১৬ এপ্রিল ২০২০, বৃহস্পতিবার, ৪:০০

করোনা উপসর্গ নিয়ে ১০ জনের মৃত্যু

দেবিদ্বারে মারা গেছে কলেজছাত্র * কুষ্টিয়ায় নারী ও শিশুর মৃত্যু

দেশের নয় জেলায় করোনা উপসর্গ নিয়ে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে কুষ্টিয়ায় নারী ও শিশু, কুমিল্লার দেবিদ্বারে কলেজছাত্র, কিশোরগঞ্জের ইটনায় কিশোর, ফরিদপুরের ভাঙ্গায় যুবক, পটুয়াখালীর গলাচিপায় এক ব্যক্তি, ময়মনসিংহে এক ব্যক্তি, শেরপুরে যুবক, শরীয়তপুর ও মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ে দুই ব্যক্তি মারা যান। যুগান্তর ব্যুরো ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

কুষ্টিয়া : কুষ্টিয়ায় করোনা উপসর্গে নারী ও তিন বছরের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। তারা জ্বর ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত ছিলেন। এর মধ্যে ওই নারী ১০ দিন ধরে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশনে ভর্তি ছিলেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার রাতে তিনি মারা যান। তিনি কুষ্টিয়া শহরের থানা পাড়ার বাসিন্দা। এ ছাড়া দৌলতপুর উপজেলায় ৩ বছরের এক শিশু জ্বর ও বমি করতে থাকে। বুধবার দুপুরে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। তার বাড়ি উপজেলার মরিচা ইউনিয়নের বৈরাগীরচরে।

ইটনা (কিশোরগঞ্জ) : ইটনা উপজেলায় নারায়ণগঞ্জ ফেরত এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে মঙ্গলবার রাতে। করোনা সন্দেহে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। ওই ব্যক্তির বাড়ি উপজেলার মৃগা ইউনিয়নের বড়বাড়ী সুদ্রাহাটি গ্রামে।

কুমিল্লা : দেবিদ্বারে করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের এক ছাত্র মারা গেছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জ্বর-কাশি, শ্বাসকষ্ট নিয়ে ওই ছাত্রকে দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনার পর সেখানেই তার মৃত্যু হয়। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আহম্মেদ কবির জানান, ওই ছাত্রের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। দেবিদ্বার থানার ওসি জহিরুল আনোয়ার জানান, রাতে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ও থানা পুলিশের উপস্থিতিতে ওই কলেজছাত্রকে গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়েছে।

ভাঙ্গা (ফরিদপুর) : ভাঙ্গা উপজেলার চান্দা ইউনিয়নের শরীলদা গ্রামে মঙ্গলবার রাতে করোনা উপর্সগ নিয়ে এক যুবক মারা গেছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মহসিন উদ্দিন জানান, বুধবার তার নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

গলাচিপা (পটুয়াখালী) : বাউফলের আদাবাড়িয়া ইউনিয়নের মহাশ্রদ্ধী গ্রামে করোনা উপসর্গ নিয়ে সোমবার গভীর রাতে এক ব্যক্তি মারা গেছেন। তার লাশ মঙ্গলবার রাতে গলাচিপা উপজেলার বকুলবাড়িয়া ইউনিয়নের পাতাবুনিয়া গ্রামে দাফন করা হয়। গলাচিপা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. মনিরুল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার রাতে যথাযথ নিয়ম মেনেই তার লাশ দাফন করা হয়েছে।

ময়মনসিংহ : ময়মনসিংহ জেলা সদরসহ চার উপজেলায় করোনায় আক্রান্ত সাত রোগী আইসোলেশনে রয়েছে। এর মধ্যে ৬ জনকে নগরীর এসকে হাসপাতালের আইসোশেলন ওয়ার্ডে এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে আক্রান্ত হওয়া এক নারী চিকিৎসককে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে। তার স্বামী ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক হওয়ায় তাকেও হাসপাতাল কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গত দু’দিন আগে জ্বর, সর্দি ও কাশি নিয়ে এক রোগী ভর্তির পর বুধবার সকালে তার অবস্থার অবনতি হলে তাকে নগরীর এসকে হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে স্থানান্তর করা হয়। পরে সেখানে তিনি মারা যান। তার নমুনা সংগ্রহ করে পিসিআর ল্যাবে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিভিল সার্জন ডা. এবিএম মসিউল আলম।

শেরপুর : জ্বর, সর্দি-কাশি, শ্বাসকষ্ট নিয়ে শেরপুরে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার ভোর ৫টার দিকে শেরপুর জেলা হাসপাতালে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। তার বাড়ি শেরপুর শহরের চাপাতলি এলাকায়। শেরপুর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোবারক হোসেন জানান, তার নমুনা সংগ্রহ করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পিসিআর ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। চাপাতলি এলাকার ১৭ বাড়ি লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে।

শরীয়তপুর : নড়িয়া উপজেলায় এক ব্যক্তি করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন। সোমবার সন্ধ্যায় মশুরা গ্রামে নিজ বাড়িতে তিনি মারা যান। উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ, নড়িয়া উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন তাদের বাড়ি গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করেছে। তারা ওই ব্যক্তির বাড়ি লকডাউন করে দিয়েছে বলে জানিয়েছেন ডা. রাজিব আহম্মেদ। এছাড়া নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলা থেকে আগত ৪৪২ জন ও দু’জন প্রবাসীসহ ৪৪৪ জনকে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে।

লৌহজং (মুন্সীগঞ্জ) : লৌহজংয়ে সর্দি, জ্বর, গলাব্যথা ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে বুধবার এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। তার বাড়ি উপজেলার কলমা গ্রামে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শামীম আহমেদ জানান, আমরা সেখানে গিয়ে তার নমুনা সংগ্রহ করেছি।

https://www.jugantor.com/todays-paper/last-page/298571/