১৭ জুন ২০১৯, সোমবার, ৭:০৩

নড়াইলে শিক্ষক লাঞ্ছিত

শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ কর্মসূচিতে বাধা

পিস্তল উঁচিয়ে ভীতি প্রদর্শন

নড়াইল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রদেশ কুমার মল্লিককে লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদে রোববার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচিতে বাধা ও পিস্তল উঁচিয়ে ভয় দেখানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে ভয় না পেয়ে শিক্ষার্থীরা নড়াইল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে নড়াইল-যশোর সড়ক অবরোধ করে রাখে। পরে জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে ফিরিয়ে নিয়ে যান। রোববার সকাল ৯টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত কর্মসূচি পালিত হয়। জানা যায়, শনিবার সকালে নড়াইল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক প্রদেশ কুমার মল্লিক তার প্রাইভেট কোচিং সেন্টারে ৯ম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে চড় মারেন। বিষয়টি ওই ছাত্রী বাড়িতে গিয়ে বাবার কাছে বলে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ছাত্রীর বাবা ও স্থানীয় ঠিকাদার মঈনউল্লাহ দুলু কোচিং সেন্টারে গিয়ে ওই শিক্ষকের ওপর চড়াও হন। ওই শিক্ষককে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। বিষয়টি নিয়ে রোববার সকালে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং ছাত্রীর অভিভাবকদের নিয়ে জেলা প্রশাসকের কক্ষে বৈঠক হয়। বৈঠকে বিষয়টি মিমাংসা করা হয়। বৈঠক চলাকালেই বিদ্যালয়ের ছাত্ররা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেয়।

বিষয়টি মীমাংসা হয়ে গেছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হলেও শিক্ষার্থীরা প্রতিষ্ঠানে ফিরে না গিয়ে ও অভিভাবককে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে বলে। এতে অভিভাবক মঈন উল্লাহ দুলুর লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে ও শিক্ষার্থীদের ওপর চড়াও হয়। এ সময় রেজাউল আলম নামে এক ঠিকাদার পিস্তল উঁচিয়ে ছাত্রদের ভয় দেখান। কিন্তু ভয় উপেক্ষা করে শিক্ষার্থীরা রাস্তা অবরোধ করে রাখে। পরে প্রশাসনের কর্মকর্তা ও শিক্ষকরা বুঝিয়ে শিক্ষার্থীদের ক্লাসে নিয়ে যান। জানতে চাইলে অভিভাবক মঙ্গন উল্লাহ দুলু বলেন, ‘বর্তমানে ছাত্রছাত্রীর গায়ে হাত তোলার কোনো নিয়ম নেই। ওই শিক্ষক প্রাইভেট কোচিং সেন্টারে অনেক ছাত্রছাত্রীর মধ্যে আমার মেয়ের গায়ে হাত তুলেছে। আমার মেয়ে কাঁদতে কাঁদতে বাড়িতে এসে জানালে তখন রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে ওই শিক্ষককে থানায় দেয়ার চেষ্টা করি। পরে স্থানীয় লোকজন বিষয়টি মীমাংসা করে দেন। তবে ওই শিক্ষককে মারধর করা হয়নি।’

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন বলেন, ‘ঠিকাদার রেজাউল আলমের লাইসেন্স করা পিস্তলটি বেআইনিভাবে ব্যবহারের জন্য জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।’ জেলা প্রশাসক আনজুমান জানান, দু’পক্ষকে ডেকে বিষয়টি মীমাংসা করা হয়েছে। এছাড়া ওই সময়ে ব্যবহৃত ঠিকাদার রেজাউল আলমের লাইসেন্স করা পিস্তলটি সদর থানায় জমা রাখা হয়েছে।

https://www.jugantor.com/todays-paper/last-page/188466