৫ জানুয়ারি ২০২৩, বৃহস্পতিবার, ১:৫৮

হয়রানি-ভোগান্তিতে পর্যটকরা

আমজাদ হোসেন একটি প্রাইভেট ব্যাংকে সিনিয়র অফিসার হিসেবে রাজধানীতে কর্মরত। বছরের শেষে তিনদিনের ছুটিতে বাচ্চাদের নিয়ে বেড়াতে গিয়েছিলেন বান্দরবান। দিনগুলোকে আনন্দে কাটাতে চাইলেও নানা কারণে ভাটা পড়ে উৎসবের আমেজে। সেখানে ছিলনা পর্যাপ্ত থাকার ব্যবস্থা, ছিলনা চাহিদা মত পরিবহনও। এছাড়া হোটেলগুলো নিজেদের মতো করে অতিরিক্ত ভাড়া ও খাবারের দাম নিয়েছে। অন্যান্য পণ্যের দামও যেন আকাশছোঁয়া। ঘুরতে যাওয়া অনেকের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, এই অবস্থা দেশের প্রায় সব কটি পর্যটন স্পটেই। সময়টা ঘুরার জন্য ইতিবাচক হলেও নানারকম হয়রানি ও ভোগান্তির শিকার পর্যটকরা। এতে করে অনেকেই হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা বলছেন, প্রশাসনের এ ক্ষেত্রে অনেক কিছুই করার আছে। কিন্তু তারা সেভাবে কিছুই করছেনা। ফলে পর্যটকদের মাঝে অনীহাও তৈরি হচ্ছে।

সূত্র মতে, স্কুলের ছুটি, নতুন বর্ষবরণের আমেজ, সাপ্তাহিক ছুটি ও বড়দিনের টানা ছুটি, সব মিলিয়ে বছরের শেষে টানা তিনদিনের ছুটি ছিল। সরকারি বেসরকারি চাকরিরতরা তাই সুযোগটিকে কাজে লাগিয়ে গত এক সপ্তাহে দেশের পর্যটন এলাকায় ঘুরতে গেছেন কয়েক লাখ মানুষ। স্কুলের ক্লাশ এখনো সেভাবে শুরু না হওয়ায় এখনও পর্যটন স্পটগুলোতে এখন বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। তবে নানা কারণে বিপত্তিতে পড়তে হচ্ছে পর্যটকদের। বেশি পর্যটক উপস্থিতির কারণে নিরাপত্তা দিতে বেগ পেতে হয় প্রশাসনের। আবার অনেক পর্যটক হোটেল রুম বুক না করেই বিভিন্ন গন্তব্যে গেছেন। এরপর হোটেলে রুম না পেয়ে তাদের বিপত্তিতে পড়তে হয়। পর্যটকদের অভিযোগ, পর্যটনের এই মওসুমে দেশের বিভিন্ন স্থানে রেস্তোরাঁয় অতিরিক্ত দাম রাখা হয় হোটেলে রুম থাকার পর বাড়তি টাকার জন্য রুম সংকট দেখানো হয়। শুধু রেস্তোরাঁ নয়, রিকশা, নৌকা, অটোরিকশা ভাড়া ও পর্যটন স্থানের বিভিন্ন দোকানে পণ্যের দামও হাঁকা হয় বাড়তি। এমনকি ভিক্ষুকের উৎপাতও লক্ষণীয়। যে যেভাবে পারছে শুধু বাড়তি অর্থ আদায়ের টার্গেট করেই রয়েছে।

করোনাপরবর্তী সময়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছে দেশের পর্যটন খাত। দিনকে দিন পর্যটন স্পটগুলোতে ভ্রমণপিপাসুদের ভিড় বেড়েই চলেছে। পর্যটকদের এমন ভিড়ে হাসি ফুটেছে পর্যটন ব্যবসায়ীদের মুখে কিন্তু এই ভিড় সামাল দিতে পারছেন না সংশ্লিষ্টরা। পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে আবাসন সংকট, রেস্তোরাঁ ও যানবাহনসহ সব ক্ষেত্রেই অতিরিক্ত অর্থ আদায় ছাড়াও নানা হয়রানি ও ভোগান্তির শিকার হতে হয় পর্যটকদের। এসব অভিযোগ পুরনো হলেও সেগুলো যেন দেখার কেউই নেই।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সারা দেশে ১১৯টি পর্যটন স্পট রয়েছে। এই খাতে প্রায় ৪০ লাখ লোক কাজ করে। বছরে প্রায় ২ কোটি লোক দেশের পর্যটন স্পটগুলোতে ভ্রমণ করে। বছরে আয় হয় ৩০০ কোটি টাকারও বেশি। দেশে শত শত পর্যটন স্পট থাকলেও শতভাগ পর্যটন সেবা পান না পর্যটকরা। রয়েছে যোগাযোগ ও আবাসন ব্যবস্থার ঘাটতি। নেই পর্যটকদের দেশীয় সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়ার যথাযথ ব্যবস্থা। তারা বলছেন, পর্যটনের এই মৌসুমে দেশের বিভিন্ন স্থানে রেস্তোরাঁয় অতিরিক্ত দাম রাখা হয়। শুধু রেস্তোরাঁ নয়, রিকশা, নৌকা, অটোরিকশা ভাড়া ও পর্যটন স্থানের বিভিন্ন দোকানে পণ্যের দামও হাঁকা হয় বাড়তি।

পর্যটন ব্যবসায়ীরা বলছেন, পর্যটক বৃদ্ধি এই শিল্পের জন্য সুখবর। যে হারে পর্যটক বাড়ছে সেভাবে অবকাঠামোর উন্নয়ন হয়নি। যতটুকু আছে তা উপচে পড়া ভিড় সামাল দেয়ার জন্য অপ্রতুল। তাই ছুটির দিনে পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে অতিরিক্ত পর্যটকের চাপ সামাল দেয়া কঠিন হয়ে পড়ে। এ ছাড়া পর্যটকরা বেছে বেছে কয়েকটি পর্যটন স্পটে ভিড় করায় ভোগান্তি বাড়ে। এখন মানুষের হাতে টাকা আছে, বেড়াতে গিয়ে ভোগান্তির শিকার হলে দেশীয় পর্যটকদের আশপাশের দেশে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়। এতে দেশের অর্থ বিদেশে চলে যাবে। যত বেশি পর্যটক বাড়বে তত বেশি এই খাতে বিনিয়োগ হবে, অবকাঠামো ও যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়ন হবে। দেশের পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে পর্যটক ধরে রাখতে সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে।

বছরব্যাপী বিশেষ করে ছুটির দিনগুলোতে দেশের কক্সবাজার, রাঙ্গামাটি-বান্দরবান, সিলেট, সুন্দরবন ও কুয়াকাটায় সবচেয়ে বেশি পর্যটক ভ্রমণ করেন। দীর্ঘদিন পর টানা ছুটিতে আশানুরূপ পর্যটক আসায় খুশি পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। বড়দিনসহ টানা তিন দিনের অবকাশে এসব স্পটে নেমেছে মানুষের ঢল। তাদের জায়গা দিতে হিমশিম খায় হোটেল, মোটেল ও রেস্তোরাঁগুলো। জানুয়ারি মাস পর্যন্ত পর্যটকদের চাপ থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেন ব্যবসায়ীরা। কক্সবাজার হোটেল-মোটেল ও গেস্ট হাউস মালিক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান বলেন, টানা ছুটিতে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ পর্যটক এসেছেন। কক্সবাজারের সাড়ে ৪ শতাধিক হোটেল-মোটেল ও গেস্ট হাউস-কটেজের কক্ষ খালি নেই। তাই নতুন করে আসা পর্যটকদের কক্ষ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না বিধায় তারা দুর্ভোগের শিকার হন। বান্দরবানের নীলাম্বরী রিসোর্টের মালিক সাইদুল ইসলাম জানান, ছুটি উপলক্ষে পর্যটকদের আশানুরূপ আগমন ঘটে। পর্যটকদের এমন আগমন অব্যাহত থাকলে আগের ক্ষতি অনেকটাই পুষিয়ে নিতে পারবেন বলে প্রত্যাশা করেন তিনি। ব্যাপক উপস্থিতির কারণেই সেবা দিতে সমস্যা হয় বলে তিনি জানান।

সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ মোবারক হোসেন বলেন, সিলেটের বিভিন্ন পর্যটন স্থানে পর্যটকদের নিরাপত্তার বিষয়ে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। যেকোনো স্থানে পর্যটকরা যেন নির্বিঘেœ ভ্রমণ করতে পারেন, সেটি নিশ্চিত করতে সবার সঙ্গে সমন্বয় করা হয়েছে। যেসব উপজেলায় পর্যটনকেন্দ্র আছে, সেসব উপজেলার ইউএনওদের সতর্ক থাকতেও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ট্যুরিস্ট পুলিশও নিরাপত্তার জন্য কাজ করছে। বান্দরবান ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নকিবুল ইসলাম জানান, আগত পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সব স্পটে সাদা পোশাকেও পুলিশ নিয়োজিত আছে। পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য সব ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
সুন্দরবন অঞ্চলের বন সংরক্ষক (সিএফ) মিহির কুমার দে বলেন, সুন্দরবনে করমজল ছাড়াও হিরণ পয়েন্ট, হারবাড়িয়া, কটকা, কচিখালী, কলাগাছি ও দোবেকি পর্যটন স্পটে পর্যটকদের আনাগোনা বেড়েছে। বেশি পর্যটক হচ্ছে করমজলে। করমজল পর্যটন ও বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির বলেন, করমজলে পর্যটকদের ভিড় বেড়েছে। সুন্দরবন বিভাগের অন্যান্য পর্যটন স্পটেও পর্যটকদের ভিড় হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

ট্যুরিস্ট পুলিশের ডিআইজি মো. ইলিয়াস শরিফ বলেন, নভেম্বর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত পর্যটন মৌসুম। এ সিজনে দেশের সব পর্যটন স্থানে মানুষের চাপ বাড়ে। এ সময়ে মানুষজন যখন ছুটিতে থাকে, আমাদের সদস্যদের কোনো ছুটি থাকে না। পর্যটকদের নিরাপত্তায় সবসময়ই আমাদের সর্বোচ্চ নজরদারি থাকে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের বিভিন্ন জায়গায় পর্যটন কেন্দ্র গড়ে উঠলেও পরিবেশবান্ধব করা যাচ্ছে না। নানা উন্নয়নের নামে গাছ কেটে ধ্বংস করা হচ্ছে পরিবেশ। শব্দদূষণ, পরিবেশ দূষণ তো আছেই। নিশ্চিত করা হয়নি কোনো আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা। যত্রতত্র ময়লা ফেলার কারণে পলিথিনের ভাগাড়ে রূপ নিচ্ছে দেশের বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্র। প্রকৃতির দেওয়া সম্পদ রক্ষা করতে পারলে নতুন কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে, জিডিপিতেও রাখবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। পরিবেশবান্ধব পর্যটন গড়ে তুলতে এই খাতে সরকারের বিনিয়োগ আরও অনেক বাড়ানো দরকার।
ট্যুর অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (টোয়াব) সভাপতি মো. রাফেউজ্জামান বলেন, একটা পর্যটন স্পট মানে অসংখ্য লোকের কর্মসংস্থান। যেকোনো ইন্ডাস্ট্রি কোনো না কোনো দূষণ করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে। কিন্তু পর্যটন শিল্প কোনো রকম দূষণ ছাড়াই বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে। এখন কিছু মানুষের হাতে পয়সা আছে, অভ্যন্তরীণ ট্যুরিজমকে গুরুত্ব না দিলে এই পর্যটকরা আশপাশের দেশে চলে যাবেন। তখন ফরেন কারেন্সি বেরিয়ে যাবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন বিশ্বের মধ্যে তৃতীয় বৃহৎ পর্যটন শিল্পের দেশ। আমরা চাই দেশি পর্যটকরা যেন দেশেই ভ্রমণ করে, বিদেশিরাও আসে। এ জন্য সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির প্রতি গুরুত্ব দিচ্ছি আমরা। অভ্যন্তরীণ ট্যুরিজমে যত বেশি চাহিদা তৈরি হবে অবকাঠামোসহ সব উন্নয়ন তত দ্রুত বৃদ্ধি পাবে। বিনিয়োগকারীরা এই খাতে আগ্রহী হবে। কক্সবাজারে রেল চালু হয়ে গেলে যোগাযোগের সমস্যা অনেকটাই কেটে যাবে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশের অর্থনীতিতে পর্যটন খাতের অবদান খুব বেশি নয়। এ ক্ষেত্রে প্রচুর সম্ভাবনা থাকলেও আজ পর্যন্ত এর সদ্ব্যবহার করা সম্ভব হয়নি। আর বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সরকারের সিদ্ধান্তহীনতা এবং কিছু সিদ্ধান্ত গৃহীত হলেও সে ক্ষেত্রেও কচ্ছপ গতির কারণেই পর্যটন খাত এখনো মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেনি।

পর্যটন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাংলাদেশের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত, নেপালসহ পৃথিবীর অনেক ধনী রাষ্ট্রের অর্থনীতিতেও পর্যটন খাতের আয়-রোজগার ঈর্ষণীয়! সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড ইত্যাদি রাষ্ট্রের বাংলাদেশের মতো বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট, সি-বিচ ইত্যাদি না থাকা সত্ত্বেও সেসব দেশ পর্যটকে ঠাসা। মহামারি করোনার ধকল কাটিয়ে এসব দেশ পর্যটকদের আকর্ষণে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করায় বর্তমানে পর্যটনকারী মানুষের আনাগোনায় সেসব দেশ মুখর হয়ে উঠেছে। মালয়েশিয়ার লঙ্কাউয়ি দ্বীপটিতে পর্যটকের ভিড়। অস্ট্রেলিয়া, আমেরিকা থেকে শুরু করে ইংল্যান্ড থেকেও এখানে পর্যটক আসেন। এখানকার পানতাই সি-বিচ লোকে লোকারণ্য থাকে।

অভিযোগ রয়েছে, দেশের পর্যটন শিল্পের উন্নতিতে বড় অন্তরায় হলো আমলানির্ভরতা। আমলাদের হাতে এ শিল্প খাত ছেড়ে দেয়ায় পর্যটন করপোরেশন, ট্যুরিস্ট ডেভেলপমেন্ট বোর্ড ইত্যাদি সংস্থা যাদের হাতে ছেড়ে দেওয়া হয় বা হয়েছে তাদের একজন যান আর একজন আসেন, কিন্তু কাজের কাজ কিছু হয় বলে মনে হয় না। বরং একজন অতিরিক্ত সচিব এসব চেয়ারে বসেই সচিব হওয়ার ধান্ধায় চেয়ারটি ব্যবহার করে সময় কাটিয়ে যান মাত্র। আর এ সময়টুকুও তারা উপরস্থদের মনতুষ্টিতেই ব্যস্ত থাকেন। কে কখন বা কার পরিবারের কে কখন পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে বেড়াতে যাবেন সেসব দেখভালের বিষয়েই তারা বেশি মনোযোগী থাকেন! এ অবস্থা পরিবর্তন জরুরি।

বিশ্বের ৫০টি দেশ ভ্রমণকারী ড. মুহাম্মদ ইসমাইল হোসেন বলেন, আমি জোর দিয়ে বলতে চাই, সুইজারল্যান্ডের জুরিখ, জেনেভাসহ সে দেশের অন্য দু-একটি স্থানে ভ্রমণ করে সেখানকার দু-একটি লেকের চেয়ে কাপ্তাই লেক আমার কাছে সুন্দর বলে মনে হয়েছে। যদিও সেসব লেক সুইজারল্যান্ডের নামের ওপর দিয়ে পার পেয়ে যায়। আমাদের কাপ্তাই লেকের টিলা ও স্বচ্ছ সুন্দর পানি পৃথিবীতে খুব কমই দেখতে পাওয়া যায়। কখনো কখনো কাপ্তাই গেলে সেখানকার লেকের দৃশ্য আমাকে পাগল করে তোলে! তাছাড়া সুন্দরবনের নয়নাভিরাম দৃশ্য, সুন্দরবনের ভিতরের নদীতে মাঝরাতে নৌকা বা লঞ্চের ছাদে বসে জোছনার আলোর দৃশ্য, কক্সবাজারের সুন্দর লম্বা সমুদ্রতট এসব কিছুও আমাকে মুগ্ধ করে। কিন্তু আমার দেশের এসব সৌন্দর্য দেখতে হলে যে ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন, বর্তমান অবস্থায় নিতান্তই তা অপ্রতুল! আমলাদের হাতে তা বন্দী।

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী বলেন, আমাদের একটি বেসিক পরিবর্তন করা দরকার। মধ্যপ্রাচ্যের দুবাই, পর্যটকদের আকর্ষণ করতে সেখানে তাদের সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে এসেছে। আমাদের যে সংস্কৃতি, সেটা পর্যটনবান্ধব। আমাদের কোনো কিছু থেকে বের হয়ে আসতে হবে না। তবে আমাদের আরও উদার হতে হবে। বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য পর্যটকদের আকর্ষণ করার মতো যথেষ্ট বলেও মনে করেন প্রতিমন্ত্রী। বলেন, আমাদের দেশ অনেক সুন্দর, অনেক নান্দনিক। এই বিষয়গুলোকে ধারণ করতে পারলে পর্যটন এগিয়ে যাবে। এই বিষয়গুলো মানুষকে জানান দিতে হবে। পর্যটনের মহাপরিকল্পনা নিয়ে তিনি বলেন, আমাদের মাস্টার প্ল্যানের মূল বিষয় হবে- যে জায়গার সঙ্গে যে পরিবেশের সঙ্গে যেটা সামঞ্জস্যপূর্ণ, সেটা করা হবে। যেমন বরিশালে রিভারাইন ট্যুরিজম, পাহাড়ের ইকোসিস্টেম মেইনটেইন করে ট্যুরিজমের ব্যবস্থা আমাদের করতে হবে। কক্সবাজার পর্যন্ত রেললাইন, সেখানে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, পদ্মা সেতু, এগুলো পর্যটনকে প্রমোট করার চিন্তা মাথায় নিয়েই করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। বলেন, আগামীতেও বড় প্রকল্প নেয়া হবে।

https://dailysangram.com/post/512775