২৯ নভেম্বর ২০১৭, বুধবার, ১০:৩৬

স্বদেশে ফিরতে রোহিঙ্গাদের ৬ মানবিক দাবি

বাংলাদেশ মিয়ানমার সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের পর থেকেই নানা জল্পনা কল্পনা চলছে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে। দেখা দিয়েছে আশ্রয়প্রাথীদের মাঝে নানা উদ্বেগ ও উৎকন্ঠা। এনিয়ে শরণার্থী শিবিরে নানা গুজবের ডালপালা গজালেও সেখানে ছয় দফা দাবি সম্বলিত একটি ব্যানার লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
গত বৃহস্পতিবার বার্মার রাজধানী নেপিদোতে রোহিঙ্গাদেরকে স্বদেশে ফেরত পাঠাতে বাংলাদেশ-বার্মা একটি সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করে। রোহিঙ্গাদের দাবি, উক্ত স্মারকটি মূলত বার্মা সরকারের চাহিদার সম্পূর্ণ একটি প্রতিলিপি।
এ সমঝোতা স্বাক্ষরের পরে শরণার্থী ক্যাম্পে অবস্থিত রোহিঙ্গারা উক্ত ছয়টি মানবিক দাবি সম্বলিত ব্যানার টানিয়েছে।
দাবি সমূহ হচ্ছেঃ
১। নাগরিকত্ব প্রদান ২। বার্মায় জাতিসংঘ নিরাপত্তা এবং শান্তিরক্ষী বাহিনী প্রেরণ ৩। রোহিঙ্গা নিধনে ও সহিংসতায় জড়িত দায়ী ব্যাক্তিদের সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদান ৪। মানবাধিকার রক্ষা করা ৫। সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্তদের সম্পত্তির ক্ষতিপূরণ ৬। নিজগৃহে ফেরার সুযোগ দেয়া।
এসব দাবি পূরণ না হলে স্বদেশে ফেরত যাওয়া আত্মঘাতী হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশে বিভিন্ন শরনার্থী ক্যাম্পে অবস্থিত রোহিঙ্গারা। তারা এসব দাবি পূরণের জন্য বাংলাদেশ সরকার, জাতিসংঘ, ওআইসি, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং মুসলিম বিশ্বের প্রতি আহ্বান জানান যে তারা যেন বার্মার প্রতি চাপ অব্যাহত রাখে এবং তাদের এসব অধিকার আদায়ে সর্বোচ্চ শক্তি প্রয়োগ করে।

হামিদ নামের এক রোহিঙ্গা বলেন, বার্মা সরকার আমাদের নিয়ে গিয়ে আবারো আগের মত অত্যাচার নির্যাতন শুরু করবে। তাদের মুখের কথা আর কাজের সাথে কোন ধরনের মিল নেই। মো. রফিক নামের অন্য এক রোহিঙ্গা বলেন, নিরাপত্তা না পেলে আমরা আরাকানে কিভাবে ফিরে যাবো। আমরা আমাদের আর কোন মা-বোনের ইজ্জত হারাতে চাইনা। বাপ-ভাই হারাতে চাইনা। আমাদের দাবিগুলো মৌলিক দাবি। এটি যেকোন দেশের নাগরিকরাই চাইবে। এসব দাবি পূরণ হলে আমরা এমনিতেই দেশে ফেরত যাবো। আমরাও চাইনা এখানে এভাবে শরনার্থী হিসেবে থাকতে। এখানে রয়েছি শুধুমাত্র প্রাণরক্ষার জন্যে।

এদিকে বার্মা সরকার বৈশ্বিক চাপের মুখে তড়িঘড়ি করে বাংলাদেশের সাথে সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করে। তারা মুখে বললেও আরাকানে এখনো সেনাবাহিনী তাদের নির্যাতন বন্ধ করেনি। দুদেশের মধ্যে সমঝোতা স্বাক্ষর হবার পরও দলে দলে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে পাড়ি জমাতে দেখা যাচ্ছে।

http://www.dailysangram.com/post/309461