২৮ নভেম্বর ২০১৭, মঙ্গলবার, ১০:২২

শিক্ষা ক্যাডারের আন্দোলনে ক্ষুব্ধ মন্ত্রণালয়

প্রত্যেক উপজেলায় জাতীয়করণ হওয়া বেসরকারি কলেজের শিক্ষকদের ক্যাডার পদে অন্তর্ভুক্তি ইস্যুতে আন্দোলনে থাকা বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের ওপর ক্ষুব্ধ হয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনা অমান্য করায় এ ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তারা। এরই বহিঃপ্রকাশ ঘটে গত রোববার শিক্ষা ক্যাডারে সমন্বিত পদ সৃষ্টির গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে। পূর্ব নির্ধারিত বৈঠক অনেকটা ভেস্তে যায় উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, জাতীয়করণ হওয়া শিক্ষকদের ক্যাডার মর্যাদা দেয়ার পক্ষে-বিপক্ষে দুই ধরনের মত এসেছে। এই জটিলতা নিরসন করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব অরুণা বিশ্বাসের নেতৃত্বে একটি কমিটি কাজ করছে।

কমিটিকে স্পষ্ট বলা হয়েছে, বিধি করার পর জাতীয়করণ কলেজগুলো সরকারি আদেশ (জিও) করতে। ওই বিধিতে যেন দুই পক্ষের স্বার্থ সংরক্ষিত থাকে সে ব্যাপারে বলা হয়েছে। কোনো পক্ষই ক্ষতিগ্রস্ত না হয় এমন বিষয়গুলো নিয়ে কমিটি একাধিক বৈঠক করে একটি প্রস্তাবিত খসড়া তৈরি করছে। ওই খসড়া শিগগিরই প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসনের জন্য পাঠানো হবে বলে জানা গেছে। এ অবস্থায়
শিক্ষক সমিতির নেতারা মহাসমাবেশ করে দুইদিনের কর্মবিরতির মতো কর্মসূচিতে যাওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়েছে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ ও শিক্ষা সচিব সোহরাব হোসাইন। রোববার শিক্ষা প্রশাসনের নতুন পদ সৃষ্টির গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে শিক্ষা সচিব ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে বের হয়ে যান। বৈঠকে ঢুকেই সচিব বলেন, কোনো পদ সৃষ্টি হবে না। যারা রাস্তায় আন্দোলন করে তারা রাস্তায় সমাধান করুক। তবে বিসিএস শিক্ষা সমিতির নেতারা বলছেন, একটি বিধি করতে কতদিন লাগবে? এর আগে জাতীয়করণ হওয়া ৪৩ কলেজ ও ১২ মডেল কলেজের শিক্ষকদের ক্যাডার মর্যাদা দিয়ে আত্তীকরণ করা হয়েছে। একই পন্থায় ২৮৩ কলেজের জিও হয়ে যেতে পারে। এ ব্যাপারে বিসিএস শিক্ষা সমিতির সভাপতি প্রফেসর আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার মানবজমিনকে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন ও জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ এর আলোকে জাতীয়করণ শিক্ষকদের ‘ক্যাডার বহির্ভূত’ রেখে একটি বিধিমালা জারির দাবি করছি। এ দাবিতে প্রায় এক বছর ধরে আন্দোলন করেছি। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে কোনো আশ্বাস দেয়া হয়নি। এরমধ্যে বিধি জারি হলে আমরা এই শঙ্কায় থাকতাম না। তাই যত দ্রুত বিধি হবে ততই দ্রুত সমাধান। বিধির আগে জিও করলে আরো কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো।

গত শুক্রবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মহাসমাবেশ করে বিসিএস শিক্ষা সমিতি। এই কর্মসূচি না করলে বৃহস্পতিবার দুপুরে সমিতিকে অনুরোধ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সমিতির পক্ষ থেকে জানানো হয়, শিক্ষকরা ইতিমধ্যে ঢাকায় চলে এসেছেন। এই অবস্থায় কর্মসূচি স্থগিত বা বাতিল করার সুযোগ নেই। আর কর্মবিরতির কর্মসূচি আসে ওই সমাবেশ থেকে। অন্যদিকে দুইদিনের কর্মবিরতি গতকাল শেষ হয়েছে। দাবি আদায় না হলে আগামী ৬, ৭ এবং ৮ই জানুয়ারি তিনদিনের কর্মবিরতি ঘোষণা দিয়েছে সমিতি। শিক্ষকদের কর্মসূচির কারণে গতকাল সারা দেশের সরকারি কলেজের সব ধরনের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ ছিল। তবে সমিতির নেতারা বলছেন, সরকার দাবি মেনে নিলে কর্মবিরতির ক্ষতি প্রয়োজনে ছুটির দিনে ক্লাস নিয়ে পুষিয়ে দেয়া হবে।

http://www.mzamin.com/article.php?mzamin=93954