২ ডিসেম্বর ২০১৭, শনিবার, ১০:০৭

চালের দাম কেজিতে বাড়ল ২-৩ টাকা

মাছ ও সবজির দামে স্বস্তি


খুচরা বাজারে ফের চালের দাম বেড়েছে। গত সপ্তাহের তুলনায় শুক্রবার কেজিতে ২-৩ টাকা বেশি দামে চাল বিক্রি হয়। তবে দাম বৃদ্ধির কারণ জানাতে পারেননি ব্যবসায়ীরা। বরাবরের মতোই তারা দোষ দিয়েছেন মিলারদের ওপর। এদিকে হঠাৎ করেই বেড়েছে আদার দাম। আগের সেই বাড়তি দামেই বিক্রি হয়েছে পেঁয়াজ। তবে শীতকালীন সবজি ও মাছের দাম রয়েছে ক্রেতাদের নাগালের মধ্যেই। রাজধানীর কাওরানবাজার, শেওড়াপাড়া বাজার ও কলমীলতা কাঁচা বাজারসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে এ চিত্র। ক্রেতাদের অভিযোগ, বাজারে সরকারের তদারকি না থাকায় এমনটি হচ্ছে।

ঢাকার বাজারে সব ধরনের চাল কেজিতে ২-৩ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) শুক্রবারের বাজার দরের তালিকায় চালের দাম বৃদ্ধির কোনো তথ্য দেয়া হয়নি। সংস্থাটি দাবি করেছে গত সপ্তাহে যে দাম ছিল সেই দামেই বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু বাজার ঘুরে দাম বাড়ার চিত্র চোখে পড়ে। মিনিকেট বিক্রি হয়েছে ৫৯-৭০ টাকা কেজি, বিআর-২৮ বিক্রি হয়েছে ৫০-৫৩ টাকায়, পারিজাত বিক্রি হয় ৪৪-৪৫ টাকা কেজি, নাজিরশাইল ৬৪-৭২ টাকা কেজি, জিরাশাইল ৫৭ টাকা কেজি এবং ভারতীয় স্বর্ণা ৪২-৪৪ টাকার মধ্যে। কাওরানবাজারের চাল ব্যবসায়ী আবু রায়হান বলেন, ‘নতুন ধান কাটা হয়েছে। কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ নেই। তারপরও কেন চালের দাম বাড়ছে? এজন্য মিলাররাই দায়ী। তারা যেভাবে দাম নির্ধারণ করেন সে দামেই বিক্রি করতে হয়।’
অপর ব্যবসায়ী বাচ্চু মিয়া বলেন, ‘মিলাররা বলছেন ধানের দাম বেশি তাই চালের দামও বেড়েছে। এক্ষেত্রে খুচরা ব্যবসায়ীদের কিছুই করার নেই।’
হঠাৎ করেই বেড়েছে আদার দাম। শুক্রবার প্রতি কেজি আদা বিক্রি হয়েছে ১৩০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ১১০ টাকা। এক্ষেত্রে কেজিতে বেড়েছে ২০ টাকা। টিসিবির হিসাব অনুযায়ী আদার দাম কমেছে। সংস্থাটি দাবি করেছে, শুক্রবার মান ভেদে আদা বিক্রি হয়েছে ৭০ টাকা থেকে ১৩০ টাকা কেজিতে, যা গত সপ্তাহে ছিল ৮০-১৪০ টাকা।

শেওড়াপাড়া বাজারের ক্রেতা মো. সাদেক হোসেন বলেন, ‘বাজারে প্রত্যেক সপ্তাহে কোনো না কোনো জিনিসের দাম বৃদ্ধি পায়। এটি কোনোভাবেই রোধ করা যাচ্ছে না। ব্যবসায়ীরা তাদের ইচ্ছে মতোই দাম বাড়াচ্ছেন। আমরা সাধারণ মানুষ অসহায়।’
এদিন বাড়তি দামেই বিক্রি হয়েছে পেঁয়াজ। অর্থাৎ দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৯০ টাকা কেজি এবং আমদানি করা পেঁয়াজ ৮০ টাকা। রসুন বিক্রি হয়েছে আমদানি করা ও দেশি দুটোই ৮০ টাকা কেজি দরে।
এদিকে শীতকালীন সবজির দামে নিন্মমুখী প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে। অধিকাংশ সবজির দামই ৪০ টাকা কেজির মধ্যেই। শুক্রবার পুরাতন আলু বিক্রি হয়েছে ২০ টাকা কেজি এবং নতুন ৪৫ টাকা কেজি দরে।

চিচিঙ্গা ৩৫ টাকা, মুলা ৩০ টাকা, বেগুন মান ও জাত ভেদে ৪০-৫০ টাকা, টমেটো (কাঁচা) ৪০ টাকা এবং আমদানি করাটা ১১০ টাকা। এছাড়া বরবটি ৬০ টাকা, করলা ৪০ টাকা, কচুমুখী ৩০ টাকা, সিম ৪০ টাকা, ফুলকপি ২৫ টাকা পিচ, বাঁধাকপি ৩০ টাকা, শশা ৪৫ টাকা, পটল ৪০ টাকা, ধনেপাতা ৪০ টাকা কেজি, পেপে ২০ টাকা, ওলকপি ৪০ টাকা এবং কাঁচামরিচ ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।
বাজারে মাছের দাম কমেছে। ইলিশ মাছ কেজিতে কমেছে প্রায় ১০০-২০০ টাকা। এক কেজি ওজনের এক জোড়া বিক্রি হয়েছে ২৬শ’ টাকা, ৮০০ গ্রাম ওজনের এক জোড়া ইলিশ ১৭শ’ টাকা, ৬০০ গ্রাম ওজনের এক জোড়া ইলিশ ১১শ’ টাকা, ৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের জোড়া ৭শ’ টাকা, অন্যান্য মাছের দাম ছিল ক্রেতাদের হাতের নাগালেই। রুই ও কাতলা বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ২০০-২৮০ টাকা। চিংড়ি মাছ বিক্রি হয়েছে (বড় আকারে) প্রতি কেজি ৭৫০ টাকা, মাঝারি আকারের ৬শ’ টাকা এবং ছোট আকারের ৪শ’ টাকা কেজি দরে। তেলাপিয়া প্রতি কেজি ১০০ টাকা, সিলভার কাপ ৮০ টাকা, পাবদা ২৫০-৩০০ টাকা, পাঙ্গাস ৮০ টাকা, নলা ১০০ টাকা, সরপুঁটি ১০০ টাকা, গ্রাসকাপ ১২০ টাকা এবং কই মাছ ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। মাছ ব্যবসায়ীরা বলছেন, শীতের সবজির দাম কম হওয়ায় মানুষ প্রচুর সবজি খাচ্ছেন। তাই মাছের চাহিদা কম।

ছুটির দিনে বাজারে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে ১২০ টাকা কেজি দরে। এছাড়া লাল লেয়ার প্রতি কেজি ১৬০ টাকা, সাদা লেয়ার ১৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। এছাড়া গরুর মাংস আগের দামেই অর্থাৎ ৪৮০ টাকা কেজি এবং খাসির মাংস ৭৫০ টাকা এবং বকরির মাংস ৬৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে। এছাড়া সয়াবিন তেল, চিনি ও ডালসহ অন্যান্য নিত্যপণ্যের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

 

https://www.jugantor.com/last-page/2017/12/02/176428