১৭ আগস্ট ২০২১, মঙ্গলবার, ১০:৪৫

দৈনিক কালের কন্ঠে 'সিরিজ বোমা বিস্ফোরণ এবং জামায়াতের রাজনীতি' শিরোনামে প্রকাশিত কলামের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ

১৭ আগষ্ট দৈনিক কালের কন্ঠ পত্রিকায় ‘সিরিজ বোমা বিস্ফোরণ এবং জামায়াতের রাজনীতি’ শিরোনামে প্রকাশিত কলামে জামায়াতের বিরুদ্ধে যেসব বিষোদগার করা হয়েছে তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় প্রচার বিভাগের সেক্রেটারি জনাব মতিউর রহমান আকন্দ ১৭ আগষ্ট এক বিবৃতি প্রদান করেছেন।

বিবৃতিতে তিনি বলেন, “১৭ আগষ্ট দৈনিক কালের কন্ঠ পত্রিকায় ‘সিরিজ বোমা বিস্ফোরণ এবং জামায়াতের রাজনীতি’ শিরোনামে প্রকাশিত কলামে জনাব মেজর জেনারেল মোহম্মদ আলী শিকদার (অব.) জামায়াতের বিরুদ্ধে যেসব আজগুবি তথ্য পরিবেশন করেছেন তা সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। প্রকাশিত প্রতিবেদনে জামায়াতের বিরুদ্ধে যে সকল কাল্পনিক তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে তার সাথে সত্যের লেশ মাত্র নেই। আমরা এ জঘন্য মিথ্যাচারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

প্রতিবেদনে ‘১৯৫৩ সালে মওদূদীর হুকুমে করাচি ও আশপাশের এলাকায় ৫০ হাজার কাদিয়ানিকে হত্যা করা হয়’ মর্মে যে বক্তব্য প্রদান করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। মাওলানা মওদূদী (রহ:) কাউকে হত্যা করার এ রকম কোনো নির্দেশ কখনো দেননি। জনাব মেজর জেনারেল মোহম্মদ আলী শিকদার (অব.) ছাড়া ইতিপূর্বে এ ধরনের বক্তব্য আর কেউ প্রদান করেননি। প্রতিবেদনটিতে ‘১৯৭১ সালের শেষ দিকে গোলাম আযম পাকিস্তানে পালিয়ে যান’ মর্মে যে তথ্য প্রদান করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। এর মাধ্যমে মরহুম অধ্যাপক গোলাম আযম সাহেবের বিরুদ্ধে জঘন্য মিথ্যাচার করা হয়েছে। মূলত অধ্যাপক গোলাম আযম ১৯৭১ সালের ২১ নভেম্বর পাকিস্তানে একটি সম্মেলনে যোগদানের জন্য গিয়েছিলেন। ৩ ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে তিনি দেশে ফিরে আসতে চাইলে তাকে বহণকারী বিমানটি বাংলাদেশে ল্যান্ড করতে পারেনি। যার ফলে বাধ্য হয়ে তাঁকে দীর্ঘ ৮ বছর প্রবাস জীবন কাটাতে হয়। প্রতিবেদনের অপর এক জায়গায় বলা হয়েছে ‘গোলাম আযম ভালো করে জানতেন, জামায়াত নামটির বিরুদ্ধে বাংলাদেশের মানুষের প্রচণ্ড ঘৃণা ও অ্যালার্জি রয়েছে।’ এটি একটি ডাহা মিথ্যা বক্তব্য। বাংলাদেশের প্রত্যেকটি জাতীয় সংসদ ও স্থানীয় নির্বাচনে জামায়াতের সক্রিয় অংশগ্রহণ রয়েছে। এ সকল নির্বাচনে বিপুল সংখ্যক জামায়াত প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। যা জামায়াতের জনপ্রিয়তার উৎকৃষ্ট প্রমাণ। প্রতিবেদনে তিনি ২০০৫ সালের ১৭ আগষ্ট সারাদেশে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনার সাথে জামায়াতে ইসলামীকে জড়িয়ে এবং ‘জেএমবিকে জামায়াতের গোপনীয় নিজস্ব সশস্ত্র সংগঠন’ মর্মে যে তথ্য দিয়েছেন তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। তার এ বক্তব্য পাগলেও বিশ্বাস করবে না। মূলত জনাব মেজর জেনারেল মোহম্মদ আলী শিকদার (অব.) তার এ কলাম লেখার মাধ্যমে কোনো অদৃশ্য শক্তির এজেন্ডা বাস্তবায়ন করার অপচেষ্টা করেছেন।

আমরা সুস্পষ্ট ভাষায় জানাতে চাই, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী একটি নিয়মতন্ত্রিক, গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল। জামায়াতে ইসলামী কখনো কোনো সন্ত্রাসবাদে বিশ্বাস করে না এবং কখনো কোনো সন্ত্রাসবাদের সাথে জড়িতও ছিল না। জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের সূচনালগ্ন থেকেই দেশের সার্বিক উন্নতি ও অগ্রগতিতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে আসছে। জামায়াত তার বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক কাজের মাধ্যমে এ দেশের মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নিতে সক্ষম হয়েছে। অতএব, মেজর জেনারেল মোহম্মদ আলী শিকদারের (অব.) মত লোকদের এ সকল মিথ্যাচারের মাধ্যমে দেশের মানুষ কখনো বিভ্রান্ত হয়নি এবং ভবিষ্যতেও হবে না ইনশা-আল্লাহ।

ভবিষ্যতে জামায়াতের বিরুদ্ধে এ ধরনের মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য পরিবেশন করা থেকে বিরত থাকার জন্য আমি মেজর জেনারেল মোহম্মদ আলী শিকদারের (অব.) প্রতি এবং এ সব কাল্পনিক মিথ্যা বানোয়াট খবর প্রকাশ করা থেকে বিরত থাকার জন্য দৈনিক কালের কন্ঠ পত্রিকা কর্তৃপক্ষের প্রতি আহবান জানাচ্ছি।”