৬ জুন ২০২৩, মঙ্গলবার, ৪:০৯

যে সড়কে বিদ্যুৎ যায় না কখনো

ঢাকাসহ সারা দেশে চলছে তীব্র লোডশেডিং। ঘণ্টায় ঘণ্টায় লোডশেডিংয়ে ত্রাহি অবস্থা। এই অবস্থার ব্যতিক্রম বনানীর ১৮ নম্বর সড়ক এলাকা। এই সড়কের পাশের বাসিন্দারা ভাগ্যবানও বটে। লোডশেডিংয়ের ভোগান্তির ছিটেফোঁটাও নেই এখানে। ২৪ ঘণ্টাই নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ থাকে। এজন্য এ সড়কে অবস্থিত বাড়িগুলোর জেনারেটরও চালাতে হয় না। ইউপিএস-আইপিএসে’র প্রয়োজনও পড়ছে না কারও। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পাওয়ায় এই সড়ক এলাকার বাসিন্দারাও খুশি। কিন্তু কেন এই সড়কটি ব্যতিক্রম তা জানতে সরজমিন এলাকায় গিয়ে জানা যায় এই সড়কে অবস্থিত একটি ভবনের বাসিন্দা প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহি চৌধুরী।

এজন্য এখানে সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয় বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের ধারণা।
গতকাল দুপুরে সরজমিন ১৮ নম্বর ওই রোডে গিয়ে দেখা যায়, বনানী বিদ্যানিকেতন পার হয়ে চৌরাস্তার হাতের বামে ওই সড়ক। যানজট ও কোলাহলমুক্ত ওই রোডে মানুষের চলাচলও কম। ১৮ নম্বর রোডের ৩১ নম্বর বাড়ির নিরাপত্তা রক্ষী মার্শেল অগাস্টিন মানবজমিনকে জানান, ওই বাসাতে একজন প্রতিষ্ঠিত শিল্পপতি থাকেন। তৃতীয় তলায় তারা বসবাস করলেও বাকি তলা পারিবারিক নানা কাজে ব্যবহৃত হয়। তিনি আরও জানান, এই রোডে বিদ্যুৎ যায় না। তাদের বাসাটি সেন্ট্রাল এসির আওতায়। বিদ্যুতেই চলে। জেনারেটর চালানোর প্রয়োজন পড়ে না।

তিনি আরও জানান, এই এলাকায় কালেভদ্রে বিদ্যুৎ যায়। গেলে ১ থেকে ২ মিনিটের মধ্যে চলে আসে। তা আবার অনেক দিন পর পর। তিনি বলেন, সামনের বাসায় একজন ভিআইপি থাকেন। তার কারণে আমরা সুবিধা পাচ্ছি মনে হয়। একই সড়কের ৩২ নম্বর বাসার কেয়ারটেকার ইমাম হোসেন জানান, ‘তাদের এলাকায় বিদ্যুৎ যায় না। দিনে একবারও যায় না। তাদের জেনারেটর থাকলেও সেটি ব্যবহার হয় না।’

৩৬ নম্বর বাড়ির কেয়ারটেকার সুমন জানান, এই ১৮ নম্বর রোডে কয়েকজন ভিআইপি লোকের বসবাস। এতে লোডশেডিং নেই বললেই চলে।

৭৬ নম্বর বাড়ির একজন বাসিন্দা জানান, তাদের এলাকায় লোডশেডিং নেই। ডেসকো’র কর্মকর্তারা মাঝে মাঝে এসে লাইন ঠিক করে দিয়ে যান। ১ ঘণ্টার জন্য বিদ্যুতের লাইন মেরামত করলে সেটিও আগের দিন মাইকিং করে এসে বলে যায়।

একটি বাড়ির মালিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, তাদের বাসায় কোনো আইপিএস নেই। গত বছর একটি আইপিএস কেনা হয়েছিল। শীত আসার পর সেটি নষ্ট হয়ে গেছে। এরপর আর কেনা হয়নি। কেন আইপিএস নেই প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, বিদ্যুৎ গেলেই তো আইপিএসের প্রয়োজন হয়। যেখানে বিদ্যুৎ যায় না সেখানে আইপিএসের প্রয়োজন কিসের।

এ বিষয়ে ডেসকো’র গুলশান সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. মোস্তাফিজুর রহমান গতকাল মানবজমিনকে জানান, বনানী আমাদের অধীন এলাকা। ১৮ নম্বর রোডে কেন বিদ্যুৎ যায় না তা তিনি অবগত নন। তার অধীনে কর্মকর্তারা কীভাবে পরিকল্পনা করেছেন তিনি তা জানেন না বলে জানান।


https://mzamin.com/news.php?news=59068