মৃত্যু। প্রতীকী ছবি
৩১ মার্চ ২০২০, মঙ্গলবার, ১১:৫৩

শ্বাসকষ্ট, সর্দি, কাশিসহ নানা উপসর্গ

বিভিন্ন স্থানে ১৩ জনের মৃত্যু

করোনা সন্দেহে নমুনা সংগ্রহ করে আইইডিসিআরে প্রেরণ * কয়েকজনের বাড়ি লকডাউন

দেশের বিভিন্ন স্থানে রোববার রাত থেকে সোমবার দুপুর পর্যন্ত শ্বাসকষ্ট, সর্দি ও গলাব্যথাসহ নানা রোগে অন্তত ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। করোনাভাইরাসে মৃত্যু হয়েছে- এ সন্দেহে কয়েকজনের বাড়িসহ আশপাশের বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে।

স্বজনসহ অনেককে নেয়া হয়েছে কোয়ারেন্টিনে। করোনাভাইরাসে মারা গেছেন কিনা তা নিশ্চিত হতে মৃত ব্যক্তিদের শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগে পাঠানো হয়েছে। যুগান্তরের ব্যুরো ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

কুষ্টিয়া : কুষ্টিয়ায় শ্বাসকষ্ট, সর্দি ও গলাব্যথা অনুভব করছিলেন এক ইজিবাইক চালক। সোমবার সকালে তাকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যান পরিবারের সদস্যরা। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

চিকিৎসকদের ধারণা, তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন। এ ঘটনায় কুষ্টিয়া ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের দুই চিকিৎসকসহ ৭ স্টাফকে কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়েছে। একইসঙ্গে মৃত ব্যক্তির বাড়িসহ আশপাশের ৮-১০টি বাড়ি লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে।

কুষ্টিয়া সিভিল সার্জন ডা. এইচএম আনোয়ারুল ইসলাম জানান, হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই তার মৃত্যু হয়। তার দেহে করোনাভাইরাস সংক্রমণের জীবাণু আছে কিনা সেটা নিশ্চিত হতে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।

হাজীগঞ্জ (চাঁদপুর) : হাজীগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ী মো. জাহাঙ্গীর হোসেন (৫০) সোমবার সকালে ঢাকার কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে মারা গেছেন। তিনি জ্বর ও সর্দি, গলাব্যথায় আক্রান্ত ছিলেন। তার বাড়ি নোয়াখালী বলে জানা গেছে।

শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) : মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে উপজেলার কালাপুর ইউনিয়নের মাজদিহী চা বাগানের ৭ নম্বার লাইনের মন্টু বাউড়ীর ছেলে দুলাল বাউড়ী (৩৫) সোমবার দুপুরে নিজ বাড়িতে মারা গেছেন। তিনি সর্দি, জ্বর, কাশি ও শ্বাস কষ্টে ভুগছিলেন।

শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সাজ্জাদ হোসেন চৌধুরী জানান, ওই ব্যক্তি করোনাভাইরাসে মারা যাননি। চিকেন পক্স থেকে সেকেন্ডারি ইনফেকশন নিউমোনিয়া হয়ে শ্বাসকষ্টজনিত কারণে তার মৃত্যু হয়েছে।

শেরপুর : শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার দক্ষিণ পলাশীকুড়া গ্রামের আওয়াল (৫৫) নামে একজন মারা গেছেন। শ্বাসকষ্টে ৩ দিন ভোগার পর রোববার রাতে তার মৃত্যু হয়। এটা স্বাভাবিক মৃত্যু বলে জানিয়েছেন জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা।

তবুও করোনাভাইরাস আক্রান্ত সন্দেহে ওই বাড়িসহ আশপাশের ১০টি বাড়ি ‘লকডাউন’ ঘোষণা করেছে স্থানীয় প্রশাসন। সোমবার সকালে শেরপুরের সিভিল সার্জনের নেতৃত্বে একটি মেডিকেল টিম মৃত ব্যক্তির বাড়িতে গিয়ে নমুনা সংগ্রহের পর তা আইইডিসিআরে পাঠিয়েছে।

নালিতাবাড়ী (শেরপুর) : শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে রোববার রাতে শ্বাসকষ্টে একজনের মৃত্যু হয়েছে। তার বয়স ৫৫ বছর। তিনি খুলনা বাগেরহাট জেলার রামপালে পাইলিং শ্রমিকের কাজ করতেন। সেখানে কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বৃহস্পতিবার তিনি উপজেলার দক্ষিণ পলাশিকুড়া গ্রামে নিজ বাড়িতে আসেন।

ওই ব্যক্তি স্থানীয় একটি ফার্মেসি থেকে শ্বাসকষ্টের ওষুধ ব্যবহার করেছিলেন। তারপরও তার শ্বাসকষ্ট বন্ধ হয়নি। রাতে তার মৃত্যু হয়। উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরিফুর রহমান জানান, শ্রমিকের মৃত্যুর পর আশপাশের ১০ বাড়ির বাসিন্দাদের চলাচলে বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে।

ইসলামী ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনায় মৃত ব্যক্তির দাফনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। শেরপুরের সিভিল সার্জন ডা. একেএম আনোয়ারুল রউফ আইইডিসিআরের সঙ্গে যোগাযোগ করে তার নমুনা সংগ্রহ করেছেন। তিনি বলেন, নমুনা ঢাকা পাঠানোর পরে বোঝা যাবে ওই ব্যক্তি করোনা আক্রান্ত ছিলেন কিনা।

দিনাজপুর ও বিরামপুর : দিনাজপুরের বিরামপুরে জ্বর সর্দি-কাশি ও শ্বাসকষ্টে ফরহাদ হোসেন (৪০) নামের এক ব্যক্তি মারা গেছেন। সোমবার ভোরে উপজেলার জোতবানী ইউনিয়নে আঁচলকোল তফসীগ্রামে তার মৃত্যু হয়। করোনাভাইরাস সন্দেহে মৃত ব্যক্তির বাড়িসহ ৩০টি বাড়ির দেড়শ’ মানুষকে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখার নির্দেশ দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।

দিনাজপুরের সিভিল সার্জন ডা. মো. আবদুল কুদ্দুছ জানান, ওই যুবক কুমিল্লার এক প্রবাসী ফেরত ব্যক্তির বাসায় কাজ করতেন। জ্বর, সর্দি ও কাশি নিয়ে সে ৭ দিন আগে সে কুমিল্লা থেকে ফিরেছে। আইইসিডিআরের নির্দেশনা অনুযায়ী তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।

সুনামগঞ্জ : সুনামগঞ্জে জ্বর, শ্বাসকষ্ট, কাশিতে আক্রান্ত ৫৫ বছর বয়সী এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। সোমবার ভোরে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে ওই নারীর মৃত্যু হয়। তিনি পৌর শহরের পূর্ব নতুনপাড়ায় আবাসিক এলাকার বাসিন্দা। এ ঘটনার পর তার স্বামীকে করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য সিলেট শামসুদ্দিন সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি তার পরিবারের অন্য সদস্যদের হোম কোয়রেন্টিনে রাখা হয়েছে।

যশোর : যশোরে ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। সোমবার ভোরে সে মারা যায়। তার নাম কাকলি (১২)। রোববার বিকালে শিশুটিকে হাসপাতালে ভর্তি করে তার পরিবার।

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. দিলীপ কুমার রায় জানান, রোববার বিকালে করোনা সন্দেহে শিশুটিকে আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। সোমবার সকালে শিশুর নমুনা সংগ্রহ করার কথা ছিল। তবে তার আগেই সে মারা যায়।

এদিকে যশোরে হোম কোয়ারেন্টিন শেষে গোলাম মোস্তফা (৬০) নামে মালয়েশিয়া ফেরত এক ব্যক্তি স্ট্রোকে মারা গেছেন। সোমবার সকালে ঝিকরগাছা উপজেলার উজ্জ্বলপুর গ্রামে নিজ বাড়িতে তিনি মারা যান। মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রফতানির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি।

ঝিকরগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুমী মজুমদার জানান, হোম কোয়ারেন্টিনে থাকলেও গোলাম মোস্তফার করোনার লক্ষণ ছিল না। মৃত্যুর পর চিকিৎসকরা তার প্রাথমিক পরীক্ষা করেছেন। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত কারণে তার মৃত্যু হয়েছে বলে চিকিৎসকরা নিশ্চিত করেছেন।

টঙ্গীবাড়ী (মুন্সীগঞ্জ) : রোববার রাতে মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ীতে রোকসানা (৪৫) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। তিনি দীর্ঘদিন কিডনি ও লিভার ক্যান্সারে ভুগছিলেন। মৃত্যুর আগে রোকসানার জ্বর ও কাশি ছিল। রোকসানার স্বামী মালয়েশিয়া প্রবাসী। মৃত্যুর পর গুজব ছড়ায় যে, রোকসানা করোনায় আক্রান্ত ছিলেন।

গোমস্তাপুর (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) : চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরের রাধানগর ইউনিয়নের বসনইল আদিবাসী পল্লীতে এক নারীর মৃত্যু হওয়ায় এলাকায় আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। জ্বরে আক্রান্ত হয়ে সোমবার সকালে ওই নারী মারা যায় বলে গ্রামবাসী জানিয়েছেন। মৃত্যুর পর ওই নারীর পরিবারের সদস্যদের ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

জয়পুরহাট : জেলায় নতুন করে সোমবার আরও ২৫ জনকে হোম কোয়ারেন্টিনে, চারজনকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে ও চারজনকে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। এদের মধ্যে করোনা সন্দেহে আক্কেলপুরের গোপীনাথপুর ইন্সটিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির (আইএইচটি) আইসোলেশন সেন্টারে ভর্তি করা হয়েছে। এদের বয়স ১৮ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে।

রোববার ওই তিনজনের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য আইইডিসিআরে পাঠানো হয়েছে। এদের একজনের পরিবারের তিন সদস্যসহ প্রতিবেশী ১৫ জনকে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। এ ছাড়া আক্কেলপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে (উপজেলা হাসপাতালে) আগের ভর্তিকৃত আরও একজন আইসোলেশনে রয়েছেন।

এ সময় হোম কোয়ারেন্টিনে থাকা ৫২ জনকে ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে। এ নিয়ে বর্তমানে জয়পুরহাটে ১৮০ জন হোম কোয়ারেন্টিনে রয়েছে। সোমবার জেলার সিভিল সার্জন ডা. সেলিম মিঞা এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

রাজশাহী : রাজশাহীতে করোনা সংক্রমিত সন্দেহে এক যুবককে আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে। তবে রাজশাহী বিভাগে গত ২৪ ঘণ্টায় হোম কোয়ারেন্টিনের আওতায় আসা ব্যক্তির সংখ্যা কমেছে। রোববার সকাল ৮টা থেকে সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত এ বিভাগের আট জেলায় নতুন করে হোম কোয়ারেন্টিনে এসেছেন ১৩১ জন। রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক কার্যালয় জানিয়েছে, ১০ মার্চ থেকে এ পর্যন্ত হোম কোয়ারেন্টিনের আওতায় আসে ৬ হাজার ৮৪০ জন। তবে হোম কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড়া পেয়েছেন ৩ হাজার ৩০৯ জন।

কেশবপুর (যশোর) : করোনাভাইরাস আতঙ্কে কেশবপুরে সাধারণ জ্বর, সর্দি-কাশির রোগীরা চিকিৎসা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার পাঁচপোতা গ্রামে সর্দি-জ্বরে আক্রান্ত এক ব্যক্তিকে এক সপ্তাহ ধরে চিকিৎসকরা এড়িয়ে যেতে থাকলে করোনা আতঙ্কে ওই গ্রামের বাসিন্দারা নির্ঘুম রাত কাটাতে থাকে।

অবশেষে পুলিশের সহযোগিতায় সংকটাপন্ন ওই ব্যক্তিকে সোমবার বিকালে উপজেলা স্বাস্থ কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আলমগীর হোসেন বলেন, মূলত তিনি অ্যাজমা রোগে আক্রান্ত। হাসপাতালেই তার চিকিৎসা চলছে।

বাবুগঞ্জ (বরিশাল) : করোনাভাইরাস আক্রান্ত সন্দেহে বরিশালের বাবুগঞ্জ বন্দরের এক ব্যক্তি রোববার রাতে বাসা থেকে পালিয়ে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ সংবাদ বন্দরে ছড়িয়ে পড়লে বন্দর এলাকায় মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সোমবার সকালে বাবুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) নূসরাত জাহান খান, উপজেলা মেডিকেল অফিসার ডা. নাহিদ ও বাবুগঞ্জ থানা অফিসার ইনচার্জ মিজানুর রহমান ছুটে যান ওই ব্যক্তির বাসায়। ওই বাড়ির আশপাশের তিনটি বাড়ির সব সদস্যকে ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশ দেন।

জামালপুর ও ইসলামপুর : ইসলামপুর উপজেলায় করোনা সন্দেহে এক নারীর নমুনা সংগ্রহ করে আইইডিসিআরে পাঠিয়েছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। রোববার রাতে পাথর্শী ইউনিয়নের ঢেংগারগড় গ্রামের ওই নারীর নমুনা ঢাকায় পাঠানো হয়। এ ঘটনায় আশপাশের ২০টি বাড়ি লক ডাউন ঘোষণা করে সেসব বাড়ির বাসিন্দাদের হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশ দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। জামালপুরের সিভিল সার্জন ডা. গৌতম রায় জানান, নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট পেলে ওই নারী করোনায় আক্রান্ত কিনা তা নিশ্চিত হওয়া যাবে।

সিলেট : সিলেট বিভাগের চার জেলায় আরও ৩৫ জনকে হোম কোয়ারেন্টিনে আনা হয়েছে। আর ছাড়পত্র নিয়েছেন ২৯৭ জন। শহীদ ডা. শামসুদ্দিন হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে থাকা ৩ রোগীর নমুনা ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের সিলেট বিভাগীয় সহকারী পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) ডা. আনিসুর রহমান যুগান্তরকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

বগুড়া : মোহাম্মদ আলী হাসপাতাল আইসোলেশন ইউনিটে তিন রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এরা শ্বাসকষ্টজনিত রোগে ভুগছেন। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ল্যাবরেটরি চালু সেখানে তাদের নমুনা পাঠানো হবে। করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় ২৪ মার্চ বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতালকে আইসোলেশন ইউনিট ঘোষণা করা হয়।

কাউখালী (পিরোজপুর) : কাউখালী উপজেলার বাস স্ট্যান্ডসংলগ্ন স্বরূপকাঠী উপজেলা প্রকৌশলী অফিসে হিসাবরক্ষণ পদে কর্মরত মিজানুর রহমানের ছেলে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির ছাত্র মো. সিক্ত। সে ১৬ মার্চ ঢাকা থেকে কাউখালী নিজ বাসায় আসে। ২৭ মার্চ তার জ্বর ও কাশি অনুভব করলে পরদিন কাউখালী হাসপাতালে তার বাবা চিকিৎসার জন্য পরামর্শ করলে চিকিৎসক ব্যবস্থাপত্র দেন। বিষয়টি জানাজানি হলে সোমবার তার বাসায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খালেদা খাতুন রেখা গিয়ে বাড়িতে লাল পতাকা টানিয়ে দেন।

ঠাকুরগাঁও : ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে এক মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। রোববার রাতে আইসোলেশন ইউনিটে তার মৃত্যু হয়। শ্বাসকষ্ট ও হৃদযন্ত্রের জটিলতার কারণে তাকে ভর্তি করা হয়েছিল। ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. নাদিরুল ইসলাম আজিজ চপল জানান, শ্বাসকষ্ট ও হৃদযন্ত্রের জটিলতার কারণে পরিবারের সদস্যরা মুক্তিযোদ্ধা শরিফুল ইসলামকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন।

প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে মেডিসিন ওয়ার্ডে আইসোলেটেড করে রাখতে বলা হয়েছিল। কিন্তু তা না মেনে তার ছেলে মাসুদ করোনাভাইরাসের আইসোলেশন ইউনিটে নিয়ে যায়। সেখানে মুক্তিযোদ্ধা শরিফুল ইসলামের মৃত্যু হয়। তার ছেলে আল মাসুদ হাসপতালের একজন চুক্তিভিত্তিক কর্মী। মুক্তিযোদ্ধার বাড়ি সদর উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের মহেষপুর গ্রামে। সোমবার বিকালে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় মুক্তিযোদ্ধার দাফন সম্পন্ন হয়। ঠাকুরগাঁও সিভিল সার্জন ডা. মাহফুজার রহমান সরকার বলেন, মুক্তিযোদ্ধার হৃদযন্ত্রে সমস্যা ছিল।

গজারিয়া (মুন্সীগঞ্জ) : গজারিয়ায় সোহরাব হোসেন (১২) শিশুর মৃত্যু হয়েছে। সোমবার ভোরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তার মৃত্যু হয়। সোহরাব জ্বর ও ম্যানিনজাইটিসে আক্রান্ত ছিল বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। সে মনাইরকান্দি গ্রামের শহীদুল ইসলামের ছেলে। স্থানীয় সূত্র জানায়, শিশুটি করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে এমন আশঙ্কায় জানাজা ও দাফনের সময় আত্মীয়স্বজন ছাড়া কেউ উপস্থিত ছিল না। দাফনও করা হয় তড়িঘড়ি করে।

https://www.jugantor.com/todays-paper/first-page/294218/