২২ আগস্ট ২০২৩, মঙ্গলবার, ৭:১৭

ডেঙ্গু আক্রান্তে আগের বছরের সব রেকর্ড ভাঙল

ডেঙ্গুর পুরনো সব রেকর্ড ভেঙে গেল। এর আগে ২০১৯ সালে সর্বোচ্চসংখ্যক মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিল। চলতি বছর গতকাল এই রেকর্ড ভেঙে গেল। ২০১৯ সালে দেশে মোট এক লাখ এক হাজার ৩৫৪ জন মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছিলেন এবং ২০১৯ সালে ডেঙ্গুতে মারা যায় ১৭৯ জন। চলতি বছর গতকাল সোমবার সকালেই আগের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত দাঁড়ায় এক লাখ দুই হাজার ১৯১ জন। এ দিকে দৈনিক হিসাবে গতকাল সারা দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে দুই হাজার ১৯৭ জন এবং পুরনো ডেঙ্গু রোগীদের মধ্যে থেকে গতকাল সকাল পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ৯ জনের। ডেঙ্গু জীবাণুবাহী এডিস মশা শুধু ঢাকায় নয়, সারা দেশে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে অপ্রতিহত গতিতে। স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের কোনো তৎপরতাই এডিস মশাকে নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না বলে ঢাকাবাসীই অভিযোগ করছেন। ফগিং মেশিনে যে প্রচলিত কীটনাশক ব্যবহার করা হচ্ছে, তাতে মশাকে নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। আবার নতুন করে বিটিআই প্রয়োগ করা হয়েছে সেখানে শুরুতেই বিতর্ক তৈরি হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে যে, নকল বিটিআই সরবরাহ করা হয়েছে এবং সিটি করপোরেশন- সেটাই প্রয়োগ করছে লার্ভা ধ্বংসে।

এ দিকে চলতি ডেঙ্গু সংক্রমণ ইতোমধ্যেই প্যান্ডেমিকে পর্যায়ে চলে গেছে। দৈনিক দুই হাজারের বেশি মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে সারা দেশে। ডেঙ্গু রোগীদের কমপক্ষে প্রতিদিন ৯ জন করে মারা যাচ্ছে সারা দেশে। গতকাল যে ৯ জন মারা গেছে এর মধ্যে ঢাকা শহরে ছয়জন এবং ঢাকার বাইরে অন্যান্য স্থানে তিনজন রয়েছে।

গতকাল দেশে দুই হাজার ১৯৭ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে এর মধ্যে ঢাকায় ৮৭২ জন এবং ঢাকার বাইরে এক হাজার ৩২৫ জন। ঢাকার বাইরে ধীরে ধীরে ডেঙ্গু বাড়ছে, যািদও এককভাবে ঢাকায় সবচেয়ে বেশি। গত সপ্তাহ থেকেই সম্মিলিতভাবে ঢাকার বাইরে ডেঙ্গু বাড়ছে, তবে ঢাকায় মৃত্যু এখনো বেশি। কারণ ঢাকার অভ্যন্তরের ডেঙ্গু আক্রান্ত এবং ঢাকার বাইরের জটিল রোগীগুলো ঢাকায় চিকিৎসা নিতে আসছে। সে কারণে ঢাকায় মৃত্যু বেশি, এটা সামনের দিনগুলোতে থাকবে বলে জানিয়েছেন ডেঙ্গু চিকিৎসকরা। সারা দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে গতকাল সাত হাজার ৬৮৬ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি ছিল।

ঢাকায় যে ৮৭২ জন রোগী গতকাল ভর্তি হয়েছে এর মধ্যে ঢাকার ২০ সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৪৭৩ জন এবং ৫৬ বেসরকারি হাসপাতালে ৩৯৯ জন। ভর্তির দিকে থেকে গতকালও মুগদা হাসপাতালে সর্বোচ্চ ৭৭ জন রোগী ভর্তি হয়েছে। এরপরই ছিল মিটফোর্ড হাসপাতালে ৬৭ জন। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৬০ জন। মুগদা হাসপাতালে গতকাল মোট ডেঙ্গু রোগী ছিল ৩৬৬ জন, মিটফোর্ড হাসপাতালে ছিল ২১১ জন, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি ছিল ৩৩৯ জন। এককভাবে মহাখালীর ডিএনসিসি হাসপাতালে ডেঙ্গুর জন্য সবচেয়ে সবচেয়ে বেশি সিট আছে; কিন্তু সেখানে গতকাল ভর্তি হয়েছে ৬৬ জন এবং গতকাল পর্যন্ত চিকিৎসাধীন ছিল ২২৯ জন।

https://www.dailynayadiganta.com/first-page/771633