২৩ জানুয়ারি ২০২৩, সোমবার, ১২:২৪

এ বছরও খাদ্যের দাম বেশি থাকবে

চাপ কমছে না খাদ্য মূল্যস্ফীতির। গত বছরের শেষ প্রান্তিকে খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার বেশি ছিল বিশ্বের বেশির ভাগ দেশেই। এ বছরও কোনো সুখবর মিলছে না, খাদ্যের দাম বেশিই থাকবে। এমনটি মনে করছে বিশ্ব ব্যাংক ও আইএমএফের মতো সংস্থা। বিশ্বব্যাংকের হালনাগাদ তথ্যে উঠে এসেছে বিষয়টি।

বিশ্বব্যাংক বলছে, গত ডিসেম্বর থেকে চলতি জানুয়ারি পর্যন্ত বিশ্ববাজারে খাদ্যমূল্য একরকম স্থিতিশীল আছে। সংস্থার কৃষি সূচকের মান একই আছে। ভুট্টা ও গমের দাম যথাক্রমে ১ ও ২ শতাংশ কমেছে। তবে চালের দাম বেড়েছে ১ শতাংশ। এ ছাড়া ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে বিশ্ববাজারে ভুট্টা ও চালের দাম ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসের তুলনায় ৮ ও ১৩ শতাংশ বেশি। তবে এ মাসে চালের দাম গত বছরের জানুয়ারির তুলনায় ১০ শতাংশ কম।

২০২২ সাল ছিল সামগ্রিকভাবে উচ্চ মূল্যস্ফীতির বছর। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে বিশ্বের প্রায় সব দেশেই মূল্যস্ফীতি রেকর্ড উচ্চতায় ওঠে। রয়টার্সের এক সংবাদে বলা হয়েছে, ১৯৯০ সালের পর ২০২২ সালে খাদ্যের দাম ছিল সবচেয়ে বেশি। ২০২২ সালের শেষ প্রান্তিকে সবচেয়ে বেশি খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল জিম্বাবুয়েতে। এরপর আছে লেবানন। এদিকে গত সপ্তাহেই জানা গেল, ডিসেম্বর মাসে যুক্তরাজ্যে খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার ছিল ১৬ দশমিক ৩ শতাংশ, যা ৪৬ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) প্রতি মাসেই খাদ্যমূল্য সূচক প্রকাশ করে।

তাতে দেখা গেছে, ২০২২ সালে এফএওর খাদ্যমূল্য সূচকের গড় মান ছিল ১৪৩ দশমিক ৭ পয়েন্ট। ১৯৯০ সালে এফএও মূল্যসূচক প্রবর্তন করার পর যা সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। সূচক অনুযায়ী, ২০২১ সালের তুলনায় ২০২২ সালে মূল্যসূচকের মান ১৮ পয়েন্ট বেড়েছে। এর ফলে ২০২২ সালে খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি ১৪ দশমিক ৩ শতাংশ হয়েছে। সব দেশে খাদ্যের দাম একই হারে বাড়েনি। আবার খাদ্যমূল্য বৃদ্ধির প্রভাব যে সব দেশে একইভাবে পড়েছে, তা-ও নয়।

বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২০ সালের পর সারের দাম তিন গুণ হয়েছে। এতে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশের ছোট কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। ব্যাহত হবে কৃষি উৎপাদন। ফলে ২০২৩ ও ২০২৪ সালে খাদ্যচক্র অস্থিতিশীল হবে। এতে বিশ্বের ৪৫টি দেশের ২০ কোটি ৫০ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিশেষ করে সাবসাহারা অঞ্চলের কথা বলা হয়েছে। এই অঞ্চলের দেশগুলো সরাসরি রাশিয়া ও বেলারুশ থেকে সার আমদানি করে। নিষেধাজ্ঞার কারণে তারা সার পাবে না। আবার ইউরোপ রাশিয়ার গ্যাস নেওয়া বন্ধ করে দেওয়ায় সারের উৎপাদন খরচও বাড়বে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) মনে করছে, চলতি ২০২৩ সালেও বিশ্বে খাদ্যের দাম বেশি থাকবে। যুদ্ধ, জ্বালানির উচ্চমূল্য, চরম আবহাওয়া এগুলোকে তারা কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

https://dailysangram.com/post/514508