৪ জুলাই ২০২০, শনিবার, ১১:২৫

বিজিএমসি নিয়ন্ত্রণাধীন ২৫টি পাটকল বন্ধ করে দেয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ

রাষ্টায়ত্ত সকল পাটকল বন্ধ করে দেয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করে অবিলম্বে শ্রমিকদের প্রাপ্য সমুদয় অর্থ নির্দিষ্ট সময়ে পরিশোধ নিশ্চিত করার দাবি জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার ৪ঠা জুলাই এক বিবৃতিতে প্রদান করেছেন।

বিবৃতিতে তিনি বলেন, “২ জুলাই বিজিএমসি নিয়ন্ত্রণাধীন ২৫টি পাটকল এক সাথে বন্ধ করে দেয়ার ঘোষণা করা হয়েছে। এ সকল কারখানায় স্থায়ী ও অস্থায়ী ভিত্তিতে প্রায় ৫০ হাজার লোকের কর্মসংস্থান রয়েছে। ‘গোল্ডেন হ্যান্ডসেকের’ মাধ্যমে এসকল শ্রমিকদের অবসায়নের ঘোষণা করা হয়েছে। ইতোপূর্বে ৫টি পাটকল শ্রমিকদের ‘গোল্ডেন হ্যান্ডসেকের’ মাধ্যমে অবসায়ন করা হলেও তাদের ন্যায্য পাওনা, পিএফ, গ্র্যাচুইটি ইত্যাদি আজ অবধি পরিশোধ করা হয়নি। আবার নতুন করে বিপুল সংখ্যক শ্রমিককে অবসরে পাঠানোর সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়েছে। এতে শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য পাওনা বুঝে পাবার ব্যাপারে চরম হতাশা ও অনিশ্চয়তার মধ্যে হাবুডুবু খাচ্ছে। কারণ শ্রমিকদের সাথে দেনা পরিশোধের ব্যাপারে সরকারের ইতোপূর্বেকার ওয়াদা রক্ষার অভিজ্ঞতা মোটেই ভালো নয়। বরং শ্রমিকদের প্রতারিত হবার দুঃখজনক ঘটনাই বেশি।

এ ছাড়া হাজার হাজার চাকুরিচ্যুত বদলি শ্রমিক এ সিদ্ধান্তের কারণে যে চরম অমানবিক জীবনের মুখোমুখি হলো, সে ব্যাপারে সরকারের ঘোষণায় কোনো সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা নেই।

এ দিকে বিশ্বব্যাপী পাট-শিল্পের জনপ্রিয়তা ও ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়েছে। অব্যাহতভাবে লোকসানের অজুহাত দেখিয়ে বাংলাদেশের পাট-শিল্প কারখানাগুলো বন্ধ ঘোষণা করা একটি অপরিণামদর্শী সিদ্ধান্ত। এক সাথে এতগুলো কারখানা বন্ধ ঘোষণা করার ঘটনা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল।

বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী সাংবাদিক সম্মেলনে বলেছেন, সরকারি খাতের পাটকলগুলো সংস্কার ও আধুনিকায়নের লক্ষ্যে এবং এগুলোকে কীভাবে প্রতিযোগিতায় আনা যায় ও শক্তিশালী করা যায় সে বিবেচনায় পাটকলগুলো বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

পাটমন্ত্রীর এ বক্তব্য জনগণের মাঝে সংশয় সৃষ্টি করেছে। আমরা মনে করি প্রতিষ্ঠান চলমান থাকা অবস্থায় সংস্কার ও আধুনিকায়ন করা যায়। এজন্য বন্ধ ঘোষণা অযৌক্তিক।

বিবৃতিতে তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, কারখানাগুলো বন্ধ ঘোষণা করার এ সিদ্ধান্ত খানিকটা এরকম ‘মাথা ব্যথা হয়েছে, তো মাথা কেটে ফেল!’ এটা অযৌক্তিক ও অমানবিক।

আমরা মনে করি দুর্নীতিরোধ, সঠিক পরিচালনা পদ্ধতি ও সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত গ্রহণের মাধ্যমে কারখানাগুলো সচল রাখা সম্ভব ছিল।

দেশে বিরাজমান করোনা পরিস্থিতির দুর্যোগের মধ্যে মানুষ চাকুরি হারিয়ে, ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে কপর্দকহীন মানবেতর জীবনযাপন করতে বাধ্য হচ্ছে। এ মুহূর্তে কারখানা বন্ধ করে দেয়ার ঘোষণা আত্মঘাতি সিদ্ধান্ত ছাড়া আর কিছু নয়।

মানুষের দুঃখ-দুর্দশার কথা বিবেচনা করে অযৌক্তিক এ সিদ্ধান্ত বাতিল করে কারখানাগুলো সচল রাখার ব্যাপারে সময়োপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি দাবি জানাচ্ছি।”