১৭ মে ২০২৩, বুধবার, ২:৪৯

বন্ধ হয়ে গেছে ১০ হাজার স্কুল

করোনা ও করোনা-পরবর্তী সময়ে বন্ধ হয়ে গেছে ১০ হাজারের বেশি স্কুল। বেসরকারি পর্যায়ে গড়ে ওঠা এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আর্থিক সঙ্কট এবং প্রয়োজনীয় শিক্ষার্থী না পেয়েই বন্ধ হয়ে গেছে বলে দাবি করছেন মালিকরা। অনেকেই এসব স্কুলভবন বাণিজিক বা আবাসিক ভবন হিসেবে ভাড়া দিয়েছেন। তবে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে করোনায় বন্ধ হওয়া স্কুলের সংখ্যা আট হাজার। আর বন্ধ হওয়া এসব স্কুলের সবই বেসরকারি বা কিন্ডারগার্টেন।

এ দিকে সংখ্যার হিসেবে যাই হোক না কেনো গত দুই বছরে অনেক স্কুল বন্ধ হয়ে গেছে এ কথা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ নিজেই স্বীকার করেছেন। তার হিসেবে প্রাথমিক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করানো আট হাজারের বেশি বেসরকারি স্কুল বন্ধ হয়ে গেছে। এক বছর সময়ের ব্যবধানে এসব স্কুল তাদের কার্যক্রম গুটিয়ে ফেলেছে। ২০২১ সালে প্রাথমিক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করানো প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ছিল ১ লাখ ১৮ হাজার। কিন্তু ২০২২ সালে সে সংখ্যা হয়েছে ১ লাখ ১০ হাজারের কম। সম্প্রতি অ্যানুয়াল প্রাইমারি এডুকেশন সেনসাস রিপোর্টেও (এপিএসসি) বন্ধ হয়ে যাওয়া এসব স্কুলের তথ্য উঠে এসেছে।

অন্য দিকে কিন্ডারগার্টেন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ঐক্য পরিষদের চেয়ারম্যান এম ইকবাল বাহার চৌধুরী গতকাল মঙ্গলবার নয়া দিগন্তকে জানান, করোনার দুই বছরে আমাদের অ্যাসোসিয়েশনের অন্তর্ভুক্ত প্রতিষ্ঠানের মধ্য থেকেই ১০ হাজারের বেশি স্কুল (প্রাথমারি ও মাধ্যমিক) বন্ধ হয়ে গেছে। আর বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানই আর্থিক সঙ্কটের কারণে বন্ধ হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব মো: মিজানুর রহমান সরকার এই প্রতিবেদককে জানান, করোনার সময়ে আমরা বেসরকারি স্কুলের বা কিন্ডারগার্টেন স্কুলের মালিকদের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে আর্থিক প্রণোদনা দাবি করেছিলাম। কিন্তু পাইনি। পরে অনেক প্রতিষ্ঠান মালিক বাধ্য হয়েই স্কুল বন্ধ করে দিয়েছেন। বিশেষ করে ভাড়া ভবনে স্থাপিত স্কুলগুলোই বেশি বন্ধ হয়ে গেছে। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর একটি অভিজাত হোটেলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে করোনার সময় শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি নিয়ে এক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ জানান, ২০২১ খ্রিষ্টাব্দে প্রাথমিক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করানো প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ছিল ১ লাখ ১৮ হাজার। কিন্তু ২০২২ খ্রিষ্টাব্দে সে সংখ্যা হয়েছে ১ লাখ ১০ হাজারের কম। অর্থাৎ এই সময়ে আট হাজার বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বিলীন হয়ে গেছে।

সূত্র মতে, দেশে এখন সাড়ে ৬৫ হাজারের বেশি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ছাড়াও কয়েক হাজার কিন্ডারগার্টেন প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের পাঠদান করায়। তবে এ সময়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা একটিও কমেনি।

https://www.dailynayadiganta.com/last-page/748494