বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারী জেনারেল ডাঃ শফিকুর রহমান ‘নতুন নির্বাচন কমিশন’ সম্পর্কে আজ ৮ ফেব্রুয়ারী প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলেন, “জনাব খান মোহাম্মদ নূরুল হুদাকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিযুক্ত করে যে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে তাতে জাতির প্রত্যাশা পূরণ হয়নি।
জাতি আশা করেছিল মহামান্য রাষ্ট্রপতি মোঃ আব্দুল হামিদ রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে সংলাপ করে সৎ, দক্ষ, দল নিরপেক্ষ, সাহসী ও গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিগণকে নিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠন করবেন। রাজনৈতিক দলগুলো এবং দেশের জনগণের মতামত উপেক্ষা করে মহামান্য রাষ্ট্রপতি এমন এক ব্যক্তিকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিযুক্ত করলেন যার ব্যাপারে বিভিন্ন ধরনের বিতর্ক ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে। তাকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিযুক্ত করে প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছাই পূরণ করা হয়েছে। এতে জনগণ হতাশ হয়েছেন।
নবনিযুক্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনার জনাব খান মোহাম্মদ নূরুল হুদা জনতার মঞ্চের একজন নেতা ছিলেন। আজ ৮ ফেব্রুয়ারী দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত এক সাক্ষাতকারে তিনি বলেছেন যে, তিনি ছাত্র জীবনে ফজলুল হক হল ছাত্র ইউনিয়নে ছাত্রলীগ থেকে নির্বাচিত নাট্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক ছিলেন। তাকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিযুক্ত করে গঠিত নির্বাচন কমিশন কখনো নিরপেক্ষ হতে পারে না। এ নির্বাচন কমিশনের প্রতি দেশের জনগণের আস্থা নেই। জনগণের আস্থাহীন নির্বাচন কমিশনের দ্বারা অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। এ নির্বাচন কমিশন গঠন করে বিদায়ী প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিব উদ্দিন আহমদ গত ২২ জানুয়ারী আগারগাঁও-এ নির্বাচন কমিশনের নতুন ভবনে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে ‘পরবর্তী নির্বাচন কমিশনও আমাদের মতই হবে’ মর্মে যে উক্তি করেছিলেন তাই সত্য প্রমাণ করা হলো।
সরকারের ইচ্ছামতই যদি নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে, তাহলে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে অর্থহীন সংলাপের কি প্রয়োজন ছিল? নবনিযুক্ত নির্বাচন কমিশন জনগণের নিকট গ্রহণযোগ্য নয়।
মহামান্য রাষ্ট্রপতির সাথে রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপে এবং নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সাথে সার্চ কমিটির বৈঠকে যে সব ব্যক্তিবর্গকে নিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠনের মূল্যবান প্রস্তাব করা হয়েছিল তাদের নাম প্রকাশ করা হলে দেশের রাজনৈতিক দলগুলো এবং জনগণ তাদের সম্পর্কে সঠিকভাবে জানতে পারতেন ও মতামত প্রকাশের সুযোগ পেতেন। ফলে একটি দল নিরপেক্ষ কার্যকর নির্বাচন কমিশন গঠনে দেশের রাজনৈতিক দলগুলো এবং জনগণের পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন সম্ভব হতো। কিন্তু তা না করে তড়িঘড়ি করে বিতর্কিত ব্যক্তিদের নিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠন করে এটাই প্রমাণ করা হলো যে, বর্তমান সরকার দেশের জনগণের মতামত ও রায়ের কোন তোয়াক্কাই করে না।
যারা একটি দল নিরপেক্ষ, সৎ, দক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করতে পারেন না, তাদের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। এতে নির্বাচনকালীন দল নিরপেক্ষ সরকারের যৌক্তিকতা ও প্রয়োজনীয়তা আবারো প্রমাণিত হলো।”