্দোলন না থাকা সত্ত্বেও বিরোধী জোটের নেতাকর্মীদের প্রতিদিন গণগ্রেফতার করে চলেছে। নতুন নতুন মামলায় জড়ানো হচ্ছে। এমনকি জোটের প্রধান বেগম জিয়াকেও নির্বাচনের বাইরে রাখার ষড়যন্ত্র হচ্ছে। ফলে একাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানে এক ধরনের অনিশ্চয়তার পাশাপাশি জনমনে আতংক দেখা দিয়েছে। অন্যদিকে বিরোধী জোটে নিরপেক্ষ নির্বাচন না হবার আশংকা দেখা দিয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, দেশের রাজনৈতিক পরিবেশ যেদিকে যাচ্ছে তাতে বিরোধী জোটের নির্বাচনে অংশ নেয়া সম্ভব নাও হতে পারে। তারা বলছেন, বিরোধীদলের নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন না দেয়ার পক্ষে। সংবিধানের দোহাই দিয়ে লাভ হবে না। সবার অংশগ্রহণে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পথ তৈরি করতে হবে। যে ভয়ে ৯০ সালের আগে কোনো রাজনৈতিক দল স্বৈরাচার এরশাদের অধীনে নির্বাচনে অংশ নেয়নি, তার যেন পুনরাবৃত্তি না ঘটে। তখন যেভাবে হাইকোর্টের প্রধানবিচারপতিকে নিয়ে এসে নির্বাচন করানো হয়েছে, যা সংবিধানে ছিল না। অতএব সংবিধান বাধা হতে পারে না।

বিশিষ্ট রাজনৈতিক বিশ্লেষক সুশাসনের জন্য নাগরিক সুজন সম্পাদক বলেন, বিএনপি বলেছে সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ যে রায় দিবে তারা সেটি মেনে নেবে। তাদের এই বক্তব্য অবশ্যই ইতিবাচক। কিন্তু আশংকা হচ্ছে, সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে। প্রধানমন্ত্রীসহ ক্ষমতাসীন দলের নেতারা বলছেন আগামী নির্বাচন তাদের অধীনেই হবে। প্রধানমন্ত্রী তার জায়গায় থাকবেন, মন্ত্রীরা মন্ত্রী থাকবেন। সবাই যার যার জায়গায় থাকবেন। আর বিএনপি বলছে, ক্ষমতাসীন দলের অধীনে তারা নির্বাচনে যাবে না। তাহলে নির্বাচন প্রশ্নে একটি অনিশ্চয়তা থেকেই যাচ্ছে। যদি সহসা এই সংকটের সমাধান না হয় তাহলে দেশে নির্বাচন হবে বলে মনে হয় না। আর যদি হয়ও তাতে বিরোধী দলগুলোর অংশ নেয়ার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ। এ অবস্থায় দেশে একটি সংকট তৈরি হতে পারে। যা কারো জন্যই কাম্য হবে না।

সূত্র মতে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে নানা কথা শোনা যাচ্ছে বেশ কিছুদিন থেকে। চলছে ব্যাপক তোড়জোড়ও। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বেশ কিছুদিন থেকেই নৌকার পক্ষে ভোট চাইছে। দলটির সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেও বিভিন্ন সভা-সমাবেশে নৌকা মার্কায় ভোট চাইছেন। তাদের এমন বক্তব্যে অনেকেই আগাম নির্বাচনের কথা বলেছেন। কিন্তু সরকার তাদের অবস্থান থেকে সরাসরি ইউটার্ন করেছেন। তারা এখন বলছে, দেশে আগাম নির্বাচনের কোনো পরিবেশ তৈরি হয়নি। একইসাথে তারা বলছে, কোন দলকে নির্বাচনে আনার দায়িত্ব সরকারের নয়। যারা নির্বাচনে আসবেনা সেটি তাদের নিজস্ব বিষয়। এছাড়া সংবিধান মতেই আগামী সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, তারা ক্ষমতাসীনদের অধীনে জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেবে না। এমনকি নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সহায়ক সরকার ছাড়া কোনো নির্বাচনও হতে দিবে না বলে তারা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

জানা গেছে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে টার্গেট করে কর্মপরিকল্পনা তৈরি করছে আওয়ামী লীগ। ক্ষমতাসীনদের টার্গেট একটাই, ফের ক্ষমতা। বিএনপিকে নানা কৌশলে কোণঠাসা করে নির্বাচনে জয়ী হওয়ার কথা ভাবছে দলটি। ফের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসতে সব ধরনের চেষ্টা চালাবে তারা। ইতিমধ্যে মাঠে নেমেছেন নেতাকর্মীরা। তবে দমন পীড়নের পাশাপাশি এখন বিএনপিকে রাজনৈতিকভাবে দুর্বল করে রাখতে চাইছে আওয়ামী লীগ। এখন তাদের বক্তব্য একটাই, নিবন্ধন রক্ষায় বিএনপিকে নির্বাচনে আসতে হবে। দলের পক্ষ থেকে নিবন্ধনের বিষয়টি প্রাধান্য দেয়ার জন্য নেতাদের নির্দেশনাও দেয়া হয়ে বলে জানা গেছে। এদিকে নিবন্ধন ছাড়াও বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মামলাকেও অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে ক্ষমতাসীনরা। বিএনপি নেত্রীর জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল দুর্নীতি মামলার আসন্ন রায় নিয়ে নেতাকর্মীরা চিন্তিত। তারা প্রকাশ্যে বলে আসছেন বিচারের রায়ে নেত্রী যদি কারাগারে যান, তবে নির্বাচনে যাবে না বিএনপি। নেত্রীবিহীন নির্বাচন তারা হতে দেবেন না। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, খালেদা জিয়াকে সাজা দেয়া হলে বিএনপি সংসদ নির্বাচনে অংশ নেবেনা। একইসাথে ক্ষমতাসীনরা আবারো ক্ষমতায় থাকার যে স্বপ্ন দেখছেন সেটি দু:স্বপ্ন ছাড়া আর কিছুই নয়।

নির্বাচন কমিশনের প্রস্তাবিত রোডম্যাপ অনুযায়ী আগামী বছরের শেষ সপ্তাহের মধ্যে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা। এজন্য রাজনৈতিক দলগুলোও নিজেদের মতো করে প্রস্তুতি গ্রহণ করছে। কিন্তু এ ব্যাপারে জনগণ মনে হয় অনেকাংশেই নির্বিকার। হয়তো কিছুটা আতঙ্কিতও। তারা নির্বাচনের আগে কোনো হানাহানি দেখতে চান না। তারা চান ক্ষমতার শান্তিপূর্ণ পালাবদল। দেশের সকল নাগরিক মুখিয়ে আছেন নিজের ভোটাধিকার প্রয়োগ করার জন্য। এজন্য তারা স্বপ্নে বিভোর। সবার আশা, অচিরেই দেশে একটি শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। দেশের জনগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে দেশ পরিচালনায় তাদের মতামত প্রকাশের সুযোগ পাবেন। নির্বাচনের মাধ্যমেই দেশে গণতন্ত্রের সত্যিকার বহিঃপ্রকাশ চান তারা। কিন্তু সরকার যেভাবে এগুচ্ছে তাতে দেশে আবারো অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে।

দেশের প্রায় সব ক’টি দল, সুশীল সমাজ এমনকি বিদেশীরা পর্যন্ত বাংলাদেশে সবার অংশগ্রহণে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন দেখতে চান। তবে জাতীয় নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে যেভাবে সরকারি দলের একগুয়েমী বক্তব্য চলছে তাতে করে জনমনে শংকা তৈরি হচ্ছে এই জন্য যে, আগামী নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে গণতন্ত্রের উত্তরণ ঘটবে, নাকি আবারো একটি একদলীয় ভোটারবিহীন নির্বাচনের প্রহসন ঘটবে? রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা বলছেন, একটি অংশগ্রহণমূলক অর্থপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠান জাতির আকাংখা ও দেশের স্বার্থেই জরুরি। তাদের মতে, এর মাধ্যমে সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক পথ অনুসরণ করে বাংলাদেশ দ্রুত উন্নতির দিকে এগিয়ে যাবে, দেশ থেকে দারিদ্র্য মোচন হবে, দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা চাঙ্গা হবে।

সুশীল সমাজের সদস্য এবং বিশিষ্ট আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক বলেছেন, দলীয় সরকারের অধীনে এ পর্যন্ত দেশে যে ছয়টি সংসদ নির্বাচন হয়েছে, সেই ছয়টি নির্বাচনের একটিও ভালো হয়নি। এরই ধারাবাহিকতায় আগামী নির্বাচনও যে ভালো হবে না সেটা অনেকটা নিশ্চিত। ড. মালিক বলেন, বাংলাদেশের ৪৭ বছরের ইতিহাস যদি পর্যালোচনা করা হয় তাহলে দেখা যায়, আগামী নির্বাচন কোনোভাবেই সুষ্ঠু হবে না। গত ৪৭ বছরে ১০টি নির্বাচনের মধ্যে ছয়টি দলীয় সরকারের অধীনে হয়েছে। বাকি চারটি হয়েছে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে। এখানে উল্লেখ করা যায়, যে চারটি নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হয়েছে, সেগুলো অপেক্ষাকৃত ভালো নির্বাচন ছিল।

সূত্র মতে, ১৯৯০ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত দেশে যে তিনটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে সেগুলো দেশে বিদেশে প্রশংসিত হয়েছে। কারণ দলীয় সরকারের অধীনে সে নির্বাচনগুলো অনুষ্ঠিত হয়নি। ১৯৯০ সালের আগে এরশাদের অধীনে নির্বাচনে যাবেনা বলে সবাই দাবি তুলেছিল। কারণ দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে সেটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবেনা। যার ফলে ১৯৯০ সালে হাইকোর্টের প্রধানবিচারপতিকে দিয়ে সংসদ নির্বাচন করানো হলো। পরবর্তীতে তাকে আবারো প্রধানবিচারপতির দায়িত্বে চলে যেতে হয়েছে। পরবর্তীতে আন্দোলনের প্রেক্ষিতে দুইটি নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হয়। সেগুলো নিয়েও কোনো বিতর্ক ছিলনা। এরপর ২০০৮ সালে মঈন ফখরুদ্দিন সরকারের অধীনে যে নির্বাচন হয়েছে তা নিয়ে যথেস্ট বিতর্ক দেখা দেয়। যদিও সেই নির্বাচনের ফলাফল মেনে নিয়ে বিএনপি সরকারের সহায়তার ঘোষণা দেয়। কিন্তু এরপরই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আইন বাতিল করে আওয়ামী লীগ সরকার। তারা ২০১৪ সালে নিজেদের অধীনে নির্বাচনের কথা বলে। যেহেতু ১৯৯০ সালে যে ভয় সবার মাঝে ছিল সে কারণে বিএনপিসহ দেশের অধিকাংশ দলই সেই নির্বাচনে অংশ নেয়নি। প্রশ্নবিদ্ধ সেই নির্বাচনে ৫ শতাংশ ভোটারও উপস্থিতি ছিলনা। ১৫৩ জন সংসদ সদস্য বিনাভোটেই নির্বাচিত হয়েছে। তখন সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল এটি নিয়ম রক্ষার নির্বাচন। কিন্তু এখন তারা আবারো নিজেদের অধীনে নির্বাচন করতে চাইছে। দেশবাসী আশা করেছিল সরকার গণতেন্ত্রর সার্থে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের আয়োজন করবে। কিন্তু সরকার এখন ২০১৪ সালেরই পুনরাবৃত্তি ঘটাতে চাচ্ছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, জনগণ চাইছে, সরকার ও বিরোধী দল দুটোই গণতন্ত্রের চর্চা করবে। কিন্তু দেশে আজ সেটি অনুপস্থিত। সরকারি দল বিরোধী দলকে সহ্যই করতে পারছেনা। তাদের সভা-সমাবেশে অঘোষিত নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। সরকার মনে করছে, বিরোধী দল যদি গণতান্ত্রিক কর্মকান্ড অব্যাহত রাখে তাহলে তাদের ক্ষমতা নড়বড়ে হয়ে যাবে। এই অবস্থায় বিরোধী দল মনে করছে, সরকার যেখানে তাদের সভা-সমাবেশই করতে দিচ্ছেনা সেখানে তাদের অধীনে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন কিভাবে সম্ভব? যদি নির্বাচন নিরপেক্ষই না হয় সেখানে অংশ নিয়ে লাভ কি? এছাড়া আবারো দেশব্যাপী চলছে বিরোধী নেতাকর্মীদের পাইকারী হারে গ্রেফতার, ধরপাকড় এবং মামলা দেয়ার হিড়িক দেখা দেয়ায় বিরোধী জোটে নতুন করে আতংক সৃষ্টি হয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা সরকারের এমন আচরণে বলছেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বিরোধী দলের সম্ভাব্য প্রার্থীদের গ্রেফতার, মামলা দিয়ে হয়রানি এবং পাইকারিহারে গ্রেফতার করে নির্বাচনের মাঠ পরিষ্কার করছে। তারা চাচ্ছে, যারা নির্বাচনে প্রার্থী হবেন তারা যেন মামলা নিয়ে ব্যস্ত থাকেন অথবা পালিয়ে থাকে। এছাড়া যারা নির্বাচনে দলের পক্ষে মাঠে কাজ করবে সেসব ত্যাগী কর্মীদের গণহারে গ্রেফতারের করে ভীতির সঞ্চার করা।

নির্বাচন প্রশ্নে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, গতবার একতরফা নির্বাচন করতে পারলেও এবার বিএনপিকে বাদ দিয়ে নির্বাচন সহজ হবে না। তিনি বলেন, বিরোধী নেতাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে অথবা মামলা দিয়ে গ্রেফতার করে বা হয়রানি করে ক্ষমতাসীন দল নির্বাচন করার যে স্বপ্ন দেখছে তা কোনদিন সফল হবেনা। তিনি বলেন, দেশে এখন কোন আন্দোলন বা রাজনৈতিক তৎপরতা নেই। অথচ সরকার বিরোধী নেতাকর্মীরদের পাইকারি হারে গ্রেফতার করছে। নতুন করে মিথ্যা মামলায় জড়াচ্ছে। এভাবে ক্ষমতায় থাকার স্বপ্ন কোনদিনই পূরণ হবেনা।

সূত্র মতে, আদৌ দেশে কোনো নির্বাচন হবে কিনা তা নিয়ে তারা উৎকন্ঠায় রয়েছে দেশবাসী। তাদের উৎকন্ঠা-শংকা আরও বাড়ছে যখন নির্বাচন প্রশ্নে সরকার ও বিরোধী জোট নিজনিজ অবস্থানে অনঢ়। সরকারি দল আওয়ামী লীগ বলছে, তাদের অধীনেই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে। আন্দোলন করে কোনো লাভ হবেনা। অন্যদিকে বিএনপি-জামায়াতে ইসলামীসহ দেশের অধিকাংশ রাজনৈতিক দল ও বিদেশীরা বলছে, নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের অধীনেই আগামী নির্বাচন হতে হবে। দলীয় সরকারের অধীনে দেশে কোনো নির্বাচন হবেনা এমনকি হতেও দেয়া হবেনা। সূত্র মতে, ২০১৪ সালের সংসদ নির্বাচনে ৫ শতাংশ ভোটারও কেন্দ্রে যাননি। ১৫৩ জন সদস্য বিনা নির্বাচনে সংসদ সদস্য হয়েছেন। এরপর অনুষ্ঠিত স্থানীয় সরকার নির্বাচনেও ঠিকভাবে ভোট দিতে পারেনি জনগন। কারণ কেন্দ্র দখল, মারামারি, ভয় দেখানো, মামলা-হামলার কারণে তারা ভোট দিতে যায়নি। এবারো যদি কেন্দ্রে যেতে শংকা থাকে তাহলে ভোটাররা যাবেনা। ভোটাররা বলছেন, আগামী নির্বাচনও যদি একইভাবে অনুষ্ঠিত হয় তাহলে তাতে তারা অংশ নেবেন না।

বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ, লেখক ও গবেষক এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. আকবর আলি খান বলেছেন, রাজনীতি নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে এক ধরনের ভীতিকর পরিস্থিতি কাজ করছে। চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে মাঝে মাঝে আশার আলো দেখা গেলেও তা খুবই ক্ষীণ। তিনি বলেন, সাধারণ মানুষ রাজনীতি নিয়ে ভীতসন্ত্রস্ত।

http://www.dailysangram.com/post/312165