৩ ডিসেম্বর ২০২৩, রবিবার, ৮:৩২

জামায়াত ঘোষিত অবরোধ কর্মসূচি সফল করার আহ্বান

সরকারের দমন-পীড়ন এবং গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ

-মাওলানা এটিএম মা’ছুম

সরকারের দমন-পীড়ন এবং গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ এবং ঘোষিত অবরোধ কর্মসূচি সফল করার আহ্বান জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা’ছুম ৩ ডিসেম্বর এক বিবৃতি প্রদান করেছেন।

বিবৃতিতে তিনি বলেন, “জামায়াতসহ বিরোধীদলের কর্মসূচিতে দেশবাসী স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করে জালিম সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা জ্ঞাপন করেছে। জনগণ তাদের ভোটাধিকার ফেরত চায়। জনগণের প্রধান দাবিই হল বাধাহীন ও সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট দিয়ে নিজেদের পছন্দের সরকার প্রতিষ্ঠা করা। কিন্তু কেয়ারটেকার সরকার ছাড়া আওয়ামী লীগের অধীনে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন একেবারেই অসম্ভব। কারণ অতীতে আওয়ামী লীগের অধীনে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়ার কোনো নজির নেই। বরং নির্বাচনের আগে-পরে প্রতিপক্ষকে পেশিশক্তি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন, হামলা-মামলা দিয়ে কোণঠাসা করে রাখা, ভোটদানে বাধা প্রদান, কেন্দ্র দখল এবং ভোট ডাকাতির অজস্র অভিযোগ রয়েছে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে। আওয়ামী লীগ ২০১৪ ও ২০১৮ সালে সংসদ নির্বাচনের নামে জাতিকে ধোঁকা দিয়েছে। গণতন্ত্রের প্রতি এমন প্রহসন পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল।

তিনি আরও বলেন, শাসকগোষ্ঠী অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকার জন্য পাগল হয়ে গিয়েছে। ক্ষমতালোভী সরকার আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশনকে দিয়ে ফরমায়েসি তফসিল ঘোষণা করিয়েছে। সরকার কোনো রকম শুনানি ছাড়াই জামায়াতের নিবন্ধন সংক্রান্ত মামলাটি খারিজ করে দিয়েছে। মূলত আওয়ামী লীগ বহুদলীয় গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। জালিম সরকার ভাল করেই জানে জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে তারা ক্ষমতায় আসতে পারবে না। তারা বিরোধীদলকে পাশ কাটিয়ে যেনতেন প্রকারে নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে চায়। গণতন্ত্র হত্যাকারী সরকারকে সে সুযোগ দেয়া যাবে না। জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে সকল ভেদাভেদ পাশ কাটিয়ে দেশের সকল গণতান্ত্রিক শক্তি, দল ও প্রতিষ্ঠানকে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করতে হবে। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের দাবিতে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। একক কর্মসূচি দিয়ে রাজপথ প্রকম্পিত করে জালিম সরকারের তক্তে-তাওস ধসিয়ে দিতে হবে। দেশে গণতন্ত্র ও মৌলিক মানবাধিকার প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত চলমান অবরোধ কর্মসূচি চলতেই থাকবে, ইনশাআল্লাহ।

তিনি বলেন, বিনা ভোটের সরকার অবৈধভাবে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। জামায়াতসহ বিরোধীদলের অসংখ্য নেতাকর্মীকে বন্দি করে রেখেছে। পুলিশ মাত্রাতিরিক্ত বল প্রয়োগ করছে। দেশের নাগরিকদের স্বাভাবিক জীবন-যাপন করতে দেয়া হচ্ছে না। সারাদেশে ত্রাস সৃষ্টি করা হয়েছে। হামলা-মামলা দিয়ে নেতাকর্মীদের ঘরছাড়া করা হয়েছে। আজ এক আতঙ্কিত জনপদের নাম বাংলাদেশ। সরকার গত ২ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও পটুয়াখালী জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর অধ্যাপক আবদুস সালামকে গ্রেফতার করেছে। ৩ ডিসেম্বর মিছিল শেষে পুলিশ অতর্কিতে হামলা চালিয়ে ময়মনসিংহ মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যাপক শহীদুল্লাহ কায়সার, কর্মপরিষদ সদস্য ও থানা আমীর আবদুল বারী ও চরপাড়া সাংগঠনিক থানার কর্মপরিষদ সদস্য খন্দকার তরিকুল্লাহকে মারাত্মকভাবে আহত করেছে। দিনাজপুর উত্তর সাংগঠনিক জেলা শ্রমিক কল্যাণের সভাপতি ও জেলা কর্মপরিষদ সদস্য জাকিরুল ইসলামসহ গত ৪৮ ঘণ্টায় জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের ২৮ জন নেতাকর্মীকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে। আমি এইসব জুলুম-নির্যাতন এবং বেআইনি গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং গ্রেফতারকৃতদের দ্রুত মুক্তি দাবি করছি। ঘোষিত কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে সফল করে আন্দোলনকে চূড়ান্ত লক্ষ্যে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমি জামায়াতে ইসলামীর সর্বস্তরের নেতাকর্মী এবং সংগ্রামী দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহবান জানাচ্ছি।”