ফারাক্কা বাঁধের সবগলো গেট খুলে দেয়ার এই ছবি পশ্চিমবঙ্গের একটি ওয়েবসাইট থেকে পাওয়া
১ অক্টোবর ২০১৯, মঙ্গলবার, ৭:০১

ফারাক্কার সবগুলো গেট খুলে দেয়ায় পদ্মায় কূল ছাপানো বন্যার আশংকা

ভারতের উত্তর প্রদেশ ও বিহারে প্রবল বর্ষণের ফলে সৃষ্ট বন্যার কারণে পানির চাপ কমাতে ফারাক্কা বাঁধের সবগুলো গেট খুলে দেয়ার খবর পাওয়া গেছে। এর ফলে এরই মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের মালদা ও মুর্শিদাবাদে উৎকণ্ঠা সৃষ্টি হয়েছে। অন্যদিকে ফারাক্কা দিয়ে আসা অসময়ের বন্যায় রাজশাহীতে পদ্মায় পানির বিপদসীমা অতিক্রম করার আশংকা দেখা দিয়েছে।

গতকাল সোমবার পশ্চিমবঙ্গের একাধিক ওয়েবসাইট সূত্রে জানা যায়, ভারতের উত্তর প্রদেশ ও বিহারে রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টি হবার কারণে পানির চাপ কমাতে ফারাক্কা বাঁধের সবকয়টি লকগেট একসঙ্গে খুলে দিয়েছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। এর জেরে মুর্শিদাবাদের একাংশ ও বাংলাদেশে প্লাবনের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। জানা গেছে, গঙ্গা ছাড়াও পশ্চিমবঙ্গের মালদা জেলায় প্রায় সমস্ত নদীতে পানি বাড়ছে। একটানা বর্ষণে ইংরেজ বাজার শহরের একাধিক এলাকা পানির নিচে। সোমবার ফারাক্কা ব্যারেজের ১০৯টি লকগেটই খুলে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এর জেরে নদীর নিম্নগতিতে প্লাবনের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এরই মধ্যে বাংলাদেশের চাঁপাই নবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলায় বন্যায় বেশ কয়েকটি গ্রাম তলিয়ে গেছে বলে জানা গেছে।

এদিকে ভারতের এমন কাণ্ডের ফলে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে বাংলাদেশের পশ্চিমাঞ্চলে। বর্ষা মওসুমে প্রায় প্রতি বছরই ফারাক্কার গেট খুলে দিলে প্লাবনের শিকার হয় ভাটি অঞ্চলের মানুষ। এবার ভারত ব্যারেজের সবগুলো গেট খুলে দেয়ায় সেই আশঙ্কা আরও বেড়েছে। পানি ও নদী গবেষক মাহবুব সিদ্দিকীর মতে, ফারাক্কা বাঁধের কারণে মরে গেছে পদ্মা নদী। ফারাক্কা বাঁধ চালুর পর পদ্মায় এযাবত পানির উচ্চতা কমেছে ১৮ মিটার পর্যন্ত। আর পদ্মা শুকিয়ে যাবার সাথে সাথে মরে গেছে রাজশাহীর আরো ২৫টি নদী। শুধু তাই নয়, এর সাথে রাজশাহীর অনেক অজানা নদী হারিয়ে গেছে। এর ফলে এসব নদীর বুকে পানির ধারণ ক্ষমতা ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়েছে। এখন অসয়ে পানি ছেড়ে দিলে অতিরিক্ত পানি ব্যনার সৃষ্টি করবে বলে তিনি মনে করেন। তাঁর মতে, এর আগে ফারাক্কার সবগুলো গেট খুলে দেয়ার ফলে পদ্মায় বন্যার মতো পরিস্থিতি হয়নি। কারণ সেসময় এই অঞ্চলে বৃষ্টি ছিলো না। কিন্তু এবার পদ্মার উজান ও ভাটিতে সমানে প্রবল বৃষ্টি হচ্ছে। ফলে বৃষ্টির পানির সঙ্গে ফারাক্কার বাড়তি পানি যোগ হয়ে পরিস্থিতি আশঙ্কাজনক হতে পারে।

https://www.dailysangram.com/post/391359