১৭ এপ্রিল ২০২০, শুক্রবার, ৬:৩৬

অনাহারে মৃত্যুর আশঙ্কায় তিন কোটি মানুষ

৬০ বছরে প্রথম শূন্য প্রবৃদ্ধির মুখে এশিয়া; সামাজিক দূরত্ব থাকবে ২০২২ পর্যন্ত; করোনার হটস্পট কলকাতা

আক্রান্ত : ২১,০৯,৫৫৯, মৃত : ১,৩৭,০৬১
দেশ আক্রান্ত মৃত্যু
যুক্তরাষ্ট্র ৬,৪৬,৩০০ ২৮,৬৪০
স্পেন ১,৮২,৮১৬ ১৯,১৩০
ইতালি ১,৬৫,১৫৫ ২১,৬৪৫
ফ্রান্স ১,৪৭,৮০৩ ১৭,১৬৭
জার্মানি ১,৩৫,৫৪৯ ৩,৮৫০
ব্রিটেন ১,০৩,০৯৩ ১৩,৭২৯
চীন ৮২,৩৪১ ৩,৩৪২
ইরান ৭৭,৯৯৫ ৪,৮৬৯

নভেল করোনাভাইরাসে দিশেহারা বিশ^। ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়েছেন ২০ লাখ ৯১ হাজার ২৭৯। এর মধ্যে অর্ধেকই ইউরোপের বিভিন্ন দেশের। শুরুতে করোনা শনাক্তে চীন এগিয়ে থাকলেও ধীরে ধীরে প্রাদুর্ভাবের কেন্দ্রে চলে আসে ইউরোপ। ইতালি, স্পেন, জার্মানি, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্যের মতো দেশ বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে করোনা মোকাবেলায়। তবে এপ্রিলে সব ছাপিয়ে শীর্ষে চলে আসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এখনো দেশটিতেই করোনা শনাক্ত ও আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা বেশি। যা অর্থনীতিতে এক বড় ধাক্কা দিয়েছে ও জনজীবনের ওপর ব্যাপক চাপ সৃষ্টি করেছে। বিশ্বজুড়ে ২১০টি দেশ ও অঞ্চলে করোনা সংক্রমিত হয়েছে। ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে এক লাখ ৩৫ হাজার ২২৯ জন। খবর রয়টার্স, গার্ডিয়ান, ইভেনিং স্ট্যান্ডার্ড, নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল, মিরর, এনবিসিনিউজ, বিবিসি, আলজাজিরা, জেরুসালেম পোস্ট, ডেইলি পাকিস্তান ও ওয়ার্ল্ডোমিটারসের।

অনাহারে মৃত্যুর আশঙ্কায় তিন কোটি মানুষ : করোনা সঙ্কটে দরিদ্রদের মুখে খাবার তুলে দেয়ার ব্যবস্থা জাতিসঙ্ঘ করতে না পারলে অন্তত তিন কোটি মানুষ অনাহারে মারা যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন জাতিসঙ্ঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) নির্বাহী পরিচালক ডেভিড বেসলে। তিনি বলেন, বিভিন্ন দেশের সরকারের আর্থিক সহায়তায় বিশ্বে অন্তত ১০০ মিলিয়ন মানুষের মুখে খাবার তুলে দেয় ডব্লিউএফপি। তার মধ্যে অন্তত ৩০ মিলিয়ন মানুষ খাবার না পেলে অনাহারে মারা যাওয়ার ঝুঁকিতে আছে। জীবন বাঁচাতে হলে তাদের মুখে খাবার তুলে দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। করোনাভাইরাসের কারণে সারাবিশ্বের অর্থনীতি থমকে গেছে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে বিভিন্ন দেশ ডব্লিউএফপিকে অর্থ সহায়তা বন্ধ করে দিতে পারে। আর এতে করে বিপর্যয় আরো বেড়ে যাবে। যদি আমরা অর্থায়ন বন্ধের কবলে পড়ি তবে সর্বনি¤œ ৩০ মিলিয়ন মানুষ মারা যাবে। তিন মাসের বেশি সময় ধরে দিনে তিন লাখ মানুষের মৃত্যু হবে। সে কারণে করোনাভাইরাস মোকাবেলায় গৃহীত পরিকল্পনার সাথে অর্থনীতির বিষয়টিও বিবেচনা করতে হবে।

৬০ বছরে প্রথম শূন্য প্রবৃদ্ধির মুখে এশিয়া : আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) জানিয়েছে, গত ৬০ বছরের মধ্যে চলতি বছরে প্রথমবারের মতো এশিয়া মহাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি থমকে যাওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। করোনাভাইরাস মহামারীতে এ অঞ্চলের সেবাখাত এবং প্রধান রফতানি খাতগুলো অভূতপূর্ব ক্ষতির মুখে পড়েছে। এ পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে এ বছর বিশ্ব অর্থনীতি তিন শতাংশ ক্ষতির মুখে পড়বে; গোটা বিশ্বের অর্থনীতিই মন্দার মুখে পড়বে। আইএমএফের এশিয়া এবং প্যাসিফিক অঞ্চলের পরিচালক চ্যাংইয়ং রি ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘মহামারী নিয়ন্ত্রণে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা, সামাজিক দূরত্বায়ন এবং অন্য নির্দেশগুলোতে যেসব পরিবার এবং ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তাদের সহায়তার লক্ষ্যে পদক্ষেপ নিতে হবে নীতি নির্ধারকদের। এ সময়টা বিশ্ব অর্থনীতির জন্য সবচেয়ে অনিশ্চিত এবং সঙ্কটময়। এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলও এর বাইরে নয়। এ অঞ্চলে করোনাভাইরাসের প্রভাব গুরুতর এবং নজিরবিহীন হতে যাচ্ছে। এটা সচরাচর ব্যবসায় চালিয়ে যাওয়ার মতো সময় নয়। এশীয় দেশগুলোকে সব ধরনের নীতি ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।’

২০২২ পর্যন্ত সামাজিক দূরত্ব থাকবে বিশ্বে : ২০২২ সাল পর্যন্ত সামাজিক দূরত্বে থাকতে হবে বিশ্বকে। না হলে বিপুলসংখ্যক মানুষ অতি মহামারীতে আক্রান্ত হবেন। হাসপাতালে তাদের জায়গা দেয়া যাবে না। সায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণাপত্রে এ হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা। গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, ‘আগামী দিনে নির্দিষ্ট ঋতুতে বারবার ফিরে আসতে পারে কোভিড-১৯। ওই রোগ সাধারণ সর্দিকাশির চেয়ে অনেক বেশি ছোঁয়াচে। আমরা এখনো নতুন রোগটির সম্পর্কে বেশি কিছু জানি না। একবার সংক্রমণ হলে শরীরে কী ধরনের প্রতিরোধক্ষমতা জন্মায়, সেই ক্ষমতা কতদিন বজায় থাকে, আমরা কিছুই জানি না।’ বিজ্ঞানীদের অন্যতম স্টিফেন কিসলার বলেন, ‘আমরা যতদূর জানতে পেরেছি, কিছুদিনের জন্য সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাই যথেষ্ট নয়। আমেরিকার চিকিৎসা ব্যবস্থার সাথে সামঞ্জস্য রেখে ভবিষ্যতে দফায় দফায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। কোভিড ১৯ এর নির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই। রোগ ঠেকাতে বারে বারে সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং বজায় রাখাই হলো পথ।’

জাপানে ৪ লাখ মানুষের মৃত্যুর আশঙ্কা : জরুরি ব্যবস্থা না নিলে জাপানে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৪ লাখ মানুষের প্রাণহানি হতে পারে এবং সাড়ে আট লাখ মানুষের ভেন্টিলেটরের প্রয়োজন হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এমন পরিস্থিতিতে জনগণকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলতে ও ব্যবসায়িক কাজকর্ম বন্ধ রেখে নাগরিকদের বাড়িতে অবস্থান করার জন্য বুধবার আহ্বান জানিয়েছে জাপান সরকার। মানুষের মধ্যে কথোপকথন ৭০ শতাংশ কমিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে। সরকারের মুখপাত্র ও মুখ্য মন্ত্রিপরিষদ সচিব ইয়োশিদে সুগা জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তারা যেন সরকারকে লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছাতে দিতে যার যার সাধ্যমতো চেষ্টা করে। জাপানি প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে এরই মধ্যে ১ ট্রিলিয়ন ডলার সমমানের অর্থনৈতিক প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন। এর মধ্যে মহামারী পরিস্থিতিতে যে পরিবারগুলোর উপার্জন একেবারে বন্ধ হয়ে গেছে তাদের তিন লাখ ইয়েন করে দেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। তবে প্রত্যেক জাপানি নাগরিককেই এক লাখ ইয়েন করে প্রদান করার জন্য সরকারের কাছে দাবি উঠেছে। ওসাকা ও টোকিওসহ ৬ এলাকায় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। করোনাভাইরাসের উপসর্গ থাকা মানুষদেরই শুধু করোনা পরীক্ষা করে থাকে জাপান।

করোনায় মারা যাচ্ছে পাঁচ ধরনের মানুষ : যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিস কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) বলছে, কোভিড-১৯ নতুন রোগ। এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্য এবং এই কয়েক মাসের অভিজ্ঞতা বলছে, এই ভাইরাস অন্য রোগে আক্রান্তদের মৃত্যুঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। বয়স্ক, শারীরিকভাবে দুর্বলরা বেশি ঝুঁকিতে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনায় মৃতদের মধ্যে পাঁচটি ধরন দেখা গেছে। গবেষণায় দেখা গেছে, ৭০ বছরের বেশি বয়স্কদের করোনায় মারা যাওয়ার হার অত্যধিক। নারীদের তুলনায় পুরুষের মৃত্যু হচ্ছে বেশি। যেসব মানুষ আগে থেকেই শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে আছেন; বিশেষ করে যারা ডায়াবেটিস, অ্যাজমা, উচ্চ রক্তচাপ, ফুসফুসে সমস্যা, হজমের সমস্যায় ভুগছেন- তাদের মৃত্যু হার বেশি। শারীরিকভাবে বেশি ওজনের মানুষদের করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঘটনা বেশি ঘটছে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকলে করোনা আক্রান্তদের লক্ষণ প্রকাশ পাচ্ছে গুরুতরভাবে। এ ধরনের মানুষকে লাইফ সাপোর্টে পর্যন্ত নিতে হচ্ছে। পরে বেশিসংখ্যক এ ধরনের মানুষ মারা যাচ্ছে।

করোনার হটস্পট কলকাতা : করোনাভাইরাসের সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচাতে ভারতের ৭৩০টি জেলাকে তিনটি ভাগে ভাগ করার ঘোষণা দিয়েছেন ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব লব আগরওয়াল। করোনা সংক্রমণের মাত্রার ওপর ভিত্তি করে রেড জোন, হোয়াইট জোন এবং গ্রিন জোন করা হয়েছে। কলকাতাসহ মুম্বাই, দিল্লি, চেন্নাই, বেঙ্গালুরু ও হায়দরাবাদ মহানগর পড়েছে হটস্পটে বা রেড জোনে। এ ছাড়া ১৭০টি জেলা রেড জোনে রয়েছে। এই রেড জোনের বাসিন্দাদের নিজ এলাকা থেকে বের হওয়া বা ঢোকার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। দেশের ৮০ শতাংশ সংক্রমিত এই জোনে পড়েছে। আবার রাজ্যগুলোর হটস্পটগুলোও পড়েছে এই রেড জোনের আওতায়। রাজ্যেরও ৮০ শতাংশ সংক্রমিতরা এই রেড জোনের আওতায়। আবার রেড জোনের আওতায় থাকা ১৭০টি জেলার মধ্যে ১২৩টি জেলাকে চিহ্নিত করা হয়েছে ‘অত্যন্ত সংক্রমিত’ জেলা হিসাবে। এই ১২৩টির মধ্যে রয়েছে দিল্লির ৯টি জেলা। ২০৭টি জেলাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে হোয়াইট জোন হিসেবে। এই হোয়াইট জোন করোনার সম্ভাব্য আক্রমণে রেড জোন হয়ে যেতে পারে। ৩৫৩টি জেলাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে গ্রিন জোন হিসেবে। এখানে সংক্রমণ সংখ্যা প্রায় শূন্য। হটস্পটগুলোয় আরো ২৮ দিন জারি থাকবে নিষেধাজ্ঞা।

স্পেনের ২৭ হাজার চিকিৎসাকর্মী আক্রান্ত : স্পেনের ২৭ হাজারেরও বেশি চিকিৎসাকর্মীর করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে বলে এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন দেশটির জরুরি সমন্বয় কেন্দ্রের পরিচালক ফার্নান্দো সাইমন। ফার্নান্দো জানান, মহামারী মোকাবেলা করতে গিয়ে বহুসংখ্যক চিকিৎসক, নার্স ও সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কর্মী আক্রান্ত হয়েছেন। এদের বেশির ভাগই সুস্থ হয়ে আবারো কাজে যোগ দিয়েছেন। এদিকে লকডাউন শিথিলের পর দেশটিতে আক্রান্তের হার বাড়তে শুরু করেছে। স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ পার্লামেন্টে বক্তৃতায় হতাশা নিয়ে বলেন, করোনাভাইরাসের টিকা আবিষ্কার না হওয়া পর্যন্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার আশা দেখছি না।

বিশ্বজুড়ে তোপের মুখে ট্রাম্প : করোনা মহামারীর মধ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় (ডব্লিউএইচও) অর্থায়ন স্থগিতের ঘোষণা দিয়ে বিশ্ব জুড়ে তুমুল সমালোচনার মুখে পড়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মানবহিতৈষী বিল গেটস থেকে শুরু করে ব্রিটেন, জার্মানি, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, এবং চীনও এই সমালোচনায় যোগ দিয়েছে। ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে আমেরিকান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন বলেছে, ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত ভুল পথে চালিত বিপজ্জনক পদক্ষেপ। এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছেন সংস্থাটির প্রেসিডেন্ট প্যাট্রিস হ্যারিস। ডব্লিউএইচওর মহাপরিচালক তেদরোস আধানোম গেব্রিয়াসুসে বলেছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অর্থায়ন বন্ধের ঘোষণা দুঃখজনক। ট্রাম্পের এই ঘোষণার পর ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের এক মুখপাত্র বলেন, তহবিল বন্ধের কোনো পরিকল্পনা ব্রিটেনের নেই। বিশ্বজুড়ে স্বাস্থ্যগত কর্মকা-ে ডব্লিউএইচওর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেইকো মাস এক টুইট বার্তায় বলেছেন, এই মুহূর্তে করার মতো সবচেয়ে ভালো বিনিয়োগ হলো ডব্লিউএইচওতে তহবিল জোগানো। চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঝাও লিজিয়ান বলেন, ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত করোনা
মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক সহযোগিতাকে ছোট করবে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের বৈদেশিক নীতিবিষয়ক প্রধান জোসেফ বোরেল বলেন, ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তে কঠোর দুঃখ প্রকাশ করছে ২৭ দেশের এই জোট। মহামারী মোকাবেলায় ডব্লিউএইচওকে এখনই সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন।’ নিউ জিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জাসিন্দ্রা আর্ডেন বলেন, এই মুহূর্তে ভরসা করার মতো পরামর্শ কেবল ডব্লিউএইচওর কাছ থেকেই পাওয়া যায়।

সেরে উঠেছে ৫ লাখের বেশি মানুষ : বৈশ্বিক মহামারী নভেল করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বের ২১০টি দেশ ও অঞ্চলে। এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে বিশ্বের ২০ লাখ ৯১ হাজার ২৭৯ জন। তাদের মধ্যে বর্তমানে ১৪ লাখ ৩৯ হাজার ৩৫৭ জন চিকিৎসাধীন এবং ৫১ হাজার ১৪২ জন (৪ শতাংশ) আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছে। তবে ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ হয়ে উঠেছে অনেক মানুষ। এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্তের মধ্যে পাঁচ লাখ ১৬ হাজার ৬৯৩ জন সুস্থ হয়ে উঠেছে।

ভ্যাকসিন না পাওয়া পর্যন্ত লকডাউন ব্রিটেনে : করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন উদ্ভাবন না হওয়া পর্যন্ত লকডাউন উঠছে না বলে জানিয়েছেন ব্রিটেনের স্বাস্থ্যমন্ত্রী নাদাইন ডরিস। অন্যদিকে বাড়িতে থাকার নির্দেশনা কখন উঠে যাবে সে ব্যাপারে পরিকল্পনা প্রকাশের জন্য সরকারের ওপর চাপ বাড়ছে। ব্রিটেনের সরকারি কর্মকর্তারা বলছেন, করোনাভাইরাসে মৃত্যুর হার কমে এলে বিষয়টি বিবেচনা করা হবে। তবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছেন ভ্যাকসিন না পাওয়া পর্যন্ত লকডাউন খুলবে না। বিজ্ঞানিরা বলছেন, ভ্যাকসিন আসতে এখনো এক থেকে দেড় বছর সময় লাগতে পারে। আপাতত ব্রিটেনে নতুন করে তিন সপ্তাহ লকডাউন বাড়ানোর পরিকল্পনা চলছে।

ইদলিবে মাত্র একটি টেস্ট মেশিন : সিরিয়ার ইদলিব প্রদেশের একটি হাসপাতালে কর্মরত ডাক্তার মোহাম্মাদ শাহিম মাক্কি বলেন, ইদলিবের প্রায় ৩০ লাখ মানুষ বসবাস করেন। বিশাল এই জনগোষ্ঠীর জন্য মাত্র একটি করোনা টেস্ট মেশিন। যে কারণে খুব দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ইদলিবের ‘মারাত মাসরিন’ নামক এলাকার একটি শিবিরে বাস্তুচ্যুত শিশুদের মধ্যে করোনাভাইরাস সচেতনতা সৃষ্টিতে পুতুল শোর আয়োজন করা হয়। এই শোতে অংশ নেয়া শিশুদের করোনাভাইরাস সম্পর্কে ধারণা দেয়া হয় এবং কিভাবে চললে ভাইরাসটি কোনো ক্ষতি করতে পারবে না সে ব্যাপারে শিক্ষা দেয়া হয়। তাদের উদ্বুদ্ধ করা হয় সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, মাস্ক ব্যবহার ও সোস্যাল ডিস্টেন্স রক্ষা করার প্রতি।

https://www.dailynayadiganta.com/first-page/496195/