১৭ মে ২০২৩, বুধবার, ২:৫৮

দিনে-রাতে লোডশেডিং

দেশে ঘণ্টায় ঘণ্টায় লোডশেডিং চলছে। অসহ্য গরমে নাভিশ্বাস জনজীবন। নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে গ্রামের মানুষ। বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড সক্ষমতার মধ্যেও দেশজুড়ে দিনে-রাতে সব সময়ই বিদ্যুৎ যাচ্ছে। গ্রামাঞ্চলে দিনে-রাতে ৬ থেকে ৭ ঘণ্টারও বেশি লোডশেডিংয়ের খবর পাওয়া গেছে। অনেক গ্রামে রাতে বিদ্যুৎ থাকেই না।

রাতের তুলনায় বিদ্যুতের চাহিদা তুলনামূলকভাবে কম থাকা সত্ত্বেও দিনের বেলায় শুধু ঢাকাতেই ৬০০ মেগাওয়াটের বেশি লোডশেডিং হয়েছে। সারা দেশে সাড়ে ৩ হাজারের উপরে বিদ্যুতের ঘাটতি রয়েছে। যেখানে চাহিদা ১৩ হাজারের মতো বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। ফলে সারা দেশের গ্রাহকরা দিনের বিভিন্ন সময়ে ৬ থেকে ৭ ঘণ্টা বিদ্যুৎ বিভ্রাটের শিকার হচ্ছেন।

পিডিবি’র কর্মকর্তারা বলেন, সন্ধ্যার পর চাহিদা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতির অবনতি হয়। বিদ্যুৎ সরবরাহের এই ভয়াবহ পরিস্থিতির জন্য গ্যাস সংকটকে দায়ী করেন।

পিডিবি যদি গ্যাসের স্বাভাবিক সরবরাহ পায় তাহলে তাদের গ্যাসচালিত প্ল্যান্ট থেকে ৬ হাজার ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাবে। কিন্তু এখন সাড়ে ৪ হাজার মেগাওয়াট উৎপাদন হচ্ছে। গ্যাসের ঘাটতির জন্য প্রায় ১ হাজার ৮৩৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে না।

ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানির (ডেসকো) ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মো. কাউসার আমীর আলী মানবজমিনকে জানান, সংস্থাটির আওতাধীন এলাকায় দিনে ২০০ থেকে ৩০০ মেগাওয়াট লোডশেডিং হচ্ছে। তাতে অনেক গ্রাহককে ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা লোডশেডিং করতে হচ্ছে। যা ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই করতে হচ্ছে। নির্দিষ্ট সময় নয়। তিনি বলেন, ডেসকো ১ হাজার ১০০ মেগাওয়াটের চাহিদার বিপরীতে প্রায় ৮০০ মেগাওয়াট পাচ্ছে। ঢাকা শহরের উত্তর, উত্তর-পশ্চিম এবং পূর্ব অংশে বিদ্যুৎ বিতরণের দায়িত্ব ডেসকোকে দেয়া হয়েছে এবং ঢাকা শহরের দক্ষিণ, দক্ষিণ-পূর্ব ও মধ্যাঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহের দায়িত্ব রয়েছে ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি

(ডিপিডিসি)।
ডিপিডিসি সূত্র বলছে, ডিপিডিসি’র আওতাধীন এলাকায় ৩০০ মেগাওয়াটের উপরে বিদ্যুৎ ঘাটতি রয়েছে। ডিপিডিসি ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াটের বেশি চাহিদা রয়েছে। তবে ভোক্তাদের অভিযোগ, তারা আরও অনেক বেশি লোডশেডিংয়ের শিকার হচ্ছেন। কিছু এলাকার মানুষ প্রতি ঘণ্টায় বিদ্যুৎ বিভ্রাটের অভিযোগ করেছে। রাজধানীর হাজারীবাগ এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, ঘন ঘন বিদ্যুৎ চলে যায়। জানা যায়, গ্রামে অর্থাৎ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) আওতাভুক্ত এলাকায় লোডশেডিং হচ্ছে গড়ে দুই হাজার মেগাওয়াটেরও বেশি। লোডশেডিংয়ে বেশি নাজুক ৬৩টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ রোববার জানিয়েছেন, দেশে বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহ পরিস্থিতির উন্নতি হতে ২ দিন সময় লাগবে। বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহে বর্তমান বিঘেœর উন্নতি হবে। কারণ ২টি এলএনজি টার্মিনালের মধ্যে ১টি ২ দিনের মধ্যে সরবরাহ পুনরায় শুরু করবে। তিনি আরও বলেন, ২টি ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল থেকে গ্যাস সরবরাহ বন্ধের পর ১টি টার্মিনাল নিরাপদ স্থানে এবং অন্যটি নিজস্ব অবস্থানে অবস্থান করছে।

https://mzamin.com/news.php?news=55833