২৯ জুলাই ২০২৩, শনিবার, ৮:৩৭

ডেঙ্গুতে ১৫০৩ জন আক্রান্ত মৃত্যু ৪

ছুটির দিনেও ডেঙ্গু পরীক্ষায় দেশে এক হাজার ৫০৩ জন আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত এবং চারজনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শুক্রবার স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অ্যান্ড অপারেশন সেন্টার জানিয়েছে, সারা দেশে গতকালও ৮ হাজার ৬৭৬ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন আছে সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে। সারা দেশে এত বেশি মানুষ প্রতিদিন ডেঙ্গু ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে যে, সবাইকে হাসপাতালে জায়গা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। ফলে সাধারণ ডেঙ্গু আক্রান্তকে হাসপাতালে ভর্তি করতে কর্তৃপক্ষ থেকে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। ফলে দৈনিক ডেঙ্গু আক্রান্ত সবার তথ্য স্বাস্থ্য অধিদফতরের তালিকায় উঠে আসছে না।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অ্যান্ড অপারেশন সেন্টার জানিয়েছে, গতকাল ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে যে এক হাজার ৫০৩ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে এদের ৯০৭ জনই রাজধানীর বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে এবং ঢাকার বাইরের হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়েছে ৫৯৬ জন। যে চারজনের মৃত্যু হয়েছে তাদের মধ্যে ঢাকায় দুইজন এবং ঢাকার বাইরে দুইজন। এটা নিয়ে গতকাল পর্যন্ত জুলাই মাসের ২৮ দিনে (প্রকৃতপক্ষে গতকাল শুক্রবার সকাল ৮টা পর্যন্ত) দেশে ৩৬ হাজার ২২৭ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে একই সময়ে এবং ডেঙ্গুতে মৃত্যুবরণ করেছে ১৮২ জন। এ বছর জানুয়ারি থেকে গতকাল পর্যন্ত দেশে ৪৪ হাজার ২০৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে রোগটিতে। এই হিসাব অনুযায়ী জুলাই মাসে দৈনিক এক হাজার ৩৯৪ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে এবং দৈনিক ছয়জনের বেশি (প্রকৃতপক্ষে ৬.৫ জন) মৃত্যুবরণ করেছে।

জনস্বাস্থ্যবিদরা বলছেন, যথাযথ ব্যবস্থা নিতে পারলে মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা আরো কমিয়ে রাখা যেত। কোভিডের সময় যেভাবে গুরুত্ব দেয়া হতো ডেঙ্গুর এ বিপর্যস্ত অবস্থায় সে রকম গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে না। সরকারিভাবেই রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি হতে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে পর্যাপ্ত বেড নেই বলে। ফলে রোগীরা যখন হাসপাতালে ভর্তি হতে আসে তাদের বেশির ভাগের হেমোরেজিক নিয়ে আসে এবং রোগীরা শক সিনড্রোমে মারা যায়। জনস্বাস্থ্যবিদরা বলছেন, ডেঙ্গু আক্রান্ত কখন যে হাসপাতালে আসবে তা স্পষ্ট করে বলে দেয়া হচ্ছে না। সাধারণত ঢাকার নিম্ন আয়ের লোকজনই বেশি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছে। মৃত্যু তাদের মধ্যেই বেশি। কারণ এ লোকজন এমন পরিবেশে বাস করে এবং এমন পরিবেশে কাজ করে যেখানে মশার কামড় থেকে বেঁচে থাকার কোনো উপায় থাকে না। মুগদা হাসপাতালে ডেঙ্গু ওয়ার্ডে কর্মরত একজন চিকিৎসক এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘সিটি করপোরেশন এত টাকা খরচ করে মশক নিধনে (প্রকৃতপক্ষে নিষ্ফল কার্যক্রম), তারা ঢাকা সিটির নিম্ন আয়ের মানুষের প্রতিটি পরিবারকে পর্যাপ্ত মশারি সরবরাহ করলেও মানুষ রাতে আরামে ঘুমাতে পারত এবং ডেঙ্গু সংক্রমণ থেকে বেঁচে থাকতে পারত।’ তিনি বলেন, এখনো সময় আছে মশক নিধনে এসব কার্যকর কীটনাশকের পেছনে ব্যয় না করে সবাইকে মশারি দিয়ে দেয়া হোক।

এ ছাড়াও বিএমএর একটি সেমিনারে এই মশারি দেয়ার সুপারিশ করেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ডা: মো: শারফুদ্দিন আহমেদ। তিনি অবশ্য ঢাকার শহরের ফুটপাথে যারা ঘুমায় তাদের সবাইকে মশারি সরবরাহের সুপারিশ করেছিলেন।


https://www.dailynayadiganta.com/first-page/765855/