৫ জানুয়ারি ২০২৩, বৃহস্পতিবার, ১:৫৩

যুগপৎ আন্দোলন : আমীরে জামায়াতের গ্রেফতার প্রসঙ্গ

-ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম

॥ গতকালের পর ॥
অ্যাডলফ হিটলার তার আত্মজীবনীতে লিখেছেন, “ক্ষমতায় টিকে থাকতে হলে কাল্পনিক শত্রুর সৃষ্টি করতে হবে। তা করে দেখাতে হবে যে, দেশ বিপদাপন্ন। এতে জনসাধারণ ভীত হয়ে পড়বে। জনগণ ভীত হলেই তাদের দাসে পরিণত করা সহজ।” স্যার অর্নেস্ট বেন তাই বলেছেন, “বিপদ অন্বেষণ করার কৌশলই হচ্ছে রাজনীতি। বিপদ থাকুক আর নাই থাকুক।

বর্তমানে অসুস্থ রাজনীতি গোটা জাতির জন্যে অভিশাপে পরিণত হয়েছে। সরকারের নোংরা রাজনীতির শিকার বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সংগ্রামী আমীর ডা. শফিকুর রহমান। যুগপৎ আন্দোলনের ১০ দফার কর্মসূচি ঘোষণার কয়েক ঘন্টার মধ্যে সরকার জনগণের বিশ^স্ত বন্ধু হিসেবে খ্যাত, মানবিক সমাজ বিনির্মাণের অন্যতম কারিগর, বিশ্ব ইসলামী আন্দোলনের অন্যতম নেতা ডা. শফিকুর রহমানকে একটি মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার করেছে। এই জাতীয় শীর্ষ নেতাকে ২ দফায় ৮ দিনের রিমান্ড সরকারের ঘৃণ্য চরিত্রের বহিঃপ্রকাশ।

হাস্যকর বিষয় হচ্ছে প্রথমে সরকার তাকে জঙ্গী সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে আটক করেছে বলে দাবি করে, পরবর্তীতে কোন ধরণের সম্পৃক্ততা পায়নি বললেও তাকে জেলহাজতে প্রেরণ করেছে। মূলত জাঙ্গীবাদের জিগির তুলে সরকার পশ্চিমাদের সহানুভূতি নিয়ে ক্ষমতাকে আরো দীর্ঘায়িত করতে চায়। এই জন্যই জামায়াতে ইসলামীর আমীরকে গ্রেফতারের নাটক মঞ্চস্থ করেছে সরকার।

অথচ উগ্রবাদ ও সন্ত্রাসের বিষয়ে জামায়াতের রয়েছে জিরো টলারেন্স নীতি। জামায়াত মনে করে উগ্রগোষ্ঠী ইসলামের নামে যেভাবে নিরীহ মানুষ হত্যা করছে, ইসলামের শিক্ষা ও মূলনীতি এসব ঘৃণ্য কর্মকা-কে ঘৃণা ভরে প্রত্যাখ্যান করে থাকে। সমাজে বিশৃঙ্খলা ও ফিতনা সৃষ্টিকারী এসব কর্মকা-কে আল-কুরআনে স্পষ্টভাবে নিষিদ্ধ বা হারাম ঘোষণা করা হয়েছে। জামায়াতে ইসলামীর কর্মনীতির দ্বিতীয় ধারায় সুম্পষ্টভাবে বলা হয়েছে- “উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য হাসিলের জন্য জামায়াত এমন কোন উপায় ও পন্থা অবলম্বন করিবে না যাহা সততা ও বিশ্বাসপরায়ণতার পরিপন্থী কিংবা যাহার ফলে দুনিয়ায় ফিতনা ও ফাসাদ (বিপর্যয়) সৃষ্টি হয়।” জামায়াতে ইসলামী প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে আজ অবধি এই কর্মনীতির ওপর অটল-অবিচল থেকে তার কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে।

সুতরাং জামায়াতের দাওয়াত, কর্মসূচি, কর্মনীতি, আয়ের উৎস- এই সব মিলিয়ে জামায়াতে ইসলামী কিংবা তার কোন সদস্যের পক্ষে উগ্রবাদ, সন্ত্রাসবাদ কিংবা জঙ্গীবাদে উদ্বুদ্ধ হওয়ার কোন সুযোগ নেই। জামায়াতের দীর্ঘ পথ চলায় জামায়াত কিংবা এর কোন সদস্য দল কর্তৃক প্রণীত নীতি ও আদর্শের বাইরে গিয়ে কোন বক্তব্য, উগ্র আচরণ ও ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত হওয়ার কোন নজীরও নেই। জামায়াত মনে প্রাণে উগ্রচিন্তা-চেতনা ও এই সংক্রান্ত সব ধরনের কার্যক্রমকে তীব্রভাবে ঘৃণা ও নিন্দা করে।

শুধু তাই নয়, রাজধানীর গুলশানে জঙ্গী হামলার যে ঘটনা ঘটে তার প্রতিবাদে তাৎক্ষণিকভাবে জামায়াত নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি প্রদান করে এবং দুর্বৃত্তদের হাত থেকে জিম্মি দেশী-বিদেশী নাগরিকদের নিরাপদ ও অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করার আপ্রাণ চেষ্টা চালানোর আহ্বান জানায়। একই সাথে দুর্বৃত্তদেরকে যথাসম্ভব নিরস্ত্র করে জীবিত অবস্থায় আটক করা উচিত বলে মত প্রকাশ করে যাতে করে এর সাথে জড়িত ও তাদের পেছনের মদদদাতাদের চিহ্নিত করা সম্ভব হয়। জামায়াতের এই ধরনের বিবৃতি প্রমাণ করে জঙ্গীবাদ, সন্ত্রাসবাদ ও নৈরাজ্যের ব্যাপারে জামায়াতের অবস্থান কতটা স্পষ্ট, এই ব্যপারে জামায়াত কতটা আপোষহীন। তাছাড়া চারদলীয় জোট সরকারই জঙ্গীদের শাস্তি কার্যকর করেছে। জঙ্গী হামলায় জামায়াতের তৎকালীন পিপি, এমপি প্রার্থীসহ অনেক প্রাণ হারিয়েছে।

বর্তমানে আওয়ামী লীগ সরকার একদিকে জামায়াতের নিয়মতান্ত্রিক, জনকল্যাণমূলক কার্যক্রমকে পরিচালনা করার সুযোগ না দিয়ে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে সর্বশক্তি নিয়োগ করে তা বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে। অফিস বন্ধ করে রেখেছে। অন্যদিকে উল্টো জামায়াতকেই জঙ্গীবাদের সাথে সম্পৃক্ত করার অপপ্রয়াস চালানো হচ্ছে। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে সারাদেশে জঙ্গী ধরার নামে জামায়াত-শিবির ও অন্যান্য বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মী এবং সাধারণ মানুষকে হয়রানিমূলক গ্রেফতার অভিযান চালিয়ে কোনভাবেই জঙ্গী দমন করা সম্ভব নয়। অধিকন্তু সরকারের গৃহীত এ পদক্ষেপ উল্টো জঙ্গীবাদকে উস্কিয়ে দেয়ারই শামিল।

কোন অকাট্য প্রমাণ ছাড়াই সরকার ও মহল বিশেষ জামায়াতের সাথে জঙ্গীবাদ ও সন্ত্রাসবাদের সম্পর্ক আবিষ্কার করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে।
মূলত: জামায়াতের জনপ্রিয়তায় ঈর্ষাকাতর হয়ে সরকার ও কতিপয় অপশক্তি এসব অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু সরকার রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্যই জামায়াতকে জঙ্গীবাদী আখ্যা দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করার অপপ্রয়াস চালাচ্ছে। মনে হয় জামায়াত নেতৃত্বের সততা ও যোগ্যতাই যেন তাদের বিদ্বেষের মূল কারণ। জামায়াতের ২ শীর্ষ নেতা ৩ টি মন্ত্রণালয় পরিচালনায় যে সততার সাক্ষর রেখেছেন তা ইতিহাসে বিরল। এজন্য অধ্যাপক চার্লস বলেছেন, “আমার মতে ইতিহাসের কোনো যুগেই কোনো ব্যক্তি রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এত কঠিন বিপদের সম্মুখীন হয়নি, প্রশাসনের সামনে বিচার বিভাগ কখনো এতটা অসহায়ত্ব বোধ করেনি”। বেকন বলেছিলেন- “আইনের মাধ্যমে অত্যাচার করার চেয়ে বড় অত্যাচার আর নেই।” সুতরাং দেশপ্রেমিক জনগণ এ ধরনের অপপ্রচার ও অপবাদকে কোন গুরুত্বই দেয় না। তাই এবার আমীরে জামায়াতের বিরুদ্ধে জঙ্গীবাদের অভিযোগ আনা হয়েছে তা পাগলের প্রলাপ ছাড়া কিছুই নয়।

ডা. শফিকুর রহমান বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে এক অনন্য নাম। এদেশে ইসলাম প্রতিষ্ঠায় যারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন তাদের মধ্যে অন্যতম একজন। ব্যক্তিগত, পারিবারিক, পেশাগত ও জাতীয় রাজনৈতিক জীবনে তিনি সততা, যোগ্যতা, মেধার সাক্ষর রেখে চলেছেন। দেশের প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলন ও গণমানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন। দেশের প্রতিটি দুর্যোগপূর্ণ মুহূর্তে মানবতার পাশে দাঁড়ানোর জন্য যিনি সবার আগে ছুটে যান তিনি হলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর জননেতা ডা. শফিকুর রহমান।

জাতির এই সাহসী সন্তান ও প্রতিভাবান রাজনীতিবিদ ১৯৮৩ সালে সিলেট মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস ডিগ্রী অর্জনের পর চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি মানবতার কল্যাণে তিনি রাজনীতিতে আত্মনিয়োগ করেন। সম্প্রতি সিলেটসহ সারাদেশে বানভাসী ও পঞ্চগড়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের নৌকাডুবিতে আহত ও নিহত পরিবারের বিপদে পাশে দাঁড়ানোর যে উদ্যোগ আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান নিয়েছেন তা সর্বমহলে প্রসংসনীয় ও অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবে।

সাংবাদিক রিপন দে নামে একজন তার ফেসবুক ভেরিফাইড পেইজে লিখেছেন,“নৌকাডুবিতে মৃত ৭১ জনের পরিবারপ্রতি ৩০ হাজার টাকা দিয়েছে জামায়াতে ইসলাম। পঞ্চগড় ও ঠাকুরগাঁওয়ের বিভিন্ন এলাকায় নিহতদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে স্বজনদের হাতে এই অর্থসহায়তা তুলে দেন দলটির আমীর ডা. শফিকুর রহমান। একই সঙ্গে শোকাহত পরিবারগুলোকে সমবেদনা জানান তিনি। এখন এখানে অনেকেই বলবেন রাজনীতি। বাট রাজনীতি যদি হয় মানুষের উপকারে সেটা যে দলেরই হোক মানুষ সাপোর্ট দেবেই।”

বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী ডাঃ শফিকুর রহমান জাসদ ছাত্রলীগের মাধ্যমে ছাত্র রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হন। ১৯৭৩ সালে জাসদ ছাত্রলীগে যোগদান করেন। ১৯৭৭ সালে দ্বীন প্রতিষ্ঠার প্রত্যয়দীপ্ত কাফেলা বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরে যোগদান করেন। জননেতা ডা. শফিকুর রহমান প্রখ্যাত রাজনীতিকই নন বরং তিনি একজন খ্যাতিমান সমাজ সেবক, বলিষ্ঠ সংগঠক এবং সফল উদ্যোক্তা। তিনি একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান।

২০২২ সালের ১৮ নভেম্বর ২০২৩-২০২৫ কার্যকালের জন্য তিনি আমীরে জামায়াত হিসেবে ২য় বারের মতো শপথ গ্রহণ করেন এবং অদ্যবধি সংগঠনের আমীর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। জনসমর্থনের দিক থেকেও জামায়াতে ইসলাশী দেশের সর্ববৃহৎ ইসলামী ও তৃতীয় রাজনৈতিক দল। বিগত দিনে জামায়াত অত্যন্ত সাফল্যের সাথে সরকার পরিচালনায় অংশগ্রহণ ছিল দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্রের আলোচনার মূল কেন্দ্রবিন্দু। প্রতিনিয়ত হামলা-

মামলা, দমন-নিপীড়ন, গুম, খুন, এত কিছুর পরও জামায়াতের আমীর নির্বাচন নিয়ে সর্বমহলে ব্যাপক কৌতূহলের সৃষ্টি হয়। জামায়াত নিজেদের অভ্যন্তরে গণতন্ত্রের চর্চা শত প্রতিকূলতার মাঝে ও কিভাবে লালন করে এ নির্বাচন তার সবচেয়ে বড় প্রমাণ।

তৃণমূল থেকে উঠে আসা দ্বীনের এই নিবেদিত প্রাণ মানুষটি এ দেশের জনগণের নিকট খুবই পরিচিত। ব্যক্তি জীবনে তিনি বিনয়ী, অল্পে তুষ্ট, পরোপকারী, স্বজ্জন ব্যক্তি হিসেবেই তিনি সকলের হৃদয়ে আস্থার জায়গা করে নিয়েছেন আপন মহিমায়। হিংসা-বিদ্বেষ, হানাহানিকে তিনি মনেপ্রাণে ঘৃণা করেন। তিনি একজন সাদা মনের মানুষ। তিনি জাতির বিভেদের কালো রেখাকে উপড়ে ফেলতে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
দেশে রাজনৈতিক শিষ্টাচার যখন প্রায় শূন্যের কোঠায়। তখন তার বক্তব্যের সাবলীল ও হৃদয়গ্রাহী ভাষা মজলুম জনতার হদয়ে আশার আলো সঞ্চারিত করেছে। তিনি আবেগ তাড়িত নন, কিন্তু আবেগের সম্মোহনী শক্তি বিতরণ করছেন দল-মত, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের মাঝে। তার বক্তব্যে গোটা দুনিয়ার মজলুম বঞ্চিত, শোষিতদের পক্ষে বলিষ্ঠ সাহসীপূর্ণ উচ্চারণ।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে বর্ণিত মূলনীতি ও ইসলামী আদর্শের ভিত্তিতে সুশাসন ও ন্যায়ভিত্তিক কল্যাণধর্মী সমাজ বিনির্মাণের জন্য কাজ করছে। দেশের বিদ্যমান পরিবেশ পরিস্থিতিসহ আঞ্চলিক, আন্তর্জাতিক ও বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে সেই কাক্সিক্ষত জনকল্যাণমূলক সমাজ বিনির্মাণের লক্ষ্যে জামায়াত তার রূপকল্প হিসাবে দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পণা গ্রহণ করেছে। একটি ইনসাফপূর্ণ ও কল্যাণমুখী সমাজ বিনির্মাণের জন্য আজীবন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।

সকলের প্রতি বন্ধুত্ব, কারও প্রতি শত্রুতা নয়’, এই নীতির ভিত্তিতে প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোসহ বিশ্বের শান্তিকামী সকল রাষ্ট্রের সাথে সু-সম্পর্ক এবং বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থ অক্ষুণœ রেখে রাষ্ট্র সমূহের সাথে সমতা ও সমমর্যাদার ভিত্তিতে পারস্পারিক সম্পর্ক উন্নয়ন করা সম্ভব হবে। সর্বোপরি আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মসহ দেশের জনগণের কাক্সিক্ষত উন্নত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন পূরণ হবে।

আমাদের দেশের আজকের রাজনৈতিক একমাত্র সঙ্কট বৃটিশ পার্লামেন্ট মেম্বার সায়মন ডানসাক বুঝেছেন; কিন্তু আমাদের রাজনীতিবিদরা বুঝেও না বোঝার ভান করছেন। তিনি বলেন, “বাংলাদেশ এমন এক রাষ্ট্র যেখানে নেই কোনো ফ্রিডম, নেই কোনো গণতন্ত্র, জনসাধারণের জন্যে নেই কোনো চয়েস। এমন পরিস্থিতিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মাধ্যমে নতুন নির্বাচন দেয়াই চলমান সংঘাত নিরসনের একমাত্র উপায়।” (সমাপ্ত)

https://dailysangram.com/post/512731