২৫ জুন ২০২৩, রবিবার, ৯:২৬

ই-সিগারেটে ক্যান্সারসহ ভয়াবহ রোগের ঝুঁকি বাড়ছে

বাংলাদেশে ই-সিগারেটের বাজার ও ব্যবহার ঝড়ের গতিতে বাড়ছে। তামাক কোম্পানিগুলোর বিভিন্ন অপপ্রচার ও কৌশলী ভূমিকার কারণে অনেক তরুণ-তরুণী জনস্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর নতুন এই তামাক পণ্যের প্রতি আসক্ত হচ্ছে। ফলে টিন, নিকেল, ক্যাডিয়াম, লেড, মার্কারিসহ বিভিন্ন বিষাক্ত উপাদান সম্বলিত ই-সিগারেট বাংলাদেশে বর্তমানে জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এতে দেশে ক্যান্সার, হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, স্ট্রোকসহ নানা রোগের ঝুঁকি বাড়ছে ভয়াবহভাবে।

তামাকবিরোধী কর্মী, তামাক নিয়ন্ত্রণ গবেষক এবং জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এমতাবস্থায় যথাযথ আইনের অনুপস্থিতি এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রয়োজনীয় মনিটরিংয়ের অভাবে ই-সিগারেট দেশের তরুণ-তরুণীদের জন্য সর্বনাশা হয়ে উঠছে। রাজধানীর বনানীর প্লাটিনাম গ্র্যান্ড হোটেলে আয়োজিত ‘ই-সিগারেটের আসক্তি ও স্বাস্থ্যক্ষতি : জনস্বাস্থ্য রক্ষায় উপায়’ শীর্ষক একটি আলোচনা সভায় তারা এ অভিমত ব্যক্ত করেন। ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির টোব্যাকো কন্ট্রোল অ্যান্ড রিসার্চ সেল (টিসিআরসি), ইন্টার প্রেস নেটওয়ার্ক (আইপিএন) এবং ইনিশিয়েটিভ ফর পাবলিক হেলথ রিসার্চ অ্যান্ড কমিউনিকেশনের (আইপিএইচআরসি) যৌথ আয়োজনে গতকাল এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে টিসিআরসির প্রকল্প ব্যবস্থাপক ফারহানা জামান লিজা বলেন, বাংলাদেশে ই-সিগারেট ব্যাপক আকারে বিস্তৃত হচ্ছে। জনস্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর ই-সিগারেটের লাগাম টেনে ধরার জন্য সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি প্রয়োজন। বাংলাদেশের বিদ্যমান বিভিন্ন আইন ও বিধিবিধানের মাধ্যমে ই-সিগারেটের লাগাম টেনে ধরা সম্ভব।

টিসিআরসির সভাপতি ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী এমপির সভাপতিত্বে এবং টিসিআরসির সদস্যসচিব ও ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সহযোগী অধ্যাপক মো: বজলুর রহমানের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক ডা: গোলাম মহিউদ্দীন ফারুক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ও বাংলাদেশ টোব্যাকো পলিসি নেটওয়ার্কের আহ্বায়ক ড. রোমানা হক, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব হেলথ সাইসেন্সের পাবলিক হেলথ অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো: আনোয়ার হোসাইন, একাত্তর টিভির বিশেষ প্রতিনিধি ও আইপিএইচআরসির নির্বাহী পরিচালক সুশান্ত সিনহা, তামাক নিয়ন্ত্রণ গবেষক ও আইপিএনের নির্বাহী পরিচালক এহসানুল হক জসীম। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব হেলথ সাইসেন্সের শিক্ষক পলাশ চন্দ্র ভৌমিক, ইন্টার প্রেস নেটওয়ার্কের (আইপিএন) পরিচালক কেফায়েত উল্লাহ চৌধুরী (শাকিল), নাটাবের খলিল উল্লাহ, সিএলপিএ ট্রাস্টের কামরুন্নিসা মুন্না প্রমুখ।

সভাপতির বক্তব্যে ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, ই-সিগারেট বন্ধে এখনই কঠোর আইন প্রণয়ন ও প্রচলিত আইনের কঠোর প্রয়োগ জরুরি। এর বিরুদ্ধে সচেতনতা গড়ে তোলার জন্য তিনি উদাত্ত আহ্বান জানান। অধ্যাপক ডা: গোলাম মহিউদ্দীন ফারুক তার বক্তব্যে ই-সিগারেটের নানা ক্ষতিকর দিক তুলে ধরে বলেন, এর বিরুদ্ধে আমাদের সবাইকে সোচ্চার হতে হবে। অধ্যাপক ড. রোমানা হক বলেন, ই-সিগারেটের ব্যবহার বৃদ্ধির ফলে জনস্বাস্থ্যের পাশাপাশি অর্থনৈতিক ক্ষতিও সাধিত হচ্ছে বলে মনে করেন এই অর্থনীতিবিদ। অধ্যাপক ড. মো: আনোয়ার হোসাইন বলেন, ই-সিগারেটের কারণে ক্যান্সার, হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, স্ট্রোকসহ নানা ভয়াবহ রোগের ঝুঁকি বাড়ছে। এতে অন্যান্যের মধ্যে মো: বজলুর রহমান, সুশান্ত সিনহা, হক জসীম, ফারহানা জামান লিজা প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

https://www.dailynayadiganta.com/last-page/758005