২৪ ডিসেম্বর ২০১৭, রবিবার, ২:২৪

পিয়াজের দাম কমার প্রভাব নেই খুচরা বাজারে

বাজারে নতুন পিয়াজে ভরপুর। দামও কমছে। কিন্তু খুচরা বাজারে দাম কমার প্রভাব নেই। নামমাত্র দু’-এক টাকা কমে খুচরা বাজারে প্রতি কেজি পিয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকায়। পাশাপাশি শীতকালীন সবজির বাজারে কিছুটা স্তস্তি ফিরে এলেও খুচরা বাজারে চড়া দামে বিক্রির অভিযোগ করছেন ক্রেতারা। গতকাল রাজধানীর বৃহৎ পাইকারী বাজার কাওরানবাজার ও খুচরা হাতিরপুল কাঁচা বাজারসহ বিভিন্ন বাজারে ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে এসব চিত্র দেখা গেছে।

বাজারে হঠাৎ করে ৩০ টাকার পিয়াজ এক মাসের ব্যবধানে বেড়ে হয় ১৩০-১৪০ টাকা। কাওরানবাজারে প্রতি কেজি দেশি পিয়াজ ১০০-১২০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেলেও হাতিরপুল খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকা। গত দুইদিনের ব্যবধানে বাজারটিতে পিয়াজের কেজিতে কমেছে ৫ টাকা। খুচরা এই বাজারটিতে হাতেগোনা কয়েকটি দোকানে ওঠা নতুন পিয়াজ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকা। আর আমদানি করা পিয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়। এমন ধীরগতিতে পিয়াজের দাম কমায় বিরুপ প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছেন হাতিরপুল বাজারের ক্রেতারা। প্রতি কেজি দেশি পিয়াজ ১৩০ টাকায় কেনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে কাঁঠালবাগানের বাসিন্দা হাতিরপুল কাঁচাবাজারের খুচরা ক্রেতা সাইফুল ইসলাম বলেন, ৩০ টাকার পিয়াজ কিনে খেতে হচ্ছে ১৩০ টাকায়। ৫০ টাকার নিচে দাম নেমে আসলেই পিয়াজে স্তস্তি ফিরে আসবে। তবে সে হারে পিয়াজের দাম কমছে না বলে অভিযোগ করেন তিনি। একই অভিযোগ করে আসলাম খান বলেন, বাজারে নতুন পিয়াজ এলেও হাতে গোনা কয়েক টাকা কমেছে। যে হারে বেড়েছে সে পরিমাণ কমেনি বলে অভিযোগ করেন তিনি। ক্রেতাদের অভিযোগকে পাত্তা না দিয়ে হাতিরপুল বাজারের খুচরা ব্যবসায়ী আসগর আলী বলেন, শুধু সস্তা খেতে চাইলে হবে না তো।

সবাইকে একটু লাভ করতে হবে। তাছাড়া এক পিয়াজ পাঁচবার বিক্রি হওয়ায় পিয়াজের দাম কমার প্রভাব বাজারে পড়ছে না মন্তব্য করেন এ ব্যবসায়ী। কাওরানবাজারে প্রতিকেজি চাল যে দরে বিক্রি হচ্ছে তা থেকে ১-২ টাকা বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে হাতিরপুল খুচরা বাজারে। বাজারে দেখা যায়, প্রতি কেজি ভালো মানের মিনিকেট বিক্রি হচ্ছে ৬৫-৬৬ টাকা, মধ্যম মানের মিনিকেট কেজিতে বিক্রি হচ্ছে ৬৩-৬৪ টাকা। আর বিআর-২৮ প্রতি কেজির দাম ৫২-৫৪ টাকা, মোটা লতা/স্বর্ণা চাল প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৪৪-৪৬ টাকা, নাজির শাইল প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা। এছাড়া অপরিবর্তিত দামে বিক্রি হচ্ছে অন্যান্য সব ধরনের চাল। অন্যান্য বাজারের তুলনায় হাতিরপুল বাজারের চালের দর একটু বেশি হওয়ার কারণ জানতে চাইলে এসএম রাইস এজেন্সির স্বত্বাধিকারী বলেন, কেন দাম বেশি সেটা বলতে পারবো না। তবে বেশি দামে কিনে একটু বেশি দামে বিক্রি করে থাকি। এজন্য দাম বেড়ে থাকতে পারে বলে মনে করেন তিনি। কাওরানবাজারের চেয়ে হাতিরপুল কাঁচাবাজারে সব ধরনের সবজিতে মানভেদে কেজিতে ১০-২৫ টাকা বেশি দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে।

হাতিরপুল বাজারে প্রতি পিস ফুল কপি ও বাঁধা কপি বিক্রি হয়েছে ৩৫-৪০ টাকা। অধিক বিক্রি হওয়া শীতকালীন সবজি প্রতিকেজি মুলা বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকায়। এছাড়া প্রতি কেজি শীতকালীন সবজি শিম, শসা, করলা, গাজর বিক্রি হয়েছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। বরবটি, ঝিঙ্গা, পটলের কেজিতে বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা। আর পাকা টমেটো কেজিতে ১০০ টাকা বিক্রি হলেও কাঁচা টমেটো বিক্রি হয়েছে ৫০ টাকা। প্রতি পিস লাউ ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হলেও মিষ্টি কুমড়ার দর ৭০ টাকা। আর সব ধরনের শাকের আঁটি মানভেদে বিক্রি হতে দেখা গেছে ১৫-২৫ টাকার মধ্যে। শীতকালীন হরেক রকম সবজিতে বাজার ভরে যাওয়ায় ক্রেতাদের মাঝে উৎফুল্ল ভাব দেখা গেছে। তবে হাতেগোনা কয়েকটি সবজি ছাড়া অধিকাংশ সবজির দাম কেজিতে ৫০ টাকার ওপরে বলে অভিযোগ করেন হাতিরপুলের খুচরা ক্রেতারা।

http://www.mzamin.com/article.php?mzamin=97484