ছবি: সংগৃহীত
১৩ এপ্রিল ২০২০, সোমবার, ৪:৪৬

আটক-বহিষ্কারেই সাজা সীমাবদ্ধ

ত্রাণের চালে রাক্ষুসে থাবা

সারা দেশে ৫৮৫ বস্তা চাল জব্দ * মেম্বারের ঘরের মেঝে খুঁড়ে চাল উদ্ধার * ইউপি চেয়ারম্যান ও ২ মেম্বার বরখাস্ত * বগুড়া ও সিংড়ায় ৬ আ’লীগ নেতা বহিষ্কার

চাল চোরদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। এসবের সঙ্গে জড়িত ইউনিয়ন পরিষদের দু-একজন চেয়ারম্যান বরখাস্ত এবং নেতাকর্মীদের দল থেকে বহিষ্কারের মধ্যেই আটকে আছে চুরির সাজা। ফলে নানা উদ্যোগ ও হুমকি-হুশিয়ারির পরও ত্রাণের চালের ওপর থেকে রাক্ষুসে থাবা সরানো যাচ্ছে না।

রোববারও দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ৫৮৫ বস্তা চাল জব্দ করা হয়েছে। আটক করা হয়েছে এর সঙ্গে জড়িত ২২ জনকে। শনিবার পাঁচ জেলায় ১৫৭৯ বস্তা চাল উদ্ধার এবং আওয়ামী লীগ নেতা ও ইউপি সদস্যসহ সাতজনকে আটক করা হয়েছে। এভাবে প্রতিদিনই চাল উদ্ধার হচ্ছে, আটকও হচ্ছে অনেকে। কিন্তু কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না।

এসব কারণে চাল চুরি থামছে না বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে, কঠোর সাজা হলেই সব অনিয়ম বন্ধ হয়ে যাবে।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সরকার সারা দেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে। এ সময় দুস্থ মানুষের খাদ্য সহায়তা দেয়ার জন্য সরকার ত্রাণ এবং ওএমএসের চালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য বিতরণ করছে। বিতরণের সঙ্গে জড়িত অনেকেই চাল চুরি করছে।

দুর্দশাগ্রস্ত মানুষের জন্য এসব বরাদ্দ বিতরণে কেউ দুর্নীতি করলে তাকে ক্ষমা করা হবে না বলে রোববারও হুশিয়ারি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এদিন ভিডিও কনফারেন্সে তিনি বলেন, প্রয়োজনে মোবাইল কোর্ট বসিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে বিচার করে তাদের শাস্তি দেয়া হবে। কয়েক দিন ধরেই তিনি এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলছেন।

জানা গেছে, চাল চুরি ও ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রমে অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার পেছনে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নেতা, ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা কাজ করছেন। চাল বিতরণের অনিয়মে সরাসরি জড়িত ডিলাররা। ডিলারদের অনেকেই ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মী।

চালের বস্তাসহ জনপ্রতিনিধি ও আওয়ামী লীগ নেতাদের হাতেনাতে আটক করা হচ্ছে। এদের বিরুদ্ধে নামমাত্র সাজার ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন। তারা বলেন, স্থানীয় সরকার বিভাগ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের বরখাস্ত করছেন। দল নেতাকর্মীদের বহিষ্কার করছেন- এর বাইরে কিছুই নয়। অথচ খোদ প্রধানমন্ত্রী তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থার কথা বলে আসছেন।

রোববার স্থানীয় সরকার বিভাগের জারি করা তিনটি প্রজ্ঞাপনে ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের বরখাস্তের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। আলাদা আদেশে চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার ৩ নম্বর মির্জাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. নুরুল আফসার, নাটোরের সিংড়া উপজেলার সুকাশ ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার মো. শাহিন শাহ এবং নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার মো. কবির হোসেনকে বরখাস্ত করা হয়।

চূড়ান্তভাবে পদ থেকে কেন তাদের অপসারণ করা হবে না- আদেশে তার জবাবও দিতে বলা হয়। আদেশের ১০ কার্যদিবসের মধ্যে স্ব স্ব জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্থানীয় সরকার বিভাগে জবাব পাঠানোর কথা বলা হয়েছে।

দেশের বিভিন্ন স্থানে কয়েক দিন ধরেই সরকারি চাল চুরির ঘটনা ঘটছে। রোববার চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৩০০ বস্তা চালসহ দু’জনকে আটক করা হয়েছে। বগুড়ার নন্দীগ্রামে ১৬৮ বস্তা চালসহ আওয়ামী লীগের দুই নেতাকে আটক করা হয়েছে। ভোলার লালমোহনের বদরপুর ইউপি মেম্বারের ঘরের মাটি খুঁড়ে সাত বস্তা চাল উদ্ধার করা হয়েছে।

এছাড়া জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে ২৫ বস্তা, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ ও বিজয়নগরে ৩১ বস্তা, মাদারীপুরের কালকিনি ও রাজৈরে ২৬ বস্তা, খাগড়াছড়িতে ২৮ বস্তা চাল উদ্ধার করা হয়েছে। চাল চুরির অভিযোগে বগুড়ায় চার এবং নাটোরের সিংড়ায় দুই নেতাকে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। ব্যুরো ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

চট্টগ্রাম ব্যুরো ও হাটহাজারী : করোনাভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবেলায় শ্রমজীবী ও কর্মহীন মানুষের জন্য বরাদ্দ ত্রাণ বিতরণে অনিয়মের অভিযোগে হাটহাজারী উপজেলার ৩ নম্বর মির্জাপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. নুরুল আফসারকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার তদন্তে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় জেলা প্রশাসকের সুপারিশের ভিত্তিতে তাকে রোববার বরখাস্ত করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।

বগুড়া : নন্দীগ্রামে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ১৬৮ বস্তা চালসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগের দুই নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। র‌্যাব-১২ বগুড়া স্পেশাল কোম্পানির সদস্যরা শনিবার মধ্যরাতে চালসহ তাদের গ্রেফতার করে। রোববার দুপুরে র‌্যাবের পক্ষে নন্দীগ্রাম থানায় তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়।

পরে তাদের আদালতের মাধ্যমে বগুড়া জেলহাজতে পাঠানো হয়। নেতারা হলেন- নন্দীগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান আনিস ও তার সহযোগী সদর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আনসার আলী। চাল চুরির সঙ্গে জড়িত আওয়ামী লীগের চার নেতাকে সংগঠন থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।

রোববার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবর রহমান মজনু ও সাধারণ সম্পাদক রাগেবুল আহসান রিপু এ সিদ্ধান্তের কথা জানান। বহিষ্কৃতরা হলেন- নন্দীগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান আনিস, নন্দীগ্রাম সদর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আনসার আলী, সারিয়াকান্দির কুতুবপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি গাজিউল হক গাজী এবং শিবগঞ্জের সৈয়দপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম সাজু।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ : সদর উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়নের জোড়াবকুলতলা এলাকার একটি ভাড়া বাড়ি থেকে রোববার ৩০০ বস্তা সরকারি চালসহ দু’জনকে আটক করেছে জেলা বিশেষ গোয়েন্দা পুলিশ। এসব চালের মালিক নারায়ণপুর ইউনিয়নের আবু হুরাইরার ছেলে বাবু। বাবুর দুই সহযোগী নারায়ণপুর ইউনিয়নের নজরুল ইসলামের ছেলে রবিউল ইসলাম ও ইসলামপুর ইউনিয়নের ফয়েজ উদ্দীনের ছেলে মেসবাহুল হককে আটক করা হয়।

লালমোহন (ভোলা) : লালমোহনের বদরপুর ইউনিয়নে ইউপি মেম্বারের বসত ঘরের মাটি খুঁড়ে সরকারি চাল উদ্ধার করেছে পুলিশ। রোববার ট্রিপল নাইনে ফোন পেয়ে লালমোহন থানা পুলিশ ৫নং ওয়ার্ড মেম্বার জুয়েলের ঘরের খাটের নিচে মাটি খুঁড়ে সাত বস্তা চাল উদ্ধার করে। জুয়েলের বাবা সাবেক মেম্বার নান্নুকে পুলিশ আটক করেছে।

জয়পুরহাট : ক্ষেতলাল উপজেলার নিমতলী গ্রামে একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ২৫ বস্তা চাল উদ্ধার করা হয়। শনিবার রাত ১২টার দিকে অভিযানকালে বাড়ির মালিক তোতা ও তার সহযোগী আবদুল মজিদকে আটক করা হয়।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া : আশুগঞ্জ উপজেলার আড়াইসিধা ইউনিয়নের আলমনগর এলাকার নাজমুল মিয়ার চাতালকল থেকে ১৭ বস্তা চালসহ ৫ জনকে আটক করা হয়। রোববার তাদের হাতেনাতে আটক করা হয়। তারা হল- মোশাররফ হোসেন, শাহজাহান মিয়া, ফারুক, শাহাবুদ্দিন ও নাজমুল হোসেন। এছাড়া বিজয়নগরে ১৪ বস্তা চাল আটক করেন স্থানীয়রা।

কালকিনি (মাদারীপুর) : কালকিনির উত্তর শশিকর গ্রামের স্বপন বাড়ৈর বাড়ি থেকে রোববার আট বস্তা, উত্তর চলবল গ্রামের প্রকাশ বাড়ৈর বাড়ি থেকে তিন বস্তা ও উত্তম সরকারের বাড়ি থেকে চার বস্তা চাল উদ্ধার করা হয়। এছাড়া রাজৈর উপজেলার পশ্চিম সীমান্তে নয়াকান্দি সুইচগেট এলাকা থেকে রোববার হায়দার শেখ, বিদ্যুৎ শেখ ও ভ্যানচালক সাইদুল শেখকে ভিজিডির ১১ বস্তা চালসহ আটক করে পুলিশ।

খাগড়াছড়ি : মাটিরাঙ্গা উপজেলার গোমতি ইউনিয়নের বলিচন্দ্র কার্বারিপাড়ায় রোববার ২৮ বস্তা সরকারি চাল জব্দ করেছেন স্থানীয়রা। চালের ডিলার মোমিন ২৮ বস্তা চাল স্থানীয় মো. হাশেমের কাছে বিক্রি করেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা চালসহ হাশেমকে আটক করেন।

ডিলার মোমিন পলাতক। এদিকে মাটিরাঙ্গার তাইন্দং ইউনিয়নের সদস্যের গুদাম থেকে ১৫৮ বস্তা সরকারি চাল উদ্ধার করা হয়। রোববার সন্ধ্যায় তাইন্দং বাজারে অভিযান চালিয়ে ৩নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জালাল উদ্দিনের ভাড়া গুদাম থেকে চালগুলো জব্দ করা হয়। মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিভীষণ কান্তি দাশ জানান, জালালের গুদামে অভিযান চালিয়ে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ১৫৮ বস্তা চাল জব্দ করা হয়।

নড়াইল : নড়াইলে সরকারি চাল বিক্রিতে ডিলারের বিরুদ্ধে ওজন কম দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। হতদরিদ্র মানুষকে ৩০০ টাকার বিনিময়ে ৩০ কেজি চাল দেয়ার কথা থাকলেও দেয়া হচ্ছে ২৭-২৮ কেজি।

সিংড়া (নাটোর) : ৬১ বস্তা চাল চুরির ঘটনায় জড়িত সিংড়া উপজেলার সুকাশ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের দুই নেতাকে রোববার বহিষ্কার করেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ। তারা হলেন- সুকাশ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক ও ডিলার আওয়াল হোসেন স্বপন ও একই ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি সদস্য শাহিন শাহ।

কুষ্টিয়া : কুষ্টিয়ার খোকসায় সরকারি ত্রাণ সহায়তা ছিনিয়ে নিয়েছে গ্রামবাসী। শনিবার বিকালে উপজেলার ওসমানপুর ইউনিয়নে দুস্থদের মাঝে বরাদ্দ ত্রাণ বিতরণকালে এ ঘটনা ঘটে। গ্রামবাসীর অভিযোগ, গ্রামের ধনী ও রাজনৈতিক দলের নেতাদের নামে ত্রাণ বরাদ্দ দিয়েছেন চেয়ারম্যান। তাই প্রকৃত দুস্থরা ত্রাণের চাল ছিনিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছে। এ নিয়ে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেছেন গ্রামবাসী ও ইউপি চেয়ারম্যান।

চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান জানান, মেম্বার তার লোকদের দিয়ে ত্রাণের ২৬ প্যাকেট চালসহ খাদ্যসামগ্রী লুট করিয়েছেন। এ সময় এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা এ কাজে সহায়তা করেছে। খোকসা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মজিবুর রহমান বলেন, দুস্থ কিছু লোক ত্রাণ লুট করেছে। খেটেখাওয়া দুস্থ মানুষের নাম তালিকায় না থাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। এ বিষয়ে কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার প্রতিনিধি প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মমিনুল হক।

ত্রাণ সহায়তা নেয়ার ছবি না উঠানোয় হতদরিদ্রদের চড়-থাপ্পড় চেয়ারম্যানের : ত্রাণ নিতে হলে ছবি উঠাতে হবে। আর যিনি ছবি উঠাবেন না তাকে হতে হচ্ছে লাঞ্ছিতের শিকার। এমন ঘটনা ঘটিয়েছেন কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার বোয়ালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন বিশ্বাস।

তার এমন রোষানল থেকে রেহাই পাননি অসহায় বৃদ্ধা থেকে নারীও। চেয়ারম্যানের এমন ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হলে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় ওঠে। সমালোচনার মুখে ত্রাণ নিতে আসা দরিদ্রদের চড়-থাপ্পড় মারার ঘটনায় ক্ষমা চেয়েছেন চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন।

স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার বোয়ালিয়া ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে বিভিন্ন ওয়ার্ডের দরিদ্র দিনমজুর ও অসচ্ছল ব্যক্তিদের মাঝে সরকারি ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করার সময় মোবাইল ফোনে ছবি ধারণ করছিলেন চেয়ারম্যানের লোকজন।

ত্রাণ দেয়ার ছবি ধারণ করার সময় মোবাইল ফোনের দিকে তাকাতে বলেন ইউপি চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন। কেউ না তাকালে অথবা ছবি তুলতে অস্বীকৃতি জানালে তাকে চড় ও থাপ্পড় মেরে ছবি তুলতে বাধ্য করেন তিনি। এ সময় চেয়ারম্যানের চড়-থাপ্পড় খেয়ে অনেকের মাস্ক মুখ থেকে মাটিতে পড়ে যেতেও দেখা যায়। আবার ক্যামেরার দিকে না তাকানোয় কয়েকজন নারীর শাড়ির আঁচল ধরেও টানতে দেখা যায়।

রাজশাহী : রাজশাহী মহানগরীর উপকণ্ঠ পবার মুশরইল নতুনপাড়া এলাকার কয়েকশ’ বাসিন্দা রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ত্রাণের দাবিতে বিক্ষোভ করেন। এলাকাবাসীর অভিযোগ, ১০ কেজি করে চাল সাধারণ মানুষের মধ্যে এখনও বিতরণ করা হয়নি।

ফলে পরিবারের লোকজন নিয়ে তারা কষ্টের মধ্যে দিনযাপন করছেন। তারা বলেন, মুশরইল নতুনপাড়া গ্রামে প্রায় সাড়ে তিনশ’ হতদরিদ্র মানুষের বসবাস। এর মধ্যে ১৮০ জনের আইডি কার্ড দেখে তালিকা করেন স্থানীয় ইউপি সদস্য আবুল কাশেম।

কিন্তু এরপরও তাদের কোনো সাহায্য দেয়া হয়নি। খবর পেয়ে চন্দ্রিমা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে এলাকাবাসীকে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার অনুরোধ জানায়। এরপর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। বিষয়টি স্বীকার করেছেন নগরীর চন্দ্রিমা থানার ওসি সিরাজুম মনির।

https://www.jugantor.com/todays-paper/first-page/297802