১ অক্টোবর ২০১৯, মঙ্গলবার, ৭:০৮

সোনালী ব্যাংকের ঢেঁকি ঋণের নামে ৩৭ কোটি টাকা লোপাট

সোনালী ব্যাংকের ঢেঁকি ঋণের নামে ১৮ কোটি টাকা হাওয়া হয়ে গেছে। এই বিপুল পরিমাণ অর্থ যাদের নামে দেয়া হয়েছে তারা নিখোঁজ। ব্যাংকের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের যোগসাজশে নামে-বেনামে এই ঋণগুলো বাটোয়ারা করা হয়েছে। আগে সাইনবোর্ড ছিল স্বনির্ভর বাংলাদেশের কিন্তু বেশ কিছুদিন ধরে সাইনবোর্ডও নেই।
সোনালী ব্যাংক সূত্রে বলা হয়েছে, স্বনির্ভর বাংলাদেশের ঠেঁকি ঋণ গ্রামীণ বিত্তহীনদের দারিদ্র্যবিমোচনে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য এই বিপুল পরিমাণ অর্থ দেয়া হয়েছে। গাইবান্ধার কামারজানি, সুন্দরগঞ্জ, ভরতখালী, গাইবান্ধা সদর, তুলসীঘাটসহ সোনালী ব্যাংকের ১৬ টি শাখা থেকে দারিদ্র্য বিমোচনের নামে এই টাকা প্রদান করা হয়।

সে সময় বলা হয়, স্বনির্ভর বাংলাদেশের মাঠপর্যায়ের একজন ক্রেডিট সুপারভাইজারের মাধ্যমে ব্যাংক ম্যানেজার ও সুপারভাইজারদের তত্ত্বাবধানে নামে-বেনামে ঋণ

প্রদান দেখিয়ে লোক ডেকে এনে ৫ হাজার টাকায় শুরু করে। তবে, এরও অধিক টাকা ঋণ দেয়া হয়।

দারিদ্র্য বিমোচনের নামে ঋণের এই বিপুল পরিমাণ টাকা দরিদ্র মানুষদের স্বাবলম্বী হতে বিতরণ করা হয়।

সোনালী ব্যাংকের এক শ্রেণির দুর্নীতিপরায়ণ কর্মকতার যোগসাজশে স্বনির্ভর ক্রেডিট সুপারভাইজারদের সুপারিশে এই টাকা নামে-বেনামে দেয়া হয়।

ঋণ দেয়ার সময় সঠিক তদন্ত না করে বিপুল পরিমাণ অর্থ ঘাপলার ঘটনাটি ধরা পড়ে বেশ কয়েক বছর আগে। এমন অনেক ব্যক্তির নামে ঋণ দেয়া হয়েছে তাদের নাম-ঠিকানা ভুয়া। সে কারণে এখন আর তাদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। প্রকৃতপক্ষে ভুয়া নামে ঋণ তুলে সোনালী ব্যাংক কর্মকর্তা ও ক্রেডিট সুপারভাইজার মিলে টাকা ভাগ-বাটোয়ারা করে নিয়েছেন। সে কারণেই ঋণ গ্রহীতা ও দাতাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তাদের সাইনবোর্ড পর্যন্ত হাওয়া হয়ে গেছে। সোনালী ব্যাংকের ঋণ আদায়ের চাপ থাকলেও কর্তাদের চিঠি চালাচালিই পর্যন্তই শেষ।

ম্যানেজার, ঋণ সুপার ভাইজার ও কিছু দুর্নীতিপরায়ণ কর্মকর্তার যোগসাজশে সোনালী ব্যাংকের ১৬ টি শাখা থেকে ১৭ কোটি ৬৩ লাখ টাকা হাওয়া হয়ে গেছে। যার একটিরও অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যাবে না। শুধু তাই নয়, যে ক্রেডিড সুপারভাইজারদের নামে ঋণ বিতরণ করা হয় তিনিও চম্পট দিয়েছেন। তার অফিসের সাইনবোর্ডও আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে সন্দেহ করছেন সোনালী ব্যাংক কর্মকর্তারা। তারা গেলেন কোথায়। বিতরণ করা ঋণের টাকাও আদায় হচ্ছে না। যারা নিয়েছেন বলে ব্যাংকের কাগজে নাম আছে বাস্তবে তারাও নেই। এভাবেই শুধু সোনালী ব্যাংক নয়, জনতা ব্যাংক ৫ কোটি ৪১ লাখ ৪১ হাজার, অগ্রণী ব্যাংক ২ কোটি ৯১ লাখ টাকা ও কৃষি ব্যাংক ১০ কোটি ৩৩ লাখ টাকা ভুয়া ঋণের নামে নিজেরা গায়েব করে দিয়েছেন ।

এ ব্যাপারে সোনালী ব্যাংকের ডিজিএম আবদুল কুদ্দুস ঋণের টাকা আদায় হচ্ছে বলে স্বীকার করে বলেন, শুধু তাই নয় স্বনির্ভর বাংলাদেশ এর সাইনবোর্ড পর্যন্ত খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ঋণী তো দূরের কথা মানুষ খুঁজে পাওয়াই কঠিন হয়ে পড়েছে। তবে তিনি বলেন, টাকা আদায়ের জন্য উচ্চপর্যায়ে চিঠি দিয়েছেন তারা বিষয়টি দেখছেন।

http://mzamin.com/article.php?mzamin=192676