২৯ আগস্ট ২০১৮, বুধবার, ৪:৫৪

ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের অবাস্তব পরিকল্পনা গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকার জন্য নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান

নির্বাচন কমিশনের সচিব হেলালুদ্দিন আহমদ গত ২৮ আগস্ট আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১০০ আসনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের যে পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন তা প্রত্যাখ্যান করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারী জেনারেল মাওলানা এটিএম মা’ছুম আজ ২৯ আগস্ট প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলেন, “ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবস্থা অকার্যকর ও ত্রুটিপূর্ণ প্রমাণিত হওয়ায় বহু উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশেই তা প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। তাই ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের অবাস্তব পরিকল্পনা গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকার জন্য আমি নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।  

ইতোমধ্যেই বিশ্বের বহু উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশে নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করা ত্রুটিপূর্ণ এবং অকার্যকর প্রমাণিত হওয়ায় এ ব্যবস্থা প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। বাংলাদেশের বিশেষজ্ঞরাও নির্বাচনে ঐ পদ্ধতি ব্যবহারের বিপক্ষে মতামত দিয়েছেন। এমনকি আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতেও এ ব্যবস্থা অকার্যকর প্রমাণিত হওয়ায় এর বিরুদ্ধে প্রচারণা শুরু হয়েছে। ভারতের একটি রাজ্যে ভোট চলাকালীন অবস্থায় ভোটিং মেশিনে গোলযোগ দেখা দেয়ায় কর্তৃপক্ষ ঐ সব ভোটকেন্দ্রে ভোট গ্রহণ স্থগিত করতে বাধ্য হয়। এ রকম একটি ঝুঁকিপূর্ণ ও ত্রুটিপূর্ণ ব্যবস্থা জাতীয় নির্বাচনে চালু করা কোনভাবেই সমীচীন হবে না। নির্বাচনের কাছাকাছি সময়ে এসে এ ধরনের ঝুঁকিপূর্ণ পরিকল্পনা গ্রহণের চেষ্টায় জনমনে প্রশ্নের সৃষ্টি হচ্ছে।

দেশবাসী অবগত আছেন যে, ২০ দলীয় জোটসহ অন্যান্য বিরোধী দলগুলো ইতোমধ্যেই ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের বিপক্ষে মত প্রকাশ করেছেন। যেহেতু নির্বাচনী বিশেষজ্ঞগণ এবং সকল বিরোধী দল ইভিএম পদ্ধতিকে অকার্যকর ও ত্রুটিপূর্ণ মনে করছে, তাই আমরা আশা করি; সরকার সকলের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইভিএম পদ্ধতি ব্যবহারের বিপক্ষে মত দেবেন।

জাতীয় নির্বাচনের মত গুরুত্বপূর্ণ একটি নির্বাচনে হঠাৎ করে ১০০ আসনে ইভিএম ব্যবহার করার পরিকল্পনা শুধু অবাস্তবই নয়, বরং এর মধ্যে ষড়যন্ত্র রয়েছে বলে জনগণের মধ্যে বিরূপ ধারণা সৃষ্টি হয়েছে। জাতি এ ধরনের অর্বাচীন পদ্ধতি চালু করতে রাজী নয়। নির্বাচন কমিশন দেড় লক্ষ ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) কেনার পরিকল্পনা করছে। জাতীয় প্রচার মাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে যে, প্রকৃত মূল্যের চাইতে তিনগুণ বেশি দামে ইভিএম কেনার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। ইভিএম ব্যবহারের পক্ষে নতুন আইন প্রণয়ন ও আরপিও সংশোধনের পাঁয়তারাও লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এ থেকে পরিষ্কার বুঝা যাচ্ছে যে, কোন স্বার্থান্বেষী মহল এ পরিকল্পনার পেছনে কাজ করছে। এমনিতেই বর্তমান সরকার ও তার আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশনের প্রতি দেশবাসীর কোন আস্থা নেই। তা সত্ত্বেও জনমত উপেক্ষা করে ঐ পদ্ধতি ব্যবহারের চেষ্টা হবে আত্মঘাতি।

আমরা আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের অবাস্তব পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান করছি এবং ঐ ধরনের আত্মঘাতি পরিকল্পনা গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকার জন্য নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।”