২৯ আগস্ট ২০২৩, মঙ্গলবার, ১২:৩৩

প্রস্তাবিত ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন-২০২৩’ এর খসড়া মন্ত্রিসভায় চূড়ান্ত অনুমোদনের তীব্র প্রতিবাদ

-মাওলানা এটিএম মা’ছুম

প্রস্তাবিত ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন-২০২৩’ এর খসড়া ২৮ আগস্ট মন্ত্রিসভায় চূড়ান্ত অনুমোদন প্রদানের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা’ছুম ২৯ আগস্ট প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলেন,

‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮’ এবং প্রস্তাবিত ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন-২০২৩’ এর মধ্যে মৌলিক কোনো পার্থক্য নেই। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন করা হয়েছিল জনগণের উপর জুলুম-নির্যাতন চালানো ও জনগণের মৌলিক অধিকার হরণ করার উদ্দেশ্যে। ঐ আইন যে উদ্দেশ্যে প্রণয়ন করা হয়েছিল ঠিক একই উদ্দেশ্যে কথিত ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন’ পাশ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।

বড় ধরনের কোনো পরিবর্তন ছাড়াই সাইবার নিরাপত্তা আইনটি মন্ত্রিসভায় চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটির কঠোর সমালোচনা করে বাংলাদেশের রাজনীতিবিদ, আইনজীবী, বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিকসহ সকল মহল এবং জাতিসংঘ ও বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা আইনটির সমালোচনা করে বক্তব্য প্রদান করলেও সরকার সেদিকে কোনো কর্ণপাত করেনি। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের সমালোচকদের ধোঁকা দেয়ার উদ্দেশ্যে সরকার শুধু নাম পরিবর্তন করে ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন’ নামকরণ করে তা চূড়ান্ত করেছে। সরকার দেশ ও বিদেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার মতামতের কোনো তোয়াক্কাই করেনি। সকলের মতামত অগ্রাহ্য করেই সরকার প্রস্তাবিত ‘সাইবার নিরাপত্তা আইনের’ খসড়াটি চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে।

‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন’ এর প্রায় সব ধারাই কথিত ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন’ এর খসড়ায় বহাল আছে। প্রস্তাবিত সাইবার নিরাপত্তা আইনের ১৭, ১৯, ২৭ ও ৩৩ ধারা জামিন অযোগ্য রাখা হয়েছে। শুধু উক্ত আইনটির খোলস পরিবর্তন করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে এই ধরনের আইনের কোনো প্রয়োজনই নেই।

তিনি আরও বলেন, প্রস্তাবিত আইনটি প্রক্রিয়াগতভাবেও প্রশ্নবিদ্ধ। ডিজিটাল নিরপত্তা আইনটি নিয়ে জনগণের মধ্যে যে ভয়ভীতি ও শঙ্কা ছিল প্রস্তাবিত ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন’ তা দূর করতে পারবে না। প্রস্তাবিত আইনে সাজার পরিমাণ কমিয়ে লোক দেখানো কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। সাইবার নিরাপত্তা আইনটি যে মূল উদ্দেশ্যের কথা বলে প্রণয়ন করার কথা বলা হয়েছে, সে উদ্দেশ্যের সাথে প্রস্তাবিত ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন’ এর খসড়াটি সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক। সরকারের উচিত ছিল দেশী-বিদেশী সকলের মতামতের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন’ ও কথিত ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন’ এর খসড়াটি সম্পূর্ণ বাতিল করা।

কোনো ধরনের ধোঁকা বা প্রতারণার আশ্রয় না নিয়ে জনগণের মতামত এবং কল্যাণের কথা বিবেচনা করে এবং আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক ও সকলের নিকট গ্রহণযোগ্য করার জন্য কথিত ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন’ এবং প্রস্তাবিত ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন’ সম্পূর্ণ বাতিল করার জন্য আমি সরকারের প্রতি উদাত্ত আহবান জানাচ্ছি।”