২৫ মে ২০২১, মঙ্গলবার, ২:১২

কোভিড-১৯ মোকাবেলা

দরপত্র ছাড়াই নিয়োগ পাচ্ছে ১১৫৪ জন

স্বাস্থ্য অধিদফতর নিয়োগ দেবে; ব্যয় হবে ১৩৪ কোটি টাকা

দরপত্র ছাড়াই কোভিড-১৯ মহামারী মোকাবেলায় ১ হাজার ১৫৪ জনবল ও পরিবহন সেবা ক্রয়ের উদ্যোগ নিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এই জনবল ও পরিবহন আউট সোর্সিংয়ের মাধ্যমে দুই বছর মেয়াদের জন্য জাতিসঙ্ঘের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান ইউএনএফপিএ’র মাধ্যমে নিয়োগ দেয়া হবে। এ জন্য ব্যয় হবে ১৩৩ কোটি ৭৫ লাখ ৪২ হাজার ৪১৬ টাকা।

সূত্র জানায়, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অধীন স্বাস্থ্য অধিদফতরের বাস্তবায়নাধীন ‘কোভিড-১৯ ইমার্জেন্সি রেসপন্স অ্যান্ড প্যানডেমিক প্রিপেয়ার্ডনেস’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে(অর্থাৎ, দরপত্র বা টেন্ডার ছাড়া) এ সেবা ক্রয় করা হবে।

জানা গেছে, বাংলাদেশে কোভিড-১৯ মোকাবেলার লক্ষ্যে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে এই প্রকল্পটি ২০২০ সালের ১৯ এপ্রিল তারিখে একনেক সভায় অনুমোদিত হয়। প্রকল্পটির মূল উদ্দেশ্য হলো কোভিড-১৯ মহামারী মোকাবেলায় দেশের হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধি, জরুরি চিকিৎসা উপকরণ ক্রয় ও বিতরণ এবং দেশব্যাপী কোভিড-১৯ পরীক্ষা সেবা সহজ করা।

সূত্র জানায়, দেশব্যাপী করোনার প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়ায় এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (এআইআইবি) মূল প্রকল্প তথা বিশ্বব্যাংকের আগের অর্থায়নের সঙ্গে অতিরিক্ত ১০০ মিলিয়ন ডলার যৌথ অর্থায়ন করে। অপর দিকে বিশ্বব্যাংকের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার (আইডিএ) প্রকল্পটিতে অতিরিক্ত ৫০ কোটি ডলার অন্তর্ভুক্ত করে ভ্যাকসিন কেনা এবং মাঠপর্যায়ে প্রকল্পের কার্যক্রম বাস্তবায়নের লক্ষ্যে জনবল ও পরিবহন ব্যয় সন্নিবেশিত করে প্রকল্প দলিল সংশোধন করা হয়, যা চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি একনেক সভায় অনুমােদিত হয়।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, করােনায় উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বিশ্বব্যাংকের প্যানডেমিক ইমার্জেন্সি ফাইন্যান্সিং ফ্যাসিলিটির (পিইএফ) অর্থায়নের আওতায় স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ এবং ইউএনএফপিএ'র মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। সমঝােতা স্মারক অনুযায়ী ইউএনএফপিএ আউট সাের্সিংয়ের মাধ্যমে মাঠপর্যায়ে কোভিড-১৯ পরীক্ষা করা, নমুনা সংগ্রহ, ল্যাব সেন্টার পরিচালনা ও অন্যান্য সেবা বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট বিষয়ে দক্ষ ও পারদর্শী জনবল নিয়ােগ এবং পরিবহন সেবা দেয়। সূত্র জানায়, ওই সেবা কার্যক্রম সচল রাখার স্বার্থে প্রকল্পের সংশােধিত দলিলে জনবল ও পরিবহন সেবা অন্তর্ভুক্ত করে পর্যাপ্ত অর্থের সংস্থান রাখাসহ প্রকিউরমেন্ট পরিকল্পনায় একটি সারসংক্ষেপ প্যাকেজ সন্নিবেশিত করা হয়। অধিকন্তু প্রকল্প দলিলের সংযােজনীতে জনবলের সংখ্যা উল্লেখসহ প্রাক্কলিত ব্যয় নির্ধারিত রয়েছে। প্রসঙ্গত বাংলাদেশ সরকার এবং বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে সম্পাদিত ঋণ চুক্তি অনুযায়ী প্রকল্পের ব ক্রয় কার্যক্রম বাস্তবায়নে বিশ্বব্যাংকের প্রকিউরমেন্ট রেগুলেশন এবং পিপিএ-২০০৬/পিপিআর-২০০৮ অনুসরণ করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

পিপিএ-২০০৬ এর ৩(২) (ঘ) অনুযায়ী কোনাে উন্নয়ন সহযােগী বিদেশী রাষ্ট্র বা সংস্থার সঙ্গে সরকারের সম্পাদিত কোনাে ঋণ, অনুদান বা অন্য কোনাে চুক্তির অধীন কোনাে পণ্য, কার্য বা সেবা ক্রয়ের ক্ষেত্রে চুক্তির শর্ত প্রাধান্য পাবে। এ ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে সম্পাদিত ঋণ চুক্তি অনুযায়ী ক্রয়কার্যক্রমে বিশ্বব্যাংকের প্রকিউরমেন্ট রেগুলেশনের প্রাধান্য রয়েছে। সম্পাদিত ঋণ চুক্তি অনুযায়ী সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি প্রয়ােগের ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমােদনের প্রয়ােজন নেই বলে প্রস্তাবটির সারসংক্ষেপে উল্লেখ করা হয়েছে। এসম্পর্কিত এক সারসংক্ষেপে বলা হয়, কোভি-১৯ উদ্ভূত পরিস্থিতিতে স্বল্প সময়ে অধিকতর সুবিধার নিমিত্ত বিশ্বব্যাংকের প্রকিউরমেন্ট রেগুলেশনের আর্টিকেল ৬,৪৭, ৬,৪৮, ৭.২৭ এবং ৭.২৮-এ বর্ণিত নির্দেশনাগুলাে অনুসণন করে ইউএনএফপিএ কর্তৃক আউট সাের্সিং পদ্ধতিতে সেগুলাে ক্রয়ের প্রস্তাব করা হয়েছে, যা চলমান কোভিড-১৯ প্রাদুর্ভাব মােকাবেলার জন্য অত্যন্ত জরুরি। এসংক্রান্ত একটি ক্রয় প্রস্তাব পরবর্তী সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে উপস্থাপন করা হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

https://www.dailynayadiganta.com/first-page/583964