২৫ জুন ২০২৩, রবিবার, ৯:০১

সেন্ট মার্টিন দ্বীপ ও গ্যাসসহ স্পর্শকাতর বিষয় রাজনীতির ইস্যু হওয়া উচিত নয়

-আসিফ আরসালান


আমি গত দুই মাস আগে থেকেই বলে আসছি যে নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসবে ততই বাংলাদেশের রাজনীতির মাঠে অনেক নতুন নতুন কথা শোনা যাবে। ২০২৪ সালের ২৯ জানুয়ারি বর্তমান সংসদের ৫ বছরের মেয়াদ পূর্ণ হবে। তাই বর্তমান সংবিধান অনুয়ায়ী আগামী ২৯ অক্টোবর থেকে আগামী বছরের ২৯ জানুয়ারি - এই তিন মাসের মধ্যে যে কোনো দিন নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে হবে। এটি বর্তমান শাসনতন্ত্রের বাধ্যবাধকতা। অবশ্য বিএনপিসহ মাঠের সমস্ত বিরোধী দল শাসনতন্ত্রের এই অনুচ্ছেদটি মানে না। কারণ শাসনতন্ত্রের এই বিধান পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে করা হয়েছে। গত ২১ জুন তারিখে ‘সিজন-সিক্স’ নামক হোটেলে বিএনপি একটি সিম্পোজিয়ামের আয়োজন করে। ঐ সিম্পোজিয়ামে যে Key Note পেপার পড়া হয় তার শিরোনাম ছিল, ‘পঞ্চদশ সংবিধানের সাংবিধানিকতা’। শিরোনামের সাব হেডিং ছিল, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার এখনও বহাল আছে’। ৬ পৃষ্ঠার অনেক সাংবিধানিক তথ্য সমৃদ্ধ এই প্রবন্ধে প্রমাণ করা হয়েছে যে পঞ্চম সংশোধনী অবৈধ। এটি সংবিধানের মূল স্পিরিটের সাথে সাংঘর্ষিক। পঞ্চদশ সংশোধনী অবৈধ হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই ত্রয়োদশ সংশোধানী অর্থাৎ কেয়ারটেকার ব্যবস্থা পুনরুজ্জীবিত হয়। এই Key Note পেপারটির একটি কপি আমার হস্তগত হয়েছে। প্রয়োজন হলে এ সম্পর্কে আমি আবার লিখবো।

যাই হোক, এটি বিএনপি এবং সম্মিলিত বিরোধী দল সমূহের লেটেস্ট স্ট্যান্ড। সকলেই জানেন যে আওয়ামী লীগ সরকার কোনো অবস্থাতেই বিএনপির এই দাবি অর্থাৎ নিরপেক্ষ বা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন তারা মানবে না। এক্ষেত্রে সেমিনার সিম্পোজিয়াম করে কোনো লাভ নাই। মাঠে নেমে তাদেরকে সেই দাবি আদায় করতে হবে।

যে কথা বলছিলাম। নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসবে ততই নিত্যনতুন চাঞ্চল্যকর কথা শোনা যাবে। তেমনি দুইটি কথা সম্প্রতি শোনা গিয়েছে। একটি হলো বাংলাদেশের ওপর মার্কিন চাপ কমানোর জন্য বাংলাদেশ ভারতের দ্বারস্থ হয়েছে। ২০২১ সালের ১০ ডিসেম্বর আমেরিকা যখন ৭ জন অফিসারসহ প্রতিষ্ঠান হিসেবে র‌্যাবের ওপর স্যাংশন আরোপ করে তখনও বাংলাদেশ এই স্যাংশন প্রত্যাহার করার জন্য ভারতের দুয়ারে ধর্না দেয়। তারা ভারতকে বলেছিল যে স্যাংশন প্রত্যাহার করার জন্য ভারত যেন আমেরিকার কাছে সুপারিশ করে। ভারত আমেরিকার কাছে সুপারিশ করেছিল কিনা জানা যায়নি। কিন্তু তারপর দেড় বছর অতিক্রান্ত হয়েছে। স্যাংশন প্রত্যাহার করা হয়নি।

এরপর চলতি বছরের ৩ মে আমেরিকা বাংলাদেশ সম্পর্কে যে ভিসা নীতি জারি করে তারপর সরকার ২১ দিন পূর্ণ নীরবতা অবলম্বন করে। দেশী বা বিদেশী কোনো সংবাদপত্রে কিংবা কোনো মন্ত্রী এই বিষয়টি প্রকাশ করেননি। তখন ২৪ মে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ্যান্থনি ব্লিংকেন স্বয়ং এই ভিসা নীতি ঘোষণা করেন। একমাত্র তখনই বাংলাদেশসহ সারাবিশ্ব এই নীতির কথা জেনে যায়।

এরপর সরকার দ্বিমুখী নীতি গ্রহণ করে। পাবলিকলি তারা প্রকাশ্যে মার্কিন বিরোধী ভূমিকা নেয়। মার্কিন বিরোধী বক্তব্য প্রদান করেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থেকে শুরু করে তার অন্তত ৪ জন মন্ত্রী এবং ১৪ দলীয় জোটের রাশেদ খান মেনন এবং হাসানুল হক ইনু। প্রথমে রাশেদ খান মেনন বলেন যে এসব স্যাংশন বা ভিসা নীতি হলো ওপরে লোক দেখানো। আমেরিকার আসল উদ্দেশ্য হলো রেজিম চেঞ্জ, অর্থাৎ সরকার পরিবর্তন। তিনি আরো বলেন যে আমেরিকা আসলে বাংলাদেশের প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিন চায়। পরদিনই ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাস থেকে এক বিবৃতি জারি করে বলা হয় যে আমেরিকা বাংলাদেশের কোনো ভূ-খন্ড কখনো চায়নি।

॥ দুই ॥
কিন্তু তার পরেও এই পলিটিক্যাল প্রোপাগান্ডা থেমে থাকেনি। এবার এই ব্যান্ডওয়াগনে যোগ দেন সাবেক মন্ত্রী জাসদ নেতা হাসানুল হক ইনু। তিনি বলেন যে শেখ হাসিনা বাংলাদেশের স্বার্থ সমুন্নত রেখেছেন। তাই তিনি সেন্ট মার্টিন দ্বীপ আমেরিকাকে দিতে অস্বীকার করেছেন। আর এজন্যই আমেরিকা ক্ষিপ্ত হয়ে হাসিনা সরকারকে সরাবার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে।

আমরা ভেবেছিলাম যে এই ধরনের অত্যন্ত স্পর্শকাতর বক্তব্য আপাতত এখানেই শেষ হবে। হয়তো ইলেকশনের দুই এক মাস আগে আবার এই ধরনের বক্তব্য দিয়ে মাঠ গরম করা হবে। কিন্তু আমাদের অনুমানকে মিথ্যা প্রমাণ করে এ ব্যাপারে অত্যন্ত স্পষ্ট বক্তব্য দিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি শুধুমাত্র সেন্ট মার্টিন দ্বীপের কথাই তোলেননি, আরো তুলেছেন গ্যাস বিক্রির প্রসঙ্গ। তিনি কোনোরূপ রাখঢাক ছাড়াই বলেছেন যে ২০০১ সালের নির্বাচনের আগে যখন তিনি প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তখন তার নিকট থেকে একটি বিদেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশের গ্যাস চেয়েছিল। তিনি গ্যাস দিতে রাজি হননি বলে ২০০১ এর নির্বাচনে ক্ষমতায় আসতে পারেননি। তখন বিরোধী দলে ছিল বিএনপি। বিএনপি নেতা বেগম খালেদা জিয়া ভারতকে গ্যাস দেওয়ার মুচলেকা দিয়ে ক্ষমতায় আসেন।

এরপর তিনি বলেন যে এখন একটি দেশ সেন্ট মার্টিন দ্বীপ চাচ্ছে। আমি যদি তাদেরকে সেন্ট মার্টিন দ্বীপ দেই, তাহলে তারা আমাকে ক্ষমতায় রাখবে। কিন্তু আমি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের কন্যা। আমি দেশের স্বার্থ বিরোধী কোনো কাজ করবো না। গত ২২ জুন বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় ওয়ার্কিং কমিটির মিটিংয়ে শেখ হাসিনা স্পষ্ট ভাষায় বলেন যে তার সরকারকে উৎখাতের জন্য ষড়যন্ত্র চলছে। ইংরেজি ডেইলি স্টারের ২৩ জুন শুক্রবার প্রথম পৃষ্ঠার প্রধান খবরের শিরোনাম, Conspiracies afoot to dislodge Govt./Says Hasina at ALCWC meeting. অর্থাৎ সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র চলছে। আওয়ামী লীগ ওয়ার্কিং কমিটির মিটিংয়ে শেখ হাসিনার বক্তব্য।

খবরে বলা হয়, আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা অভিযোগ করেছেন যে দেশে এবং বিদেশে তার সরকার উৎখাত এবং একটি অনির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য ষড়যন্ত্র চলছে। আওয়ামী লীগ সেন্ট্রাল ওয়ার্কিং কমিটির সূত্রে ডেইলি স্টার এই খবর জানতে পেরেছে। আগামী নির্বাচনে এই ষড়যন্ত্র বানচাল করার জন্য তিনি দৃঢ় অঙ্গীকার করেন। ওয়ার্কিং কমিটির এই জনাকীর্ণ সভায় শেখ হাসিনা বলেন যে ক্ষমতায় থাকার জন্য তিনি কখনো সেন্ট মার্টিন দ্বীপকে লিজ দেবেন না। তিনি বলেন যে সেন্ট মার্টিন লিজ দেওয়ার জন্য তার ওপর প্রচন্ড চাপ অব্যাহত রয়েছে। তিনি কোনো মুচলেকা দিয়ে ক্ষমতায় থাকতে চান না। তাই তিনি কোনো অবস্থাতেই সেন্ট মার্টিনকে বিদেশীদের কাছে লিজ দেবেন না। গণভবনে আওয়ামী লীগ সেন্ট্রাল ওয়ার্কিং কমিটির এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।

॥ তিন ॥
শেখ হাসিানার এই বক্তব্যের কঠোর প্রতিবাদ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ২২ জুন বিএনপির গুলশান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি দ্ব্যর্থহীন ভাষায় ঘোষণা করেন যে সেন্ট মার্টিন সম্পর্কিত প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য একটি পলিটিক্যাল স্টান্ড। তিনি বলেন, ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য বিএনপি সেন্ট মার্টিন দ্বীপ লিজ দেবে, এমন কথা বলে প্রধানমন্ত্রী সস্তা স্টান্ডবাজি করছেন। তিনি জানতে চান যে প্রধানমন্ত্রীর এই ধরনের বানোয়াট বক্তব্য ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের অধীনে পড়ে কিনা। মির্জা ফখরুল বলেন, এই ধরনের মিথ্যা প্রচারণা তিনি ২০০১ সালেও করেছেন। কিন্তু মিথ্যা প্রচারণায় জনগণ বিভ্রান্ত হননি। বরং শেখ হাসিনা ঐ নির্বাচনে পরাজিত হয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী বুঝতে পারছেন না যে এই ধরনের বক্তব্য কাউন্টার প্রোডাক্টিভ হতে পারে। অর্থাৎ উল্টো ফল দিতো পারে।

আমরা এ সম্পর্কে মতামত দেওয়ার আগে জেএসডি নেতা আ স ম আব্দুর রবের বক্তব্য স্মরণ করতে পারি। আ স ম আব্দুর রব এক বিবৃতিতে বলেন, এমন মারাত্মক অভিযোগ তোলার আগে প্রধানমন্ত্রীকে বলতে হবে, এই খবরের উৎস কি? এমন গুরুতর একটি বিষয় শুধু মুখ দিয়ে বললেই হবে না। এ সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য দেশবাসীকে জানাতে হবে। মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি স্পষ্ট করে বলতে চায় যে বাংলাদেশের প্রতিটি ইঞ্চি ভূমি রক্ষার জন্য বিএনপির লাখ লাখ কর্মী শেষ রক্ত বিন্দু দিতেও প্রস্তুত।

সেন্ট মার্টিন দ্বীপ সম্পর্কিত বক্তব্যটি যদি রাশেদ খান মেনন এবং হাসানুল হক ইনুর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতো তাহলে আমরা হয়তো এই বিষয়টি ওভারলুক করে যেতাম। কিন্তু অভিযোগটি যখন প্রধনমন্ত্রীর মুখ দিয়ে বের হয় তখন আর বিষয়টিকে হালকাভাবে নেওয়া যায় না। কারণ প্রধানমন্ত্রীর এই অভিযোগের পর চীনও বিষয়টিকে টেক-আপ করেছে। তবে তারা দলীয় দৃষ্টিকোণ থেকে তাদের বক্তব্য দিয়েছে। চীনের পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র বলেছেন যে আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে স্ট্যান্ড নিয়েছেন সেই স্ট্যান্ডকে চীন সম্পূর্ণ সমর্থন করে। এই ইস্যুতে চীন প্রধানমন্ত্রীর পাশে থাকবে।

যেদিন চীন এই বক্তব্য দেয় তার আগের দিন ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসের মুখপাত্র বলেন যে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বকে আমেরিকা সম্মান করে। তারা বাংলাদেশের কোনো ভূ-খন্ড কোনো দিন চায়নি। এই ধরনের নীতি আমেরিকার পররাষ্ট্রনীতিতে নাই।

সুতরাং দেখা যাচ্ছে যে সেন্ট মার্টিন ইস্যুটি আর শুধুমাত্র বাংলাদেশের পলিটিক্যাল ইস্যু নয়। তাছাড়া বিএনপি তো প্রথম থেকেই এই ইস্যুটি সরাসরি নাকচ করে দিয়েছে। এ ব্যাপারে আমাদের বক্তব্য হলো এই যে সেন্ট মার্টিন হোক আর যে এলাকাই হোক না কেন, বাংলাদেশের এক ইঞ্চি ভূমিও অন্য কারো হাতে তুলে দেওয়ার ক্ষমতা কারোর নাই। বিষয়টি অত্যন্ত স্পর্শকাতর। এমন একটি সর্বোচ্চ স্পর্শকাতর বিষয় দলীয় রাজনীতি বা ক্ষমতার রাজনীতির কোনো ইস্যু হতে পারে না।

এখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন জড়িত। বাংলাদেশে কোনো দলকে ক্ষমতায় বসানো বা ক্ষমতা থেকে সরানোর মালিক কে? যদি ভারতকে শেখ হাসিনার বক্তব্য মতে গ্যাস দেওয়া হতো তাহলে ২০০১ সালে তিনি ক্ষমতায় থাকতে পারতেন। এই কথা বলে কি এটা বোঝানো হচ্ছে না যে ক্ষমতায় থাকা আর না থাকার মালিক জনগণ নয়, মালিক হলো বিদেশী শক্তি? অনুরূপভাবে সেন্ট মার্টিন দিলে তিনি ক্ষমতায় থাকবেন, আর না দিলে তাকে ক্ষমতা থেকে হটানোর ষড়যন্ত্র হবে। এই কথা বলে কি তিনি আবার বোঝাচ্ছেন না যে ক্ষমতা থেকে হটানোর মালিক আমেরিকা? প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেন্ট মার্টিন সম্পর্কে আমেরিকার নাম উচ্চারণ করেননি। কিন্তু তার পরেও তার কথার জবাব দিয়েছে মার্কিন দূতাবাস।

একটি কথা ভুলে যাওয়া উচিত না যে সেন্ট মার্টিন দ্বীপ বা বাংলাদেশের কোনো ভূ-খন্ড বিদেশীদেরকে দেওয়া না দেওয়ার সাথে রাষ্ট্রদ্রোহিতার প্রশ্নটি জড়িত। শেখ হাসিনা ১৫ বছর ধরে ক্ষমতায় আছেন। তার হাতে যদি প্রমাণ থাকে তাহলে তিনি ঐসব প্রমাণ জনগণের কাছে পেশ করুন। ভারত হোক আর আমেরিকা হোক, কেউ যদি বাংলাদেশের এ ইঞ্চি জমির ওপরও থাবা বিস্তার করতে চায় তাহলে বাংলাদেশের ১৬ কোটি ৯৮ লক্ষ মানুষ জীবন বাজি রেখে তাদেরকে প্রতিহত করবে। তাই আমাদের দাবি, এই অভযোগের কোনো ভিত্তি থাকলে সরকার যে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেন। আর যদি এটিকে ক্ষমতায় থাকা না থাকার ব্যাপারে পলিটিক্যাল ইস্যু হিসেবে ব্যবহার করা হয় তাহলে যারা ব্যবহার করবে তারা জনগণের মন থেকে চিরদিনের জন্য মুছে যাবে।

https://dailysangram.info/post/528349