বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেছেন, বদরের প্রান্তরে রাসূল (সা:) বিপুল সংখ্যক কাফেরদের মোকাবেলায় প্রস্তুতি নিয়ে আল্লাহর উপর ভরসা করে যুদ্ধের ময়দানে এগিয়ে গেছেন। তারপরই বিজয় এসেছে। তাই প্রত্যেক মু’মিনের আল্লাহর উপর নির্ভর করা উচিত। আমরা আল্লাহর উপর নির্ভর করে ঈমানের দৃঢ়তা নিয়ে ইসলামকে বিজয়ী করবো, কোন পরাশক্তির উপর নির্ভর করে নয়। ইসলামী আন্দোলনকে কখনই পরাজিত করা যাবে না। কারন আল্লাহ আমাদের সাথে আছেন। নানামুখি অপপ্রচার, জুলুম, নির্যাতনের পরও ইসলামী আন্দোলন এগিয়ে যাবে। এ দেশের মাটি ও মানুষের সাথে ইসলাম মিশে আছে। যতই চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র হউক না কেন, কোন শক্তিই ইসলামকে নিশ্চিহ্ন করতে পারবে না।
আজ বুধবার রাজধানীর একটি মিলনায়তনে ১৭ রমাদান ঐতিহাসিক বদর দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর মো. নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর আব্দুস সবুর ফকির, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি দেলাওয়ার হোসেন ও ড. আব্দুল মান্নান, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য ড. মোবারক হোসাইন, মহানগরীর সহকারী সমাজকল্যাণ সম্পাদক শাহীন আহমদ খান সহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
রফিকুল ইসলাম খান বলেন, ১৭ রমযান ঐতিহাসিক বদর দিবস। এ দিন বদর প্রান্তরে কাফেরদের ধিক্কারজনক পরাজয় হয়েছে। বদর যুদ্ধের কারনে ইসলাম আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভ করে। রাসূল (সা:)ও আন্তর্জাতিক নেতা হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেন। এ যুদ্ধে আল্লাহ তায়ালা মুসলমানদের সাহায্য করেছেন, যার প্রতিশ্রুতি তিনি আগে দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, রমযান মাসের গুরুত্ব বেড়েছে কুরআন নাযিলের কারনে। পাশাপাশি বদর যুদ্ধের কারনেও এ মাসের গুরুত্ব বেড়েছে। এ মাসে রোযা পালনে মানুষ যতটা যত্নবান হয়, কুরআন বুঝার জন্য মানুষ যদি সেই চেষ্টা করতো তাহলে এদেশে কুরআন বিজয়ী হওয়ার পথে কয়েক ধাপ এগিয়ে যেতো। তিনি সকল বাধা পেরিয়ে বদরের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে ইসলামী সমাজ কায়েমের পথে এগিয়ে যেতে সকলের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।
সভাপতির বক্তব্যে নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, বদরের সাহাবাদের মত দৃঢ়তা অর্জন করতে হবে। তাকওয়া ও সাহসীকতার সাথে ময়দানে উপনিত হতে হবে। আমরা যদিও আজও সেই ঈমান অর্জন করতে পারি তাহলে দুনিয়ার কোনো শক্তি নেই আমাদেরকে পরাজিত করতে পারে। বদর প্রান্তরে অস্ত্রে সজ্জিত বাহিনী যেভাবে মুসলমানদের সামনে পরাভূত হয়েছিল আজও মহান আল্লাহর সাহায্য এসে গেলে সকল অপশক্তি একইভাবে পরাজিত হবে ইনশাআল্লাহ। বদর দিবসের চেতনা আমাদের বিশ্বাসী করেছে। ঐতিহাসিক বদর দিবসের শিক্ষা হলো আল্লাহর প্রতি সকল পরিস্থিতিতে বিশ্বাস রাখা। বদরের যুদ্ধে অংশগ্রহন করা সাহাবীর সংখ্যা কম হলেও আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস থাকায় বদরের যুদ্ধে বিজয় অর্জন হয়েছে। হযরত মোহাম্মদ (সা) এর ডাকে ইসলামকে টিকিয়ে রাখার লক্ষ্যে সাহাবারা বদরের প্রান্তরে একত্রিত হয়ে বাতিলের বিপক্ষে যুদ্ধ করে বিজয় অর্জন করে। একইভাবে বাংলাদেশে ইকামাতে দ্বীনের আন্দোলনে যদি আমরা সে বিশ্বাস লালন করে সামনে অগ্রসর হতে পারি তাহলে মহান আল্লাহ আমাদেরেও বিজয় দান করবেন ইনশাআল্লাহ।
আব্দুস সবুর ফকির বলেন, ইসলামের ইতিহাসে পবিত্র রমযান মাসে বদর যুদ্ধ একটি অবিস্মরণীয় ঘটনা। বদরের যুদ্ধের মূল শিক্ষা মুসলমানদের জীবনে বাস্তবায়ন করতে হবে। অন্যায়ের বিরুদ্ধে সংগ্রামের তামান্না এবং আল্লাহর নৈকট্য লাভে বেশি বেশি ইবাদত-বন্দেগী, সত্য ও ন্যায়ের পথে জীবন উৎসর্গের জন্য তৈরি থাকতে হবে।
ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, বদরের ময়দান আজ আমাদের সামনে প্রস্তুত রয়েছে। যেখানে আবু জেহেল উতবা সায়বাদের গোষ্ঠী আরও বেশি শক্তিশালী হয়ে আধুনিক সব সাঁজে ইসলাম ঈমান মুসলমানদের নির্মূল করার কাজে লিপ্ত। অন্যদিকে আমরা মুসলিমেরা আবু বকরের রা. ও সাহাবায়ে কেরামগণদের নৈতিকতা, আন্দোলন সংগ্রাম, জীবন উৎসর্গ করার মানসিকতার ধারে কাছেও যেতে পারিনি। তিনি বলেন, আমাদের দুর্ভাগ্য রাতের বেলার দরবেশ হয়ে দিনের বেলার সৈনিক হতে পারিনি। বদরের শিক্ষা নিয়ে যেন আমরা প্রকৃত মুজাহিদ হিসেবে তৈরি হতে পারি।