১৮ জুন ২০২০, বৃহস্পতিবার, ৭:০৫

করোনায় আক্রান্ত হয়ে দেশ-বিদেশে যারা ইন্তিকাল করেছেন তাদের প্রতি গভীর শোক প্রকাশ

করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৪২ জন ডাক্তারসহ দেশে-বিদেশে যারা ইন্তিকাল করেছেন তাদের প্রতি গভীর শোক প্রকাশ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান ১৮ জুন এক শোকবাণী প্রদান করেছেন।

শোকবাণীতে তিনি বলেন, “বৈশ্বিক মহামারি করোনায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত এ পর্যন্ত ৪২ জন ডাক্তার ও ৭ জন স্বাস্থ্য কর্মী ইন্তিকাল করেছেন। দিন দিন মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েই চলছে। সরকারি হিসাব অনুযায়ী এ পর্যন্ত দেশে ১৩৪৩ জন মানুষ ইন্তিকাল করেছেন। প্রকৃত সংখ্যা এর চেয়ে অনেক বেশি।

ডাক্তারসহ স্বাস্থ্য সেবায় নিয়োজিত স্বাস্থ্যকর্মী ও দেশে-বিদেশে যারা ইন্তিকাল করেছেন আমি তাদের ইন্তিকালে গভীর শোক প্রকাশ করছি। তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি এবং তাদের পরিবার-পরিজনদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।

বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশনের হিসাব অনুযায়ী এ পর্যন্ত ৩ হাজার ২৭৪ জন চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ডাক্তার ১ হাজার ৩৫ জন, নার্স ৮৮৫ জন ও টেকনোলজিস্ট ১ হাজার ৩৫৪ জন। প্রতিনিয়ত আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছেই। ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মীদের আক্রান্তের এ সংখ্যায় দেশের জনগণ চরম উদ্বেগের মধ্যে আছে।

বাংলাদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা একেবারেই ভেঙে পড়েছে। হাসপাতালগুলোতে ভেন্টিলেটর, আইসিইউ ও করোনা পরীক্ষার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই। করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পেতে ১৫ দিন পর্যন্ত সময় লাগছে। ল্যাবে নমুনার স্তুপ জমা হয়ে আছে। ১৭ কোটি মানুষের দেশে মাত্র ৬০টি ল্যাবে চলছে করোনা ভাইরাস শনাক্ত টেষ্ট। কীটের সংকটে কোনো কোনো ল্যাবে টেষ্ট বন্ধ আছে। করোনা উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরছে মানুষ। চিকিৎসা না পেয়ে অনেকে বাসায় ফিরে যাচ্ছে। অনেকে রাস্তায়ই ইন্তিকাল করছে। চিকিৎসার এ ভয়াবহ সংকট নিরসনে সরকারের পক্ষ থেকে কার্যকর কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না।

করোনার প্রভাবে মানুষের অর্থনৈতিক জীবনে ভয়াবহ বিপর্যয় নেমে এসেছে। চলছে কাজ ও খাদ্যের সংকট। আমরা অত্যন্ত উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি যে, করোনার এই দুঃসময়েও সরকার নির্ধারিত ১০ টাকা কেজি দরের চাল বিক্রিতে দুর্নীতির কারণে ১১১ জন জনপ্রতিনিধি বরখাস্ত হয়েছে। জাতি হিসেবে এটি আমাদের জন্য অত্যন্ত লজ্জাজনক।

এক কথায় করেনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকার ব্যর্থ হয়েছেন। আমরা মনে করি সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে রাষ্ট্রের সকল শক্তি করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় নিয়োজিত করা দরকার। জনগণের চিকিৎসা নিশ্চিত করার পাশাপাশি স্বাস্থ্য সেবায় নিয়োজিত ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহবান জানাচ্ছি।”