১ আগস্ট ২০২৩, মঙ্গলবার, ৩:৩৬

জুলাইয়ে রাজনৈতিক সহিংসতার শিকার ৭৬৯ জন ॥ নিহত ৪..এমএসএফ

জুলাই মাসে দেশে রাজনৈতিক সহিংসতার শিকার হয়েছেন ৭৬৯ জন। এর মধ্যে নিহত হয়েছেন চারজন। আহত হয়েছেন ৭৬৫ জন। মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের (এমএসএফ) দেওয়া জুলাই মাসের মানবাধিকার প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। গতকাল সোমবার এমএসএফ এ প্রতিবেদন গণমাধ্যমে পাঠিয়েছে। বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে এমএসএফ এ মানবাধিকার প্রতিবেদন তৈরি করে।

মানবাধিকার সংগঠনটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক অঙ্গনে সরকারদলীয় ও বিরোধী দলের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড ও কর্মসূচি বাস্তবায়নে সহিংসতা, হানাহানি ও হতাহতের ঘটনায় নাগরিক জীবনে উৎকণ্ঠা বেড়েছে।
জুলাই মাসে রাজনৈতিক সহিংসতায় আহত ব্যক্তিদের মধ্যে ১০৯ জন গুলীবিদ্ধ হয়েছেন বলে এমএসএফের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। আর নিহত চারজনের মধ্যে পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষে নিহত ব্যক্তি কৃষক দলের কর্মী এবং তিনজন যুবলীগের কর্মী।

বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত ও এমএসএফের সংগ্রহ করা তথ্য অনুযায়ী, এ মাসে রাজনৈতিক, নির্বাচনী সহিংসতা ও সভা-সমাবেশে বাধার ৪৬টি ঘটনায় বিএনপির বিরুদ্ধে ৪১টি রাজনৈতিক মামলা হয়েছে। এসব মামলায় ১২ হাজার ৭০২ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এসব ব্যক্তির মধ্যে ২ হাজার ১৭৪ জন বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী। ১১৯ জনের রাজনৈতিক পরিচয় পাওয়া যায়নি। এ মামলাগুলোতে অজ্ঞাতনামা আসামী করা হয়েছে ১০ হাজার ৫২৮ জনকে। এ মাসে ৪১টি রাজনৈতিক মামলার মধ্যে ৩৭টি বিএনপির বিরুদ্ধে; ২টি বাংলাদেশ জামায়েত ইসলামীর বিরুদ্ধে; ২টি মামলা করা হয়েছে বিএনপি ও বাংলদেশ জামায়েত ইসলামীর বিরুদ্ধে যুক্তভাবে। মামলাগুলোর মধ্যে পুলিশ ৩৩টি, আওয়ামী লীগ ৫টি, আইনজীবী ২টি এবং সরকারি বাঙলা কলেজের অফিস সহকারী করেছেন বিএনপির বিরুদ্ধে ১টি মামলা।

জুলাই মাসে ৪১টি রাজনৈতিক মামলায় মোট ১ হাজার ৩৬৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ১ হাজার ১০৭ জন বিএনপির, ৯১ জন জামায়েত ইসলামীর কর্মী। আর ৩ যুবক যাঁরা ঢাকায় যাচ্ছিলেন স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য বিদেশ যাবেন বলে এবং ১৬৩ জনের কোনো রাজনৈতিক পরিচয় পাওয়া যায়নি।

এমএসএফের প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘ক্ষমতাসীন দলের সংঘাত-হিংস্রতা নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নির্বিকার ভূমিকার বিপরীতে বিরোধী দলের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণে অতি উৎসাহী অপতৎপরতা লক্ষ করা যায়। এতে করে সুষ্ঠু রাজনীতি করার অধিকার থেকে জনগণ বঞ্চিত হচ্ছে এবং ক্রমাগত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর জনগণের আস্থা কমছে।’

এমএসএফের প্রতিবেদনে বলা হয়, জুলাই মাসে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের পাঁচটি মামলায় পাঁচজন গ্রেপ্তার হয়েছেন। গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে একজন বিএনপির কর্মী এবং একজন সাধারণ যুবক রয়েছেন। এসব ব্যক্তির বিরুদ্ধে ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রীকে কটূক্তির অভিযোগ রয়েছে। অপর তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে প্রতারণার অভিযোগে। এ মাসে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সাভার থানায় দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। জুন মাসে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের সাতটি মামলায় দুজন গ্রেপ্তার হয়েছেন।

https://dailysangram.info/post/531443