৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, শুক্রবার, ১১:০২

সিলেট মহানগরী জামায়াতের বার্ষিক সদস্য সম্মেলন অনুষ্ঠিত

ফ্যাসিস্ট সরকারকে বিদায় করতে ইস্পাত কঠিন ঐক্য গড়ে তুলতে হবে

-অধ্যাপক মুজিবুর রহমান

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমীর ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেছেন, “আওয়ামী ডামি সরকার একটি বিপর্যয় সৃষ্টিকারী অবৈধ সরকার। তারা দেশের রাজনীতি, অর্থনীতি, শিক্ষা ও ধর্ম সকল ক্ষেত্রে বিপর্যয় সৃষ্টি করেছে। তারা জাতির ঘাড়ে জগদ্দল পাথরের ন্যায় চেপে বসে আছে। অবৈধ ক্ষমতার মসনদ পাকাপোক্ত করে ডামি ভোটের নামে জাতির সাথে প্রহসন হয়েছে। জাতিকে বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করতে ফ্যাসিস্ট সরকারকে বিদায় করতে হবে। এজন্য দেশপ্রেমিক জনতার মধ্যে ইস্পাত কঠিন ঐক্য গড়ে তুলতে হবে।”

৯ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার সিলেট মহানগরী জামায়াত আয়োজিত বার্ষিক সদস্য (রুকন) সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও সিলেট মহানগরী আমীর মুহাম্মদ ফখরুল ইসলামের সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারি মোহাম্মদ শাহজাহান আলীর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও সিলেট জেলা দক্ষিণের আমীর অধ্যক্ষ আব্দুল হান্নান, সিলেট মহানগরীর নায়েবে আমীর মাওলানা সোহেল আহমদ, মহানগরীর সহকারী সেক্রেটারি এডভোকেট মোহাম্মদ আব্দুর রব, জাহেদুর রহমান চৌধুরী ও মাওলানা আব্দুল মুকিত প্রমূখ।

অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, “আল্লাহর জমিনে আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে কোনকালেই সহজ ছিলনা। জুলুম নিপীড়ন ও শাহাদাতের সিঁড়ি বেয়েই ইসলামের বিজয় নিশ্চিত হয়েছে। বাংলাদেশের সবুজ ভূখন্ডে ইসলাম ও ইসলামী আন্দোলন নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। আমাদের দায়িত্বশীলগণ হাসিমুখে শাহাদাতকে বরণ করে নিয়েছেন। দুনিয়ার কোন শক্তির মোহ তাদেরকে আল্লাহর দ্বীন থেকে ফেরাতে পারেনি। ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদেরকে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনকে সর্বাগ্রে গুরুত্ব দিতে হবে। নিজেকে পরিপূর্ণ মুত্তাকি ও আদর্শবান সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।”

তিনি বলেন, “আওয়ামী বাকশালী সরকার ২০১৪ সালে বিনাভোটে সরকার গঠন করেছে। ২০১৮ সালে তারা রাতের ভোটে ক্ষমতা দখল করেছে। ২০২৪ সালে এসে তারা ডামি ভোটের মাধ্যমে ফের গদি দখল করেছে। মাত্র ৩ থেকে ৪ শতাংশ ভোটকে ৪০ শতাংশ দেখিয়ে নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক দেখানো হয়েছে। পাতানো নির্বাচনে গঠিত বর্তমান ডামি সংসদ ও সরকার কোনদিন বৈধতা পাবেনা। অবিলম্বে অবৈধ সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে নিরপেক্ষ কেয়ারটেকার সরকারব্যবস্থা পুনর্বহাল করে আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানসহ জাতীয় নেতৃবৃন্দকে মুক্তি দিতে সরকারকে বাধ্য করতে হবে।”

তিনি আরো বলেন, “আমরা সমাজে ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করতে চাই। আমরা কুরআন হাদীসের আলোকে একটি সমৃদ্ধ সমাজ গঠন করতে চাই। এই অপরাধেই আমাদের উপর জুলুম করা হচ্ছে। ইতিহাস স্বাক্ষী জুলুম নিপীড়ণকারী কোন শাসকের শেষ পরিনতি ভালো হয়নি। আর মজলুমরা সারাজীবন জুলুমের শিকার হবেনা। আজকের ক্ষমতাসীন ফ্যাসিস্ট সরকারকেও বিদায় নিতে হবে। অবৈধ সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে নিরপেক্ষ কেয়ারটেকার সরকার পুনবর্হাল করে ক্ষমতাসীন সরকার যত তাড়াতাড়ি বিদায় নিবে ততই দেশ জাতির জন্য মঙ্গলজনক হবে। নিরপেক্ষ কেয়ারকেটার সরকার ছাড়া দেশে আর কোন পাতানো নির্বাচন জাতি মেনে নিবেনা। আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানসহ কারান্তরীণ সকল রাজবন্দীদের অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে।”

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেন, “দেশ জাতি আজ গভীর সঙ্কটে। আর এই বাকশালী সরকার তাদের ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে পরিকল্পিতভাবে এই সঙ্কট তৈরী করেছে। তাই সঙ্কট দূর করতে সরকারকেই উদ্যোগ নিতে হবে। চলমান সঙ্কটে জামায়াতে ইসলামীর সর্বস্তরের জনশক্তিকে অতন্দ্র প্রহরীর ভূমিকা পালন করতে হবে।”

সভাপতির বক্তব্যে মহানগরী আমীর মুহাম্মদ ফখরুল ইসলাম বলেন, “আমরা মানবতার কল্যাণ সাধন করে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে চাই। আমরা সমাজে ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করতে চাই। মানুষকে তাদের ন্যায্য অধিকার ফিরিয়ে দিতে চাই। সমাজের বৈষম্য দূর করতে চাই। এজন্য আমাদের উপর জুলুম-নিপীড়নের স্টীম রোলার চালানো হচ্ছে। কিন্তু হামলা-মামলা, গ্রেফতার-নির্যাতন, খুন-গুম উপেক্ষা করে ইনসাফভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণের লক্ষ্য থেকে আমাদেরকে কেউ দমিয়ে রাখতে পারবেনা। কাঙ্খিত মঞ্জিলে পৌছতে আমাদের মিশন ও ভিশন চলছে, চলবে ইনশাআল্লাহ।”