৮ মার্চ ২০২৪, শুক্রবার, ৯:৫০

নরসিংদী জেলা জামায়াতের সদস্য সম্মেলন অনুষ্ঠিত

দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষায় জামায়াত সদস্যদের সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করতে হবে

-ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মু. তাহের

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়াবে আমীর ও সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মু. তাহের বলেন, “৭ জানুয়ারি দেশে কোনো নির্বাচন হয়নি। নির্বাচনের নামে দেশের জনমতকে অপমানিত করা হয়েছে। গণতন্ত্রকে নির্বাসনে পাঠানো হয়েছে। নির্বাচনের নামে দেশের আর্থিক অপচয় করা হয়েছে। সারা বিশ্ব দেখেছে ভোটারগণ ভোট কেন্দ্রে ভোট দিতে যায়নি। ভোটারদের অধিকার সেদিন নস্যাৎ করা হয়েছে। একটি ডামি সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য সরকার সকল আয়োজন করেছিল। তাতে জনগণের কোনো ম্যান্ডেট ছিলনা। তাই সরকার দেশের আর্থিক শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে পারছে না। বাজার ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। দ্রব্যমূল্যের লাগাম ধরে রাখতে পারছে না। ডলার সংকট দিন দিন বাড়ছে। ব্যাংকের শৃঙ্খলা ভেঙ্গে পড়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কথা তফসিলি ব্যাংকগুলো মানছে না। লুটপাট দেশকে সংকটে ফেলে দিয়েছে। এ অবস্থায় দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় জামায়াতের সদস্যদের সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করতে হবে।”

তিনি আজ ৮ মার্চ নরসিংদী জেলা জামায়াত কর্তৃক আয়োজিত সদস্য সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। জেলা আমীর মাওলানা মোছলেহুদ্দীনের সভাপতিত্বে এবং জেলা সেক্রেটারি মাওলানা আমজাদ হোসাইনের সঞ্চালনায় সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি এ.এইচ.এম হামিদুর রহমান আযাদ, ড. সামিউল হক ফারুকী, ড. খলিলুর রহমান মাদানী প্রমূখ।

ডাঃ সৈয়দ আব্দুল্লাহ মু. তাহের বলেন, “বিরোধী দলগুলোর উপর সরকারের দমন-পীড়ণ সরকারের জন্যই কাল হবে। একটি ঘৃণিত সরকার হিসেবে চিহ্নিত হবে। জনগণের অধিকার আজীবন কেউ দাবিয়ে রাখতে পারে না। দমন-পীড়ন স্থায়ী সমাধান নয়।”

অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, “দেশ আজ মহাসংকটকাল অতিক্রম করছে। এমতাবস্থায় ইসলামী শক্তিগুলোর ঐক্যবদ্ধ হওয়া খুবই প্রয়োজন। দেশের জন্য, দেশের মানুষের মুক্তির জন্য একটি কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য জামায়াত কাজ করে যাচ্ছে। জামায়াতের সদস্যদের জনগণের ঘরে ঘরে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছে দিতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, “জনগণকে সরকারের শোষণ, জুলুম-নির্যাতনের হাত থেকে মুক্ত করতে হলে এবং জনগণের অধিকার ফিরিয়ে আনতে হলে মজবুত সাংগঠনিক ভিত গড়ে তুলতে হবে। আল্লাহর কাছে দেয়া ওয়াদা অনুযায়ী নিজেদের জীবনকে পরিচালিত করতে হবে। হালাল হারামকে সামনে রেখে হক পথে চলতে হবে। হক কথা বলতে হবে এবং হক প্রতিষ্ঠায় মজবুত কদমে এগিয়ে আসতে হবে।”

জনাব এ এইচ এম হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, “জনমত তৈরি করা একটি রাজনৈতিক দলের স্বাভাবিক কাজ। জনগণের আস্থার সংকট হলে জনমত টিকে না। সাসটেইনেবল জনমতের প্রতিফলন ঘটে নির্বাচনের মাধ্যমে। দেশের মৃত প্রায় নির্বাচন ব্যবস্থায় মানুষ যোগ্য নেতা বাছাই করতে পারছে না। বিদ্যমান রাজনৈতিক শূন্যতায় জনগণ তাদের মতের প্রতিফলন ঘটাতে পারছে না। ইসলামের দাওয়াত সম্প্রসারণ ও সামাজিক কাজের মাধ্যমে জনমত গঠন করার সুযোগ সৃষ্টি হয় বিধায় স্থায়ী জনমত গঠনে সবাইকে ভূমিকা রাখতে হবে।”

ড. সামিউল হক ফারুকী বলেন, “আমাদের জান্নাতের উপযোগী বৈশিষ্ট্য অর্জন করতে হবে। মুত্তাকী আমলে সালেহকারী হতে হবে। দুনিয়ার দুঃখ কষ্ট ধৈর্যের সাথে মোকাবেলা করতে হবে। তবেই আল্লাহ তায়া’লার মহান নেয়ামত জান্নাতের বাসিন্দা হতে পারব।”

ড. খলিলুর রহমান মাদানী বলেন, “জামায়াতের আকিদা ও আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের আকিদার মধ্যে কোন তফাৎ নেই। সাহাবীদের অনুসরণ, সালাফদের পথে জামায়াতের অবিরাম পথ চলা। সাহাবায়ে কেরামের মর্যাদা রক্ষা ও তাদের ঐতিহাসিক ত্যাগ ও কুরবানীকে ধারণ করা জামায়াতে ইসলামীর অন্যতম বৈশিষ্ট্য। এই বৈশিষ্ট্য ধারণ করে বাংলার জমিনে জামায়াাতে ইসলামী একটি কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করবে ইনশাআল্লাহ। ”