৬ জানুয়ারি ২০২৩, শুক্রবার, ৩:৪৫

ধীরে কমছে মোটা চালের দাম, বেড়েছে ডিমের


ডিসেম্বরের শুরুতেই পাইকারি বাজারে আসতে শুরু করে আমন ধানের নতুন চাল, এতে মাসের মাঝামাঝি থেকে পাইকারি বাজারে মোটা চালের দাম কমতে শুরু করে, কিন্তু তখন খুচরা বাজারে এর প্রভাব পড়েনি, অবশ্য এক সপ্তাহ ধরে কেজিতে দুই থেকে তিন টাকা পর্যন্ত কমেছে,
সুগন্ধি চালের দামও কমেছে, কমেনি চিকন চালের দাম, সপ্তাহের ব্যববধানে প্রতি ডজন ডিমের দাম ১০ টাকা বেড়েছে, মুরগি ও সবজির দাম ক্রেতার নাগালেই আছে,

আটা, ময়দা, ভোজ্য তেল, ডাল, পেঁয়াজ, রসুনসহ অন্যান্য নিত্যপণ্যের দাম অপরিবর্তিত, গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর বাবুবাজার, কারওয়ান বাজার ও জোয়ারসাহারা বাজারের খুচরা ও পাইকারি বিক্রেতারা এসব তথ্য জানান, বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে আমনের নতুন চাল ব্যাপকভাবে এসেছে, এর প্রভাবে কমেছে চালের দাম

বাবুবাজারের পাইকারি চাল ব্যবসায়ী সলিম উদ্দিন গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, বাজারে এখন মোটা চাল ব্রি-২৮, পাইজাম ও স্বর্ণা বস্তায় (৫০ কেজি) ২০০ থেকে ২৫০ টাকা পর্যন্ত কমে বিক্রি হচ্ছে, ব্রি-২৮ নতুন চালের বস্তা (৫০ কেজি) বিক্রি হচ্ছে দুই হাজার ৪৫০ থেকে দুই হাজার ৫০০ টাকা, যা আগে ছিল দুই হাজার ৭০০ থেকে দুই হাজার ৭৫০ টাকা, পাইজাম ও স্বর্ণা নতুন চালের বস্তা বিক্রি হচ্ছে দুই হাজার ৩০০ থেকে দুই হাজার ৩৫০ টাকা, আগে এই চালের বস্তা ছিল দুই হাজার ৫০০ থেকে দুই হাজার ৫৫০ টাকা, তিনি বলেন, চিকন চাল মিনিকেট ও নাজিরশাইলের দাম তেমন কমেনি,

সামনে এগুলোও কমে আসবে, মিনিকেট বস্তা তিন হাজার ২৫০ থেকে তিন হাজার ৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে এবং নাজিরশাইল বিক্রি হচ্ছে তিন হাজার ৫০০ থেকে তিন হাজার ৫৫০ টাকায়, বাবুবাজার চালের আড়তদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন বলেন, বাজারে বর্তমানে পর্যাপ্ত চালের মজুদ আছে, সামনে চালের দাম বাড়ার কোনো সম্ভাবনা নেই, আগের তুলনায় নতুন মোটা চাল এখন বস্তায় ২০০ থেকে ২৫০ টাকা কমেছে, পাশাপাশি নতুন সুগন্ধি চালের দামও বস্তায় ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা কমেছে।

কারওয়ান বাজারের খুচরা চাল ব্যবসায়ী ঢাকা রাইস এজেন্সির মালিক মো. সায়েম বলেন, বাজারে নতুন চাল আসায় এখন মোটা চালের দাম অনেকটাই কমেছে, ব্রি-২৮ চাল আগে কেজি ৬০ থেকে ৬২ টাকায় বিক্রি করেছি, এখন নতুন ব্রি-২৮ চাল বিক্রি করছি ৫৭ থেকে ৫৮ টাকায়, মিনিকেট বিক্রি হচ্ছে ৭২ থেকে ৭৬ টাকায়, নাশিরশাইল বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়।

সুগন্ধি চালের দাম কমার বিষয়ে বাবুবাজারের পাইকারি সুগন্ধি চাল ব্যবসায়ী মেসার্স কনিক এন্টারপ্রাইজের মালিক জিয়াবুল হক বলেন, বাজারে নতুন সুগন্ধি চাল আসায় দাম অনেকটাই কমে গেছে, আগে পাইকারিতে পুরনো সুগন্ধি চাল বস্তা (৫০ কেজি) ছয় হাজার ৭০০ থেকে ছয় হাজার ৭৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, এখন দাম কমে নতুন সুগন্ধি চালের বস্তা পাঁচ হাজার ৭৫০ থেকে ছয় হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে মুড়িকাটা পেঁয়াজ আসায় নতুন-পুরনো সব ধরনের পেঁয়াজের দাম কমে গেছে, পেঁয়াজ কেজি ৩৫ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, খোলা আটা কেজি ৬০ টাকা ও প্যাকেট আটা ৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, দেশি চিকন মসুর ডাল ১৪০ ও মোটা মসুর ১০০ থেকে ১১০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে, খোলা চিনি এখনো সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে কেজিতে আট থেকে ১৩ টাকা বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে, খোলা চিনি কেজি ১১০ থেকে ১১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, বাজারে প্যাকেট চিনির সরবরাহ কম।

সপ্তাহের ব্যবধানে মুরগির দাম কেজিতে পাঁচ থেকে ১০ টাকা কমেছে, জানতে চাইলে কারওয়ান বাজারের কিচেন মার্কেটের মেসার্স মা আয়েশা ব্রয়লার হাউসের ব্যবসায়ী মো. আমজাদ হোসেন বলেন, ব্রয়লার মুরগি ১৪৫ থেকে ১৫০ ও সোনালি মুরগি ২৫০ থেকে ২৬০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে, দেশি মুরগি প্রতিটি ৪৬০ থেকে ৪৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ডিমের দাম বাড়তি, কমছে সবজিতে : রাজধানীর বাজার ঘুরে দেখা গেছে, নতুন করে ফার্মের মুরগির ডিমের দাম ডজনে ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে বিক্রি হচ্ছে, গত সপ্তাহে ডিমের ডজন ১১০-১১৫ টাকায় বিক্রি হলেও এখন বিক্রি হচ্ছে ১২০-১২৫ টাকায়, জোয়ারসাহারা বাজারের ভাই ভাই স্টোরের ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, ডিমের সরবরাহ কিছুটা কমায় দাম বেড়েছে, এখন ডজন বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়, তবে আটা, ডাল, তেলসহ অন্যান্য নিত্যপণ্যের দাম অপরিবর্তিত আছে।

রাজধানীর বাজারে শীতকালীন সবজির সরবরাহ বাড়ছে, সপ্তাহের ব্যবধানে বেশির ভাগ সবজির দাম আরো কমেছে, পাতাকপি ও ফুলকপি প্রতিটি ২৫ থেকে ৩০ টাকা, দেশি পাকা টমেটো কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকা, শিম ৪০ থেকে ৫০ টাকা, বেগুন মানভেদে ৪০ থেকে ৫০ টাকা, শসা ৫০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, নতুন বড় আলু ৩০ টাকা, মুলা ৩০ টাকা, গাজর ৫০ থেকে ৬০ টাকা, কাঁচা টমেটো ৩০ থেকে ৪০ টাকা ও কাঁচা মরিচ ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

https://www.kalerkantho.com/online/national/2023/01/06/1220049