৯ মার্চ ২০২৪, শনিবার, ১০:১০

নারায়ণগঞ্জ মহানগরী জামায়াতের ‘যাকাত ও উশর’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

যাকাত ভিত্তিক সমাজ গঠনের মাধ্যমে ধনী দরিদ্রের ব্যবধান কমানো সম্ভব

-মাওলানা এটিএম মা’ছুম

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা’ছুম বলেন, “যাকাত ভিত্তিক সমাজ গঠনের মাধ্যমে দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানো এবং সমাজের ধনী দরিদ্রের ব্যবধান কমানো সম্ভব। কিন্তু আজকে আমাদের দেশে রাষ্ট্রীয়ভাবে যাকাত সংগ্রহ এবং বন্টনের কোন ব্যবস্থা না থাকায় এই কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা সম্ভব হচ্ছে না।”

০৮ মার্চ জুমা’বার রাতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নারায়ণগঞ্জ মহানগরীর উদ্যোগে আয়োজিত ‘যাকাত ও উশর’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য ও নারায়ণগঞ্জ মহানগরীর আমির জনাব আবদুল জব্বার এর সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারি ইঞ্জিনিয়ার মনোয়ার হোসাইন এর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য প্রদান করেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ঢাকা অঞ্চল দক্ষিণ পরিচালক জনাব সাইফুল আলম খান মিলন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য বিশিষ্ট আলেমেদ্বীন ড. মাওলানা খলিলুর রহমান মাদানী, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা মঈন উদ্দিন আহমদ।

মাওলানা এটিএম মা’ছুম বলেন, “নামাজ রোজার মতই যাকাত আদায় করা একটি ফরজ ইবাদত। একজন মুসলমান হিসেবে নামাজ ও রোজার ফরজ বিধানকে আমরা সঠিকভাবে পালন করলেও যাকাত আদায়ের ক্ষেত্রে আমাদের সচেতনতার যথেষ্ট অভাব রয়েছে। যাকাত হলো সম্পদের পবিত্রতা ও পরিশুদ্ধি অর্জন করার সর্বোত্তমপন্থা এবং এটা দরিদ্র ও হতবঞ্চিতদের হক। এই হক তাদের কাছে নির্ধারিত নিয়মে পৌঁছানো জরুরি। পবিত্র কুরআনে যাকাত প্রদানের ৮টি খাত রয়েছে। সুতরাং সম্পদশালী ব্যক্তিকে ঈমানদার হতে গেলে অবশ্যই তার সম্পদের যথাযথ হিসাব করে নির্ধারিত খাতে যাকাত দিতে হবে। আর ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই যাকাতভিত্তিক সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব।”

জনাব সাইফুল আলম খান মিলন বলেন, “আল্লাহর রহমত ও মাগফেরাত প্রাপ্তির জন্য আমাদেরকে এই রমাদানে বেশি বেশি ইবাদত করতে হবে। যিনি যতবেশি প্রচেষ্টা চালাবেন তিনিই তত বেশি আল্লাহর প্রিয় বান্দা হওয়ার গৌরব অর্জন করবেন ইনশাআল্লাহ।”

জনাব খলিলুর রহমান মাদানী বলেন, “রমজান মাস হলো কুরআন নাজিলের মাস। ফলে এ মাসে আমাদের কুরআনের যথাযথ অনুশীলন ও চর্চা করতে হবে। কুরআন তেলাওয়াতের পাশাপাশি তার অর্থ জানা ও বুঝার চেষ্টা করতে হবে। কুরআনে যা হালাল বলা হয়েছে তা গ্রহণ এবং যা হারাম বা নিষিদ্ধ করা হয়েছে তা বর্জন করতে হবে। কুরআনের জ্ঞান অর্জনের পাশাপাশি সমাজে কুরআনের বিধানকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য আমাদের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা ইসলামী বিপ্লবের স্বপ্ন দেখে এবং সফল বিপ্লব যখন হবে তখন রাষ্ট্রের কাছে এই যাকাত আদায় ও বণ্টনের দায়িত্ব যাবে। তখন যাকাত ব্যবস্থাপনা সরকার-ই সুষ্ঠু ভাবে পরিচালনা করবেন।”

জনাব মাওলানা মঈন উদ্দিন আহমদ বলেন, “যাকাত কোন অনুগ্রহ নয়। রাসূল (সা) যাকাতের সংজ্ঞা দিতে গিয়ে বলেছেন, তা ধনী ব্যক্তিদের কাছ থেকে আদায় করে অভাবগ্রস্থদের মাঝে বিতরণ করতে হবে। ধনীদের সম্পদের উপর আল্লাহ বিত্তহীনদের অধিকার দিয়েছেন। আর বিত্তবানদের সে হক আদায় করতে হবে। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন সিয়াম ফরজ করেছেন তাকওয়া অর্জনের জন্য আর রমজান মাস হলো তাকওয়া অর্জনের মূল সময়।” তিনি রমজান থেকে শিক্ষা নিয়ে তাকওয়া ভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণে সকলকে আপোষহীনভাবে কাজ করার আহবান জানান।

সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা আব্দুল জব্বার বলেন, “আমাদের এই যাকাত আদায় কার্যক্রমে যাকাত প্রদান করে এবং সেই সাথে পবিত্র কুরআনে বর্ণিত নির্ধারিত ৮টি খাতে যথাযথ ভাবে বণ্টণ করে ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ এই ফরজ ইবাদাত পালন করে দুনিয়া ও আখেরাতে সফল হই।”

উক্ত আলোচনা সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন মহানগরীর নায়েবে আমির মাওলানা আবু নাকিব, সহকারী সেক্রেটারি জনাব মোঃ জামাল হোসাইন, মহানগরীর কর্মপরিষদ সদস্য, থানা আমীরসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।