১০ আগস্ট ২০১৮, শুক্রবার, ৭:৩৬

গ্রেফতারকৃত শিক্ষার্থীদের জামিন না দিয়ে জেলে পাঠানোর ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ

আন্দোলনকারী গ্রেফতারকৃত শিক্ষার্থীদের জেলে পাঠিয়ে সরকার দেশের ছাত্র-জনতার প্রতি চরম অবজ্ঞা ও অশ্রদ্ধা প্রদর্শন করেছে

নিরাপদ সড়কের দাবীতে আন্দোলনকারী গ্রেফতারকৃত শিক্ষার্থীদের জামিন না দিয়ে জেলে পাঠানোর ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান আজ ১০ আগস্ট প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলেন, “নিরাপদ সড়কের দাবীতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জাতীয় স্বার্থে আন্দোলন করেছে। দল-মত-নির্বিশেষে সকল শ্রেণী ও পেশার মানুষ তাদের আন্দোলনের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন দিয়েছেন। শিক্ষার্থীরা কোন অপরাধ করেনি। তাদের জামিন না দিয়ে জেলে পাঠিয়ে সরকার দেশের ছাত্র-জনতার প্রতি চরম অবজ্ঞা ও অশ্রদ্ধা প্রদর্শন করেছে। সরকারের এ ধরনের ন্যক্কারজনক ভূমিকায় গোটা দেশবাসীর সাথে আমরাও গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।

নিরাপদ সড়কের দাবীতে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রতি সরকারও সমর্থন দিয়ে তাদের আন্দোলন যৌক্তিক বলে আখ্যায়িত করেছিল। কিন্তু সরকার তাদের গ্রেফতার করে রিমান্ডে নিয়ে তাদের উপর জুলুম-নির্যাতন চালিয়ে এখন জেলে পাঠিয়ে স্ববিরোধী ভূমিকা পালন করছে। শুধু তাই নয়, শিক্ষার্থীদের গ্রেফতারের জন্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী চিরুনী অভিযান চালাচ্ছে এবং অনেককে গ্রেফতার করে তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে। ফলে শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের মধ্যে চরম নিরাপত্তাহীনতা এবং উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে।

দেশবাসী এবং বিশ্ববাসী সাক্ষী ছাত্র সমাজের এ ন্যায় সংগত আন্দোলন চলাকালে নিরীহ ছাত্র-ছাত্রীরা নয়, সরকারের লেলিয়ে দেয়া প্রশাসন এবং সরকারী দলের সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্য দিবালোকে দফায় দফায় ছাত্র-ছাত্রীদের উপর জঘন্য হামলা চালিয়ে নিরীহ ছাত্র-ছাত্রী এবং উপস্থিত সাংবাদিকদের মারাত্মকভাবে আহত করেছে। সেই সমস্ত সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সরকার কোন ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে রিমান্ডে নিয়ে তাদেরকে সীমাহীন শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন চালিয়েছে। সরকারের এই ন্যক্কারজনক অনৈতিক ভূমিকার আমরা তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করছি ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।  

সরকারের এ দ্বিমুখী নীতির দ্বারাই প্রমাণিত হচ্ছে যে, শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়কের ৯ দফা দাবী মেনে নেয়াটা ছিল সরকারের একটি কূটকৌশল। তা পূরণের ব্যাপারে সরকারের কোন আন্তরিকতা নেই। তার প্রমাণ আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে বিরতি দেয়ার সাথে সাথেই রাজপথে সেই পূর্বের ন্যায় নৈরাজ্য আবার ফিরে এসেছে। নিরপরাধ শিক্ষার্থীদের নি:শর্তভাবে মুক্তির দাবীতে সোচ্চার হওয়ার জন্য আমি দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।

যাবতীয় হয়রানী বন্ধ করে গ্রেফতারকৃত সকল শিক্ষার্থীকে অবিলম্বে নিঃশর্তভাবে মুক্তি দেয়ার জন্য আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবী জানাচ্ছি।”